আফগানিস্তানের জয়ের পর মুজিব এবং রশিদ। ছবি: টুইটার।
আফগানিস্তানের হেরাতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর গোটা দেশই বিধ্বস্ত। খাবার, পানীয় জল, ওষুধের হাহাকার রয়েছে গোটা হেরাত প্রদেশ জুড়েই। তার মাঝেই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানো কিছুটা হলেও খুশি ছড়িয়েছে আফগানিস্তানে। সে দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা না কমলেও দিল্লিতে যে আফগানরা থাকেন তাঁরা খুবই খুশি। ইংল্যান্ডকে হারানোর পর দিল্লির সেই ‘মিনি কাবুল’ মেতে উঠেছে জয়ের উৎসবে।
আফগানিস্তানের প্রচুর মানুষ দিল্লিতে থাকেন। বেশিরভাগেরই খাবারের দোকান রয়েছে। রাজধানীর একটি জায়গা ‘মিনি কাবুল’ নামেই পরিচিত। পাশাপাশি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর আফগান ছাত্র পড়াশোনা করেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ প্রায় সকলেই দেখতে গিয়েছিলেন। যে কারণে ভারত না খেললেও বিশ্বকাপের এই প্রথম একটা ম্যাচে দর্শকাসন প্রায় ভর্তিই ছিল। ইংল্যান্ডকে হারানোর পর আফগানদের আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে।
তেমনই একজন সমর্থক হলেন হাসিবুল্লাহ সিদ্দিকি, যিনি আফগানিস্তানের ক্রিকেটার রহমানুল্লাহ গুরবাজ়ের ছোটবেলার বন্ধু। গুরবাজ় তাঁকে তিনটি টিকিট দিয়েছিলেন। ম্যাচের পর সিদ্দিকি বলেছেন, “আমি মেট্রোয় আফগানিস্তানের পতাকা নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছিলাম। গান গাইছিলাম। দিল্লির গোটা আফগান সম্প্রদায়ের কাছে এটা বিরাট আনন্দের মুহূর্ত। যারা বিদেশে রয়েছে তারাও খুব খুশি।”
পঞ্জাবি ছবিতে অভিনয় করেন সিদ্দিকি। তাঁর ধারণা, দেশের মানুষ দুঃখ-কষ্টের মাঝেও এই জয়ে আনন্দে পাবেন। বলেছেন, “গুরবাজ়ের সঙ্গেই আমি বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছি। আমাকে ও কথা দিয়েছিল একটা শতরান করে দেশের মানুষকে উৎসর্গ করবে। আফগানিস্তানের ছবি এবং ভিডিয়ো দেখে ও প্রচণ্ড ব্যথিত। তাই জন্যেই আউট হওয়ার পরে এতটা দুঃখ পেয়েছে। আসলে শতরান করার জন্যে মুখিয়ে ছিল।”
গত দু’দিন ধরে বার্গারের দোকান খোলেননি মহম্মদ আলমাস। স্টেডিয়াম বা হোটেলের বাইরে প্রিয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেখা করার জন্যে অপেক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, “ভারত ম্যাচের টিকিট পাওয়া অসম্ভব ছিল। তাই ইংল্যান্ড ম্যাচকেই ভেবে নিয়েছিলাম। এই মুহূর্ত দেখার জন্যেই অপেক্ষা। এর আগে আফগানিস্তান এই দেশে খেলার সময় গ্রেটার নয়ডা বা লখনউতেও ছুটে গিয়েছি।”
আফগানিস্তানের কন্দহর এলাকা থেকে দিল্লিতে পড়াশোনা করতে এসেছেন আসর। তিনি ন’বছর ধরে ভারতে রয়েছে। আফগানিস্তানের ম্যাচ না দেখতে যাওয়ার জন্যে বকুনি খেয়েছেন বাবার কাছে। তাঁর কথায়, “আমার মা বলছিল যে আফগানিস্তানে লোকে রাস্তায় বেরিয়ে নাচগান করছে। আসলে এই জয়ে বেশি করে আফগান মানুষদেরই।”