মন্তব্য: থাকুক টি-টোয়েন্টি আর টেস্ট। মত আক্রমের। —ফাইল চিত্র
ওয়াসিম আক্রম মনে করেন, ক্রিকেটে একদিনের ম্যাচ ক্রমশ অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ছে। তাঁর প্রস্তাব, আন্তর্জাতিক সূচি থেকে এই ফর্ম্যাট বাদ দেওয়ারই।
সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন মাত্র ৩১ বছর বয়সে। নাসের হুসেন, মাইকেল ভনের মতো প্রাক্তনেরা মনে করেন, সূচির অমানবিক চাপই এই ঘটনার মূলে।
পাকিস্তানের প্রাক্তন অলরাউন্ডারও এক পডকাস্টে বললেন, ‘‘ওর (স্টোকসের) ওয়ান ডে থেকে চিরতরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত অবশ্যই দুঃখজনক। যদিও এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি সহমত পোষণ করি। একজন ধারাভাষ্যকারের কাছেও এই মুহূর্তে ওয়ান ডে ক্রিকেট একটা জোর করে টেনে নিয়ে যাওয়া খেলা। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টির রমরমায়। প্রাক্তন ক্রিকেটার হিসেবে কমেন্ট্রি বক্সে বসে দিব্যি কল্পনা করতে পারি, ৫০ ওভারের দু’টি ইনিংস, সঙ্গে লাঞ্চ ইত্যাদির চাপটা। পাশাপাশি থাকে খেলা শুরুর আগে ও শেষের পরের বিশ্লেষণও।’’
যোগ করেন, ‘‘সেখানে টি-টোয়েন্টি অনেক সহজ। চার ঘণ্টার মধ্যে খেলাই শেষ হয়ে যায়। এই ফর্ম্যাটের লিগ এখন বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় চলছে। যেখানে অর্থও প্রচুর। আমার মনে হয়, এই ফর্ম্যাটটাই আজকের ক্রিকেট বিশ্বের অপরিহার্য অংশ। টি-টোয়েন্টি আর টেস্টই ঠিক আছে। ওয়ান ডে ক্রিকেটের এখন মৃত্যুকালীন অবস্থা।’’
বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা পেসার মনে করেন, তিন ধরনের ক্রিকেটেই টানা খেলে যাওয়া মারাত্মক ক্লান্তিকর। তিনি চান, ছোট ফর্ম্যাটে শুধু টি-টোয়েন্টি থাকুক। আর বড়য় ধ্রুপদী টেস্ট ক্রিকেট।
ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থাগুলির ওয়ান ডে ক্রিকেট-কে এখনই তাদের সূচি থেকে ছেঁটে ফেলা উচিত কি না জানতে চাওয়া হলে আক্রম বলে দেন, ‘‘অবশ্যই। ইংল্যান্ডে একমাত্র এখনও ওয়ান ডে-র সব টিকিট বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকায় গ্যালারি ভরে না। নিয়ামক সংস্থাগুলি যেন করতে হয় তা-ই ওয়ান ডে-র আয়োজনে নামে।’’
আরও বলেন, ‘‘ওয়ান ডে-র ধরনটাই দেখুন। প্রথম ১০ ওভার মোটামুটি খেলো। প্রতি বলে এক রান হলেও চলবে। সঙ্গে বাউন্ডারি মারা যায়। তখন চার জন ফিল্ডার সার্কলে। ৪০ ওভারে ২০০ থেকে ২২০ ঠিকই আছে। তার পরে শেষ ১০ ওভারের খেলা। যেখানে চাই আরও ১০০। পুরো ব্যাপারটাই যেন, বৈশিষ্ট্যহীন যান্ত্রিকতা।’’
সংযোজন, ‘‘সত্যিকারের যুদ্ধের আবহ দেখতে পাই টেস্টে। বরাবর যে ফর্ম্যাট আমার পছন্দ। একটা সময় ওয়ান ডে ক্রিকেট ছিল মজার ব্যাপার। কিন্তু চিরকালই একজন ক্রিকেটারের যথার্থ স্বীকৃতি লাভের মঞ্চ টেস্ট। এখান থেকেই তো বিশ্ব একাদশের ভাবনাও। মানছি, টাকা একটা বড় ব্যাপার। ভাল করেই বুঝতে পারি, ক্রিকেটারেরা কোন অবস্থা থেকে উঠে আসে। টি-টোয়েন্টি খেলুক সবাই। একইসঙ্গে এটাও যেন মাথায় থাকে যে, টেস্টই আসল ক্রিকেট। এই একটা জায়গাতেই বোঝা যায়, কে মহান আর কে নয়।’’
শফিকে মোহিত শোয়েব: ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক এখন পাকিস্তানের জাতীয় নায়ক। মূলত তাঁর অনবদ্য ব্যাটিংয়েই বুধবার গলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে চতুর্থ ইনিংসে ৩৪২ রান তাড়া করে টেস্ট জিতেছে ইমরান খানের দেশ। যা দেখে আপ্লুত প্রাক্তন পাক পেসার শোয়েব আখতার গণমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘গলে অবিস্মরণীয় জয়! সাহস, একাগ্রতা ও হার না মানা মানসিকতার কী মিশ্রণে অসাধারণ একটা ইনিংসই না খেলে গেল।’’ ক্রিকেট বিশ্লেষকেরা মনে করেছিলেন, সেখানকার ঘূর্ণি উইকেটে এত রান তুলে ম্যাচ বার করা কার্যত অসম্ভব ছিল।