মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (বাঁ দিকে) ও গৌতম গম্ভীর। —ফাইল চিত্র
আরও এক বার মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে খোঁচা দিলেন গৌতম গম্ভীর। ২০১১ সালে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের সেরা মুহূর্ত ফাইনালে ধোনির ছক্কা মেরে জেতানো। সুনীল গাওস্করের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটার জানিয়েছেন, তিনি মৃত্যুর আগে ধোনির সেই ছক্কা দেখে যেতে চান। কিন্তু গম্ভীরের মত ভিন্ন। তাঁর মতে, ক্রিকেট দলগত খেলা। সেখানে এক জনের কৃতিত্বে বিশ্বকাপ জেতা যায় না। ভারতের বিশ্বকাপ জেতার নেপথ্যে যুবরাজ সিংহ, হরভজন সিংহ, জাহির খানদেরও সমান ভূমিকা ছিল। কিন্তু সে সব নিয়ে আলোচনা হয় না। সব আলোচনা ধোনির ছক্কা নিয়ে।
একটি সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপ জয় নিয়ে মুখ খোলেন গম্ভীর। ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৯৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। শতরান হাতছাড়া হলেও ভারতের জয়ের ভিত তৈরি করেছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। শতরান হাতছাড়া হওয়ার জন্য আক্ষেপ নেই তাঁর। বরং তৃপ্তি বিশ্বকাপ জিততে পেরে। গম্ভীর বলেন, ‘‘আমি শতরান করলাম কি না সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আসল হল দেশের বিশ্বকাপ জেতা। আমরা ব্যক্তিগত খেলা খেলি না। তাই এখানে ব্যক্তিগত নজিরের থেকে দলগত সাফল্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’
শতরান করার পরে দল হারার থেকে তিনি শূন্য রানে আউট হওয়ার পরেও যদি ভারত জেতে তা হলে তিনি বেশি খুশি হতেন বলে জানিয়েছেন গম্ভীর। ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটারের মতে, ‘‘আমি শূন্য রানে আউট হওয়ার পরেও ভারত জিতলে আমার বেশি আনন্দ হত। আমার শতরানের পরেও দল হারলে তাতে লাভ কী? আমরা ব্যক্তিগত নজির নিয়ে এত ভাবি যে দেশের কথা মাঝেমাঝে ভুলে যাই। দলগত খেলায় দেশের সাফল্যই আসল।’’
এর পরেই যুবরাজদের প্রসঙ্গ টেনে আনেন গম্ভীর। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন যুবরাজ। ব্যাটে-বলে ছন্দে ছিলেন তিনি। অথচ সেই সময়ই ক্যানসার বাসা বাঁধতে শুরু করেছে তাঁর শরীরে। গম্ভীর বলেন, ‘‘আমরা কি যুবরাজকে ওর প্রাপ্য কৃতিত্ব দিয়েছি? ওই শরীর নিয়ে গোটা প্রতিযোগিতায় ও ভাল খেলেছিল। ফাইনালে জাহির পর পর চারটে মেডেন ওভার দিয়েছিল। আমরা কি ওকে কৃতিত্ব দিই? পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হরভজন বা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সুরেশ রায়না যে খেলাটা খেলেছে তার কৃতিত্ব কি ওরা পেয়েছে? আমরা শুধু এক জনকে নিয়েই ব্যস্ত।’’
এক জন বলতে যে তিনি ধোনিকে বুঝিয়েছেন তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন গম্ভীর। বলেন, ‘‘ধোনির ইনিংস নিয়ে আমরা কথা বলি। প্রশংসা করি। কিন্তু ও কি একাই বিশ্বকাপ জেতাতে পারত? কোনও এক ক্রিকেটার দলকে জেতাতে পারে না। তাতে সবার ভূমিকা থাকে। কিন্তু সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সমাজমাধ্যম, এক জনকেই হিরো বানিয়ে দিল। সমর্থকেরাও শুধু ‘ধোনি ধোনি’ করে গেল। বাকিদের কেউ দেখল না। ধোনির পাশাপাশি বাকিদের কৃতিত্ব নিয়েও সমান আলোচনা হওয়া উচিত।’’
ধোনিকে এই প্রথম খোঁচা দিলেন না গম্ভীর। এর আগেও বিশ্বকাপ জেতায় ধোনির একার কেন প্রশংসা হয়, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন ভারতের বাঁহাতি ব্যাটার। আরও এক বার মুখ খুললেন তিনি। তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত ধোনি কোনও মন্তব্য করেননি।