এশিয়া কাপে শাহিন শাহ আফ্রিদি নেই। যে পাক পেসার গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একাই শেষ করে দিয়েছিলেন ভারতকে, সেই পেসারই খেলতে পারবেন না এ বারের এশিয়া কাপে। পাকিস্তানের জন্য এটা নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা। পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য এমন পেসার খুঁজে বার করা যিনি আফ্রিদির অভাব ঢাকতে পারবেন।
আফ্রিদির বদলি হিসাবে এশিয়া কাপের দলে আনা হতে পারে হাসান আলিকে। অভিজ্ঞ পাক পেসারকে বাদ দিয়ে এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হাসানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারেন নির্বাচকরা।
পাকিস্তানের হয়ে ৪৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন হাসান। নিয়েছেন ৬০টি উইকেট। টেস্ট এবং এক দিনের ম্যাচও খেলেছেন তিনি। ২৮ বছরের এই পেসার গত ছ’বছর ধরে আন্তর্জাতিক স্তরে ক্রিকেট খেলছেন। আফ্রিদির বদলে তাঁকে নেওয়া হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
আফ্রিদির বদলে কোনও বাঁহাতি পেসারকে দলে নিতে হলে নির্বাচকদের পছন্দের তালিকায় থাকতে পারেন মির হামজা। বাবর আজমের দলের বিরুদ্ধে একটি অনুশীলন ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। নির্বাচকদের নজরে যে এই পেসার রয়েছেন তা বলাই যায়। বাঁহাতি পেসারের বদলে এক জন বাঁহাতি পেসার হিসাবে হামজা জায়গা করে নিতেই পারেন।
২৯ বছরের এই পেসার পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন মাত্র একটি টেস্ট। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক স্তরে না খেললেও ৪১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে হামজার। নিয়েছেন ৪১টি উইকেট।
দলে জায়গা করে নিতে পারেন জামান খান। ২০ বছরের তরুণ পেসার পাকিস্তান সুপার লিগে খেলেন লাহৌর কলন্দর্সের হয়ে। তাঁকে তুলনা করা হয় লসিথ মালিঙ্গার সঙ্গেও। তরুণ ডান হাতি পেসার পিএসএলে আফ্রিদির দলে খেলেও নজর কেড়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে এখনও অভিষেক হয়নি জামানের। এশিয়া কাপের মতো প্রতিযোগিতায় এমন অনভিজ্ঞ পেসারকে কি নিতে পারে পাকিস্তান? অচেনা পেসার এখনও পর্যন্ত ১৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। নিয়েছেন ২৪টি উইকেট।
আরও একটি সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এ বারের এশিয়া কাপ হবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। দুবাই, শারজাহর পিচ স্পিন সহায়ক। সেখানে বাঁহাতি পেসার আফ্রিদির বদলে আরও এক স্পিনারকে দলে নিতে পারে পাকিস্তান।
স্পিনার হিসাবে দলে জায়গা করে নিতে পারেন লেগ স্পিনার জাহিদ মেহমুদ। পাকিস্তানের হয়ে যিনি নেদারল্যান্ডসে গিয়েছেন। ৩৪ বছরের স্পিনার গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন। সেই ম্যাচে তিনটি উইকেট নেন জাহিদ।
তিনটি এক দিনের ম্যাচও খেলেছিলেন জাহিদ। এই বছর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই তিন ম্যাচে চারটি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। নির্বাচকদের নজর থাকতে পারে জাহিদের দিকেও।
বাঁহাতি স্পিনার দানিশ আজিজও নির্বাচকদের নজরে রয়েছেন। সুযোগ দিয়ে দেখা যেতে পারে তাঁকেও। ২৬ বছরের সেই স্পিনারের আন্তর্জাতিক মঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে।
গত বছর পাকিস্তানের হয়ে চারটি ম্যাচ খেলেছিলেন আজিজ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দু’টি এক দিনের ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও উইকেট নিতে পারেননি। দু’টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। সেই দুই ম্যাচে দু’টি উইকেট নিয়েছিলেন আজিজ। এশিয়া কাপের দলে নেওয়া হবে তাঁকে?
এশিয়া কাপের জন্য পাকিস্তানের যে ১৫ জনের দল ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই দলে আফ্রিদিকে বাদ দিয়ে রয়েছেন চার পেসার। হ্যারিস রউফ, নাসিম শাহ, মহম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র এবং শাহনাওয়াজ দাহানি। এই চার পেসারের উপরই ভরসা রাখতে পারে পাকিস্তান। নতুন করে কারও নাম ঘোষণা করা হবে কি না তা এখনও নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না।
হাঁটুর চোটের জন্য আফ্রিদি এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁকে পাওয়া যাবে বলেই আশা করছে পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কায় খেলতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন আফ্রিদি।
২৭ অগস্ট থেকে শুরু এশিয়া কাপ। পাকিস্তানের প্রথম ম্যাচ ২৮ অগস্ট। ভারতের বিরুদ্ধে খেলবে তারা। এ বারের এশিয়া কাপে একাধিক বার ভারতের মুখোমুখি হতে পারে পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসাবে এ বারের এশিয়া কাপ খেলা হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে।