জো রুট। ছবি: পিটিআই।
দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডকে বিপদে ফেলল বাজ়বল (ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামের ডাকনাম বাজ়। তাঁর সময়ে ইংল্যান্ড যে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলছে সেটার এই নাম দেওয়া হয়েছে।)। একের পর এক উইকেট হারাচ্ছে তারা। ইতিমধ্যেই চার উইকেট হারিয়েছে ইংল্যান্ড। আউট জো রুটও। আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়েই উইকেট হারাল ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয় সেশনে ওভার প্রতি পাঁচ রান করে তুলেছিল ইংল্যান্ড। প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হেরে যাওয়ার পর অনেকেই ইংল্যান্ডের বাজ়বল পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু ইংল্যান্ড নিজেদের ধরনেই খেলছিল। অস্ট্রেলিয়ার ৪১৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩০ ওভারে ১৪৫ রান তুলে ফেলেছিল ইংল্যান্ড।
প্রথম সেশনে অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করে চার ওভারে ১৩ রান করেছিল ইংল্যান্ড। মধ্যাহ্নভোজের পর ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড এক সেশনে ১৩২ রান তুলল। একটি উইকেটও হারিয়েছে তারা। কিন্তু রানের গতি কমেনি। ৪৮ রান করে আউট হন জ্যাক ক্রলি। অন্য ওপেনার বেন ডাকেট ৬২ রানে অপরাজিত। তাঁর সঙ্গে ক্রিজে রয়েছেন অলি পোপ। তিনি ৪০ বলে ৩২ রান করেছেন। ৩০ ওভারে ১৪৫ রান তুলেছে ইংল্যান্ড। একটি মাত্র উইকেট নিয়েছেন নেথন লায়ন। মিচেল স্টার্ক সাত ওভারে ৫৫ রান দিয়েছেন।
দ্বিতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে শতরান করেন স্মিথ। তিনি টেস্টে ৩২তম শতরান করলেন। ছুঁয়ে ফেললেন স্টিভ ওয়কে। স্মিথ তাঁর ১১০ রানের ইনিংসে ১৫টি চার মারেন। জেমস অ্যান্ডারসনের বলে কভার ড্রাইভ মেরে শতরান করেন স্মিথ। ৯৯তম টেস্টে শতরান করলেন অসি ব্যাটার। এই মুহূর্তে যে ক্রিকেটারেরা খেলছেন, তাঁদের মধ্যে স্মিথের পিছনে রয়েছেন রুট। তিনি ৩০টি শতরান করেছেন। কেন উইলিয়ামসন এবং বিরাট কোহলির রয়েছে ২৮টি টেস্ট শতরান। ডেভিড ওয়ার্নারের রয়েছে ২৫টি শতরান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে স্মিথ ছাড়াও রান পেয়েছেন ট্রেভিস হেড (৭৭), ডেভিড ওয়ার্নার (৬৬) এবং মার্নাস লাবুশানে (৪৭)।
ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিলেন অলি রবিনসন এবং জস টাং। দু’টি উইকেট নেন জো রুট। একটি করে উইকেট নেন জেমস অ্যান্ডারসন এবং স্টুয়ার্ট ব্রড। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে নজর কাড়লেন টাং।
অ্যাশেজ সিরিজ়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। যা কিছুটা ব্যাঙ্গাত্মক। খানিকটা শোকেরও। ১৮৮২ সালে ওভালে আয়োজিত টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম হেরেছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ফ্রেড স্পফোর্থের অনবদ্য বোলিংয়ের কাছে হারতে হয়েছিল ইংরেজদের। চতুর্থ ইনিংসে ৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি তারা। স্পফোর্থ ৪৪ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। ০-১ ব্যবধানে সিরিজ় হেরে গিয়েছিল। পরের দিন ইংল্যান্ডের সংবাদ পত্র ‘দ্য স্পোর্টিং টাইমস্’ তাদের প্রতিবেদনে ক্রিকেট দলের তীব্র সমালোচনা করেছিল। লেখা হয়েছিল, ইংরেজ ক্রিকেটকে চিরস্মরণীয় করে রাখল ওভালের ২৯ আগস্ট, ১৮৮২ তারিখটি। গভীর দুঃখের সাথে বন্ধুরা তা মেনে নিয়েছে। ইংরেজ ক্রিকেটকে ভস্মীভূত করা হয়েছে এবং ছাইগুলো অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া হয়েছে। এর পরের বছর সিরিজ় পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় যায় ইংল্যান্ড। সংবাদমাধ্যমের ব্যঙ্গ মনে রেখে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক আইভো ব্লাই বলেছিলেন, তাঁরা অ্যাশেজ পুণরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন।
সে সময় কয়েকজন অস্ট্রেলীয় মহিলা ব্লাইকে আগের সিরিজ়ে পরাজয় নিয়ে পাল্টা ব্যঙ্গ করে ছাই ভর্তি একটি পাত্র দিয়েছিলেন। যাতে ছিল উইকেটের উপরে থাকা বেলের ছাই। তার পর থেকে দু’দেশের টেস্ট সিরিজ় ‘অ্যাশেজ’ বলে পরিচিত হয়। ব্লাই অবশ্য ছাইয়ের সেই আধারটি ব্যক্তিগত উপহার হিসাবে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। বিজয়ী দলকে ট্রফি হিসাবে তা দেওয়া হত না তখন। ব্লাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী লর্ডসে এমসিসি জাদুঘরে সেই পাত্রটি দান করে দিয়েছিলেন।