রবিচন্দ্রন অশ্বিন। —ফাইল চিত্র
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে নেয়নি ভারত। প্রথম একাদশে স্পিনার হিসাবে নেওয়া হয়েছে একমাত্র রবীন্দ্র জাডেজাকে। টেস্টে বিশ্বের সেরা বোলারকে না নিয়ে কি ভুল করলেন রোহিত শর্মারা? ফাইনালের প্রথম দিনের দুই সেশনের খেলা দেখে মনে হচ্ছে, যতই সবুজ পিচ হোক না কেন, অশ্বিনকে নিলে হয়তো ভাল করত ভারত। কারণ, অশ্বিনের বদলে যাকে দলে নেওয়া হয়েছে, সেই উমেশ যাদব প্রথম স্পেলে একেবারেই দাগ কাটতে পারেননি। উল্টে ডেভিড ওয়ার্নার, মার্নাশ লাবুশেনদের হাত খুলে খেলার সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি।
টসের পরে অশ্বিনকে দলে না নেওয়া নিয়ে রোহিত বলেন, ‘‘অশ্বিনকে দলের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত খুব কঠিন। এত বছর ধরে ও আমাদের অনেক ম্যাচে জিতিয়েছে। কিন্তু পিচ ও আকাশের পরিস্থিতি দেখে আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’’ অশ্বিনের বদলে এক জন অতিরিক্ত পেসারকে দলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু রোহিতদের এই সিদ্ধান্ত কি আদতে কাজে লেগেছে!
ভারতের হয়ে নতুন বল শুরু করেন মহম্মদ শামি ও মহম্মদ সিরাজ। তাঁরা খারাপ বল করেননি। খেলতে সমস্যা হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের। রান হচ্ছিল না। প্রথম ১২ ওভারে মাত্র ২৩ রান হয়। বোলিং আক্রমণে প্রথম পরিবর্তন হিসাবে আনা হয় উমেশকে। তার পরেই বদলে যায় খেলার ছবিটা। এ বারের আইপিএলে ভাল ছন্দে ছিলেন না উমেশ। ওভালেও সেটা দেখা গেল। বলের লাইন, লেংথ ঠিক করতে পারলেন না তিনি। হয় খুব ফুল লেংথে বল করলেন, নইলে শর্ট লেংথে বল পড়ল। ফলে হাত খুলে শট খেলা শুরু করলেন ওয়ার্নার ও লাবুশেন। উমেশের এক ওভারে চারটি চার মারলেন ওয়ার্নার। শামি ও সিরাজ যে চাপ দিয়েছিলেন, তা আলগা হয়ে গেল।
অশ্বিনের পারফরম্যান্স ইংল্যান্ডে খুব খারাপ নয়, আবার ভালও নয়। ইংল্যান্ডে অশ্বিন দলে থাকা অবস্থায় ৭টি ম্যাচ খেলেছে ভারত। জিতেছে ১টি। হেরেছে ৬টি ম্যাচ। অশ্বিনকে ছাড়া ইংল্যান্ডে ১৬টি ম্যাচ খেলেছে ভারত। জিতেছে ৪টি। হেরেছে ১০টি। ২টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান খাটে না। বিশেষ করে সেটা যদি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হয়। কারণ, সেখানে অভিজ্ঞতার একটা দাম থাকে। সে দিক থেকে উমেশের থেকে এগিয়ে অশ্বিন। উমেশের থেকে ব্যাটটাও অনেক ভাল করেন অশ্বিন।
রোহিতের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার দুই প্রাক্তন অধিনায়ক। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমি যদি রোহিতের জায়গায় থাকতাম তা হলে অশ্বিনকে বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া এত সহজ হত না। ওর মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার দলে থাকলে অনেক সুবিধা হয়।’’ রিকি পন্টিং আবার বলেছেন, ‘‘শুধু প্রথম ইনিংসের কথা ভেবে কেউ দল নির্বাচন করে না। অস্ট্রেলিয়ার দলে এত জন বাঁ হাতি ব্যাটার। উইকেটে ঘাস থাকলেও অশ্বিন ওদের সমস্যায় ফেলতে পারত।’’
প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনে বল করতে এসে ভারতের একমাত্র স্পিনার জাডেজা যে ভাবে অসি ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলছেন তাতে হয়তো রোহিতের মনে হতে পারে, দল নির্বাচনে আরও এক বার ভুল করে বসেছেন তাঁরা। গত বার দল নির্বাচনের ভুলে হারতে হয়েছিল বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। এ বারও কি সেটাই হবে? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।