ব্রাকনার মনে করেন, ওয়ার্নের মৃত্যু সবার কাছেই শিক্ষা হয়ে থাকা উচিত। প্রত্যেকেই সে ক্ষেত্রে বুঝতে পারবেন নিয়মিত নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা কত জরুরি। ‘‘কেউই এক মিনিটের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয় না। মর্মান্তিক পরিণতির দিকে মানুষ পৌঁছয় কার্যত ধীরে ধীরে,’’ মন্তব্য ব্রাকনারের।
ফাইল চিত্র।
কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্নের প্রয়াণ কোনও আকস্মিক ঘটনা নয় বলেই মনে করেন না ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসক পিটার ব্রাকনার। একসময় যিনি দীর্ঘ দিন অস্ট্রেলীয় জাতীয় দলের সঙ্গে
কাজ করেছেন।
ওয়ার্নের পরিবার জানিয়েছে, মৃত্যুর আগের সাত দিন তাঁর হৃদযন্ত্রের সমস্যা ও হাঁপানির কষ্ট ছিল। সেই সঙ্গে টানা ১৪দিন শুধু তরল খাদ্য তিনি গ্রহণ করেছিলেন ওজন কমাতে। সে সবের প্রেক্ষিতেই ব্রাকনারের দাবি, পুরো ব্যাপারটাই প্রত্যাশিত ছিল। ওয়ার্নের মৃত্যু আদৌ আকস্মিক দুর্ঘটনা নয়।
ব্রাকনারের কথায়, ‘‘ওয়ার্নির যদি হৃদরোগ থেকে থাকে, তা হলে তাইল্যান্ডে রাতারাতি সেটা হয়নি। গত ২০ থেকে ৩০ বছর ধরে ও নিয়মিত ধূমপান করেছে। খাদ্যাভাসেও সমস্যা ছিল। সঙ্গে আরও অনেক অনিয়ম করত। তাই আবার বলছি, ওয়ার্নির ক্ষেত্রে আকস্মিক কিছু হয়েছে বলে আমি অন্তত মনে করি না।’’
প্রিয় প্রাক্তন সতীর্থের মৃত্যুর পরে ইয়ান হিলিও জানিয়েছিলেন, তাঁর ভয় ছিল বেপরোয়া জীবনযাপনের জন্য অল্পবয়সেই চিরবিদায় নিতে পারেন ওয়ার্ন। যে কারণে প্রথম দুঃসংবাদটা পেয়ে তিনিও তেমন অবাকও হননি! প্রসঙ্গত বহু বছর জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলার সৌজন্যে হিলিও খুব কাছ থেকে দেখেছেন ওয়ার্নকে। হিলির যে মন্তব্য নিেয়
সমালোচনাও হয়েছিল।
সম্প্রতি কিংবদন্তি স্পিনার উপবাস করে নিজের ওজন ১৪ কেজি কমিয়ে ফেলেন। তার পরেও মৃত্যুর মাত্র চার দিন আগে গণমাধ্যমে ওয়ার্ন লেখেন, ওজন আরও কমানোর অভিযান শুরু করতে যাচ্ছেন। এমনিতে হিলির ভয় ছিল অল্পবয়সেই তাঁর বন্ধুর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার! ওয়ার্ন মাত্রাতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান করতেন। সেইসঙ্গে নিজের ত্বকেরও যথেষ্ট যত্ন নিতেন না।
হিলি বলেছেন, ‘‘ওর অসময়ে চলে যাওয়াটা আমায় অন্তত বিস্মিত করেনি! আসলে কখনওই ওয়ার্নি নিজের শরীরের যত্ন নিত না। তাই ওর শারীরিক অবস্থার ভাল-খারাপ চলতেই থাকত।’’ যোগ করেন, ‘আমি জানি ত্বকে ঠিকঠাক ক্রিমও লাগাত না। ভেবেছিলাম, ত্বক নিয়ে না পরে বড় সমস্যায় পড়ে। তবে মাত্র ৫২ বছরেই বন্ধু চলে
যাবে, ভাবিনি।’’
ব্রাকনার মনে করেন, ওয়ার্নের মৃত্যু সবার কাছেই শিক্ষা হয়ে থাকা উচিত। প্রত্যেকেই সে ক্ষেত্রে বুঝতে পারবেন নিয়মিত নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা কত জরুরি। ‘‘কেউই এক মিনিটের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয় না। মর্মান্তিক পরিণতির দিকে মানুষ পৌঁছয় কার্যত ধীরে ধীরে,’’ মন্তব্য ব্রাকনারের।