স্বপ্নের কথা জানান ধারাভাষ্যকার কার্তিক। ছবি: টুইটার।
আইপিএল খেলার সময়ই অস্ট্রেলিয়ার বিমানের টিকিট কাটা হয়ে গিয়েছিল তাঁর। বাকি ছিল শুধু আসন সংরক্ষণ। গত কয়েক মাসে ভারতীয় দলের হয়ে সাফল্য তাও করে দিয়েছে। সোমবার যাত্রী তালিকা (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভারতীয় দল) প্রকাশ হওয়ার পরেই নেটমাধ্যমে ছোট্ট বার্তা দিয়েছেন দীনেশ কার্তিক।
গত বছর ভারতীয় ক্রিকেট দল যখন ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ খেলতে গিয়েছিল, তখন বিরাট কোহলীদের সংসার থেকে অনেক দূরে কার্তিক। সিরিজে ধারাভাষ্য দিতে যাওয়া কার্তিককে দেখে অনেকেই ভাবতেন, যে কোনও দিন অবসর জীবনে পা রাখবেন। কার্তিক ভাবতেন অন্য রকম। ধারাভাষ্য দিলেও নিজেকে তৈরি করছিলেন। ওই সিরিজের সময়ই বলেছিলেন, তাঁর স্বপ্ন ভারতের হয়ে অন্তত আরও একটি বিশ্বকাপ খেলা। ভারতীয় দলের গন্ধ গায়ে মাখতেই ধারাভাষ্যকারের কাজ নিয়েছিলেন বোধহয়। যে গন্ধ আরও উসকে দেবে তাঁর স্বপ্নকে। আত্মবিশ্বাসী কার্তিকের সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা হওয়ার পর কার্তিক নেটমাধ্যমে শুধু লিখেছেন, ‘স্বপ্ন সত্যি হল।’
কার্তিক যখন স্বপ্নের কথা বলেছিলেন, সে সময় অনেকেই পরিহাস করেছিলেন। বিশ্বাস করতে পারেননি। কার্তিক তাঁর পরিশ্রমের কথা বলেননি। নিজেকে বদলে ফেলার কথা বলেননি। না। বলেছেন। আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে তাঁর ব্যাট কথা বলেছে। যা দেখেও হয়তো বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছে অনেকের। কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন অধিনায়কের আগ্রাসন দেখে সে সময় সতীর্থ কোহলীও বলেন, ‘‘ভারতীয় দলে তোমার ফেরা কেউ আটকাতে পারবে না।’’
ভুল বলেননি ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। প্রায় তিন বছর পর ভারতীয় দলে ফিরেছেন কার্তিক। আইপিএলের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকেই ৩৭ বছরের উইকেট রক্ষক-ব্যাটার ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতাও রয়েছে কার্তিকের। ২০০৭ সালে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নেতৃত্বাধীন বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। অথচ ২০১০ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দেশের হয়ে একটিও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তাঁর।
আইপিএলের সময় কার্তিক বলেছিলেন, ‘‘আমি আবার দেশের হয়ে খেলতে চাই। জানি সামনেই বিশ্বকাপ রয়েছে। সেই বিশ্বকাপের অংশ হতে চাই। ভারতকে বিশ্বকাপ জয়ে সাহায্য করতে চাই।’’
সেই সুযোগই কার্তিকের সামনে হাজির। যে লক্ষ্য সামনে রেখে নিজের ক্রিকেট, জীবন আমূল বদলে ফেলেছেন, এ বার তা পূরণ করার পালা। স্বপ্ন বাস্তব হয়েছে। লক্ষ্য পূরণ হলেই বিজয় কেতন ওড়াতে পারবেন ফিনিশার কার্তিক।