ক্ষোভ: বিরাট বিতর্কে বোর্ডের ভূমিকায় বিরক্ত বেঙ্গসরকর।
বিরাট কোহলি-সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বৈরথ যেন থেমেও থামছে না। নিয়মিত ভাবে সেই বিষয় নিয়ে মুখ খুলছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন কোনও রকম স্পষ্ট ব্যাখ্যা ছাড়াই একদিনের দলের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল বিরাট কোহলিকে? এ বার সেই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক ও প্রাক্তন নির্বাচক প্রধান দিলীপ বেঙ্গসরকর।
প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটার জানিয়েছেন, বিরাটকে সরানো নিয়ে নির্বাচক প্রধান চেতন শর্মার জবাব দেওয়া উচিত ছিল। তার পরিবর্তে কেন সৌরভ মুখ খুললেন? ভারতীয় ক্রিকেটে কর্নেল নামে পরিচিত বেঙ্গসরকর মনে করেন, বোর্ড প্রেসিডেন্ট এ ব্যাপারে মুখ খুলতেই বিষয়টি আরও জটিল হয়ে গিয়েছে। তাঁর মনে হয়েছে, চেতন শর্মাকেই এ বিষয়ে ব্যাখ্যা করতে দেওয়া উচিত ছিল সৌরভের।
বিরাটকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর পরে ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, টি-টোয়েন্টির নেতৃ্ত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে নিষেধ করা হয়েছিল কোহলিকে। এমনকি কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে লেখা হয়েছিল, নেতৃত্ব থেকে বিরাটকে সরানোর দু’দিন আগেই নাকি তাঁকে অনুরোধ করা হয়েছিল দায়িত্ব ছেড়ে দিতে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়ার আগে বিরাট জানিয়ে দেন, কোনও ভাবেই তাঁকে টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বের পদে থেকে যেতে অনুরোধ করেননি বোর্ড কর্তারা। এমনকি হাসি মুখেই তাঁর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। এ ছাড়াও টেস্ট অধিনায়ক বিরাট জানান, দল ঘোষণার দেড় ঘণ্টা আগে তাঁকে জানানো হয়েছিল ওয়ান ডে দলের নেতা হিসেবে রাখা হচ্ছে না। সাদা বলের ক্রিকেটে তাঁকে সরিয়ে রোহিত শর্মাকে অধিনায়ক করার কথাও তিনি জানতে পারেন তখনই।
ভারতীয় ক্রিকেটে এ ধরনের ঘটনা একেবারেই মানতে পারছেন না বেঙ্গসরকর। এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা যেন ভারতীয় ক্রিকেটে আর না ঘটে, সেটাই চান তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেঙ্গসরকর বলেছেন, ‘‘খুবই অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে ভারতীয় ক্রিকেটে। পেশাদারিত্বের সঙ্গেই এই বিষয়টি সামলানো উচিত ছিল।’’ তার পরেই সৌরভের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বেঙ্গসরকর। তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতীয় নির্বাচক কমিটির হয়ে সৌরভ কেন জবাব দিতে গেল? ওর কথা বলার কোনও প্রয়োজনই ছিল না। অধিনায়ক অথবা দল নিয়ে কোনও সমস্যা হলে সব সময় নির্বাচক কমিটির প্রধান জবাব দেবে। বোর্ড প্রেসিডেন্ট একেবারেই নয়।’’
বেঙ্গসরকর মনে করেন, কোহলির সঙ্গে যা ঘটেছে, তার পরে তাঁর খারাপ লাগাই স্বাভাবিক। দলের যে কোনও ক্রিকেটারের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তাঁদেরও একই রকম কষ্ট হত। তিনি বলেছেন, ‘‘সৌরভ ঘটনাটি এমন ভাবে বলেছিল, যাতে বিরাটের খারাপ লাগারই কথা। ও নিজের জায়গা ঠিক রাখার জন্যেই সাংবাদিকদের সামনে পুরো বিষয়টা তুলে ধরতে
বাধ্য হয়েছে।’’
বেঙ্গসরকরের বলতে কোনও দ্বিধা নেই, সৌরভ তাঁর অধিকারের সীমার বাইরে গিয়েই কথা বলেছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি ছিল অধিনায়ক ও নির্বাচক প্রধানের। সৌরভ এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কথা বলেছে। অধিনায়ক নির্বাচনের কাজ এক জন নির্বাচকের। যা সৌরভের অধিকারের আওতার মধ্যে কখনওই পড়ে না।’’
প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক চান, বিরাটকে যেন প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয়। বললেন, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি কোহলির অবদান তো আর ছোট করা যায় না। তাকে যোগ্য সম্মান দেওয়া উচিত। আমি আশা করব, বোর্ডের সঙ্গে ওর সম্পর্ক যেন আগের মতোই ভাল হয়ে যায়।’’