Wriddhiman Saha

Wriddhiman Saha: ঋদ্ধিমান সাহাকে দল  থেকে বাদ দেওয়ার  যুক্তি কী? প্রশ্ন কিরমানি,  বেঙ্গসরকরদের

ঋদ্ধির পাশে দাঁড়াচ্ছেন সৈয়দ সাবা করিমও। একই সঙ্গে জানিয়ে দিচ্ছেন, দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসেবে ঋদ্ধির চেয়ে ভরতকে রাখলে ভারতীয় ক্রিকেটের উন্নতি হতে পারে। ঋদ্ধির আর কিছু শেখার নেই। কিন্তু ভরত তরুণ।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত 

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:৩৮
Share:

সমর্থন: সারা দেশ থেকে সমর্থন পাচ্ছেন ঋদ্ধিমান। ফাইল চিত্র

ঋদ্ধিমান সাহাকে বাদ দেওয়ার যুক্তি কী? স্পষ্ট উত্তর ছিল না নির্বাচক প্রধান চেতন শর্মার কাছে। তিনি জানিয়েছেন, বয়স ও ফিটনেস কোনও বিষয় নয়। নতুনদের দেখে নিতে চান। এই ‘নতুনদের দেখে নিতে চাই’ বক্তব্যের মধ্যে বয়সও যে একটা বড় বিষয়, সেটাই তাঁর বক্তব্যে প্রকারান্তরে উঠে এসেছে বলেই মনে করছেন প্রাক্তন অধিনায়ক ও প্রাক্তন নির্বাচক দিলীপ বেঙ্গসরকর, সৈয়দ কিরমানি, মদন লাল ও সৈয়দ সাবা করিম। তাঁরাও ঋদ্ধিকে বাদ দেওয়ার পরিষ্কার ব্যাখ্যা চাইছেন।

Advertisement

ভারতীয় ক্রিকেটের ‘কর্নেল’ বেঙ্গসরকর আনন্দবাজারকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘বয়সের ভিত্তিতে কোনও ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়ার পক্ষে আমি কখনওই নই। বয়স কোনও মাপকাঠি হতে পারে না। ওকে বাদ দেওয়ার পিছনে আসল কারণই তো বলতে পারছে না বর্তমান নির্বাচক-প্রধান। কে এস ভরত অবশ্যই ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। তাই বলে ছন্দে থাকা কোনও ক্রিকেটারকে কি বাদ দেওয়া যায়?’’ যোগ করেন, ‘‘যদি ঋদ্ধিকে বলে দেওয়া হয় ভবিষ্যতে তোমাকে নিয়ে আর ভাবা হবে না, সে ক্ষেত্রে বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জবাব দেওয়া উচিত। তার অধীনে কী করে এমন একটি ঘটনা ঘটতে পারে? ভাল পারফর্ম করলে দলে নিতেই হবে। আগে থেকে কোনও ক্রিকেটারকে বলে দেওয়া যায় না যে, তোমাকে ভবিষ্যতের জন্য
ভাবা হচ্ছে না।’’

বেঙ্গসরকর একেবারেই প্রসন্ন নন ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তে। তাঁর সুরেই সুর মিলিয়েছেন সৈয়দ কিরমানি। বলছিলেন, ‘‘এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। ভারতীয় ক্রিকেটে এ রকম হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। ১৯৮৬ সালে আমাকেও দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। আমার জায়গায় কাকে নেওয়া হয়েছিল, সবাই জানে।’’ কিরমানি আরও বলেন, ‘‘একজন ক্রিকেটার অভিজ্ঞ হয়ে ওঠে ৩০ বছর বয়সে। ৩০ থেকে ৩৮ বছর বয়সই সেরা ক্রিকেট খেলার আদর্শ সময়। এই বয়সে কোনও ক্রিকেটার এলে অনেকটা শান্ত হয়ে যায়। নিজের সেরা ক্রিকেট উপহার দিতে থাকে। তা হলে কোন যুক্তিতে বাদ পড়ল ঋদ্ধিমান? আমি কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না।’’

Advertisement

ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে ঋদ্ধিকে যে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা ভাবতে বলা হয়েছে, তা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছেন কিরমানি। বলে দিলেন, ‘‘টিম ম্যানেজমেন্ট কখনওই একজন ক্রিকেটারকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে বলতে পারে না। দল যদি মনে করে ওকে খেলাবে না, তা হলে বসিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু অবসরের বিষয়ে ভাবতে বলা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’’

প্রাক্তন নির্বাচক মদন লাল মনে করছেন, আরও পরিশ্রম করা উচিত ঋদ্ধির। এখনই হার-না-মেনে ওকে আরও খাটতে হবে। মদনের কথায়, ‘‘বয়স ছাড়া কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না ঋদ্ধির বাদ পড়ার নেপথ্যে। আমি মনে করি, ভাল পারফর্ম করে নির্বাচকদের বুঝিয়ে দিক ও কত বড় ক্রিকেটার। বড় রান করার পরেও যদি ওকে নেওয়া না হয়, সে ক্ষেত্রে খুবই খারাপ উদাহরণ যাবে আগামী প্রজন্মের কাছে।’’

ঋদ্ধির পাশে দাঁড়াচ্ছেন সৈয়দ সাবা করিমও। একই সঙ্গে জানিয়ে দিচ্ছেন, দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসেবে ঋদ্ধির চেয়ে ভরতকে রাখলে ভারতীয় ক্রিকেটের উন্নতি হতে পারে। ঋদ্ধির আর কিছু শেখার নেই। কিন্তু ভরত তরুণ। ওঁর অনেক কিছু পাওয়ার আছে। সাবা করিমের কথায়, ‘‘নির্বাচক-প্রধান বলে দিয়েছেন, বয়স কোনও ফ্যাক্টর নয়। তা হলে ওর চেয়ে তরুণ একজনকে কেন তৈরি করার কথা বলা হচ্ছে? এখানেই অর্থটা পরিষ্কার যে, বয়সের উপরে ভিত্তি করেই বাদ দেওয়া হল ঋদ্ধিকে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ও যথেষ্ট ভাল ক্রিকেট খেলছে। তবে ভরতকে তৈরি করা হলে ভারতীয় ক্রিকেট লাভবান হবে। নির্বাচকেরা হয়তো ভাবছেন, তরুণ ভরত দেশের হয়ে ঋদ্ধির চেয়ে বেশি দিন খেলতে পারবে। সেই দিক থেকে ওরাও কিন্তু ঠিক।’’

প্রাক্তন নির্বাচকেরাও যুক্তি খুঁজে চলেছেন ঋদ্ধির বাদ পড়ার। ভারতীয় বোর্ডকর্তারা শুনতে পাচ্ছেন কি?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement