আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির চাপে সমস্যায় ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেট। ছবি: আইপিএল।
মাথায় হাত কাউন্টি ক্রিকেট কর্তাদের। কলকাতা নাইট রাইডার্স, আরসিবির মতো আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলি বিভিন্ন ক্রিকেটারের সঙ্গে বার্ষিক চুক্তি করতে শুরু করেছে। চুক্তির বিপুল অঙ্কের প্রভাবে দেশের থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজ়িকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন ক্রিকেটাররাও। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবগুলির কর্তাদের। পরিস্থিতি সামলাতে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকে বসতে চান কাউন্টি ক্লাবগুলির কর্তারা। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডকে দ্রুত বৈঠক ডাকার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির নজরে রয়েছেন ইংল্যান্ডের বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার। জেসন রয়ের সঙ্গে আগামী দু’বছরের জন্য চুক্তি করেছে নাইট রাইডার্স। জোফ্রা আর্চারকে বার্ষিক চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। মইন আলিকে একই রকম প্রস্তাব দিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। এই ক্রিকেটাররা ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। সারা বছর বিভিন্ন দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগ খেলতে আগ্রহী তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে দেশের সেরা ক্রিকেটারদের আটকে রাখার উপায় বার করতে চাইছেন কাউন্টি ক্লাবগুলির কর্তারা। কাউন্টি ক্লাবগুলির সঙ্গে ক্রিকেটারদের ১২ মাসের চুক্তি থাকলেও খেলা হয় এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর। এত দিন অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত বিদেশের লিগগুলিতে খেলতে যেতেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। তাতে কাউন্টি ক্লাবগুলির সমস্যা হত না।
সারের ক্রিকেট ডিরেক্টর আলেক স্টুয়ার্টের মতে, কাউন্টি ক্রিকেটের কঠিন দিন আসছে। আন্তর্জাতিক সূচির জন্য সেরা ক্রিকেটারদের অনেককেই আমরা কম সময়ের জন্য পাই। দ্য হান্ড্রেড, আইপিএলের জন্য ক্রিকেটারদের ব্যস্ততা আরও বেড়েছে। তাই কাউন্টি খেলার ব্যাপারে আগ্রহ হারাচ্ছে ক্রিকেটাররা। তিনি বলেছেন, ‘‘ওরা সকলে বাইরে চলে যাচ্ছে খেলতে। ফিরে আসার পর ইন্ডোরে অনুশীলন করতে চায়। সেরা কোচদের কাছে নিজেদের আরও উন্নত করার চেষ্টা করে। আবার অন্য কোনও দেশে খেলতে চলে যায়।’’
দেশ, কাউন্টি এবং ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির হয়ে খেলার জন্য ক্রিকেটাররা কতটা ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবেন, তা নিয়ে চিন্তায় কাউন্টি ক্লাবগুলির কর্তৃপক্ষ। তাঁরা মনে করছেন, নতুন চুক্তিতে ক্রিকেটারদের উপর থেকে কাউন্টিগুলি নিয়ন্ত্রণ হারাবে। এ বার থেকে শুরু হচ্ছে আমেরিকার মেজর লিগ ক্রিকেট। ইংল্যান্ডে শীতের সময় এই প্রতিযোগিতাতেও খেলতে যেতে আগ্রহী অনেকে। সময় বার করতে কিছু ক্রিকেটার দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে শুধু সাদা বলের ক্রিকেটের জন্য চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন। তাঁদের কছে গুরুত্ব কমছে টেস্ট বা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের। আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার ড্যারেল মিচেল বলেছেন, ‘‘যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, তাতে আরও বেশি করে সাদা বলের বিশেষজ্ঞ ক্রিকেটার তৈরি হবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এবং জাতীয় টেস্ট দলে।’’
বিশ্ব জুড়ে ছয় থেকে আট সপ্তাহের ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগগুলিই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে কাউন্টি ক্রিকেট কর্তাদের। তাই বৈঠকে বসে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজবেন তাঁরা। ক্রিকেটারদের সঙ্গে এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে চুক্তি করা যেতে পারে, তা নিয়েই আলোচনা হবে মূলত।