আগমন: নতুন ইনিংসের শুরু। জয়পুরে পৌঁছলেন কোচ দ্রাবিড়।
নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট দল থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে হনুমা বিহারীকে। সিডনি টেস্টে হ্যামস্ট্রিংয়ের আঘাত সহ্য করে দাঁতে দাঁত চেপে আর অশ্বিনের সঙ্গে ১৬১ বল খেলে ভারতকে টেস্ট ড্র করতে সাহায্য করেছিলেন হনুমা। সেই ম্যাচ ড্র না হলে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দ্বিতীয় বারের মতো ভারতের সিরিজ় জয়ের স্বপ্নও অধরা থেকে যেত।
চোটের যন্ত্রণা উপেক্ষা করে দলকে বাঁচানোর পরেও তাঁকে বাদ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রাক্তন নির্বাচকেরা। হনুমার পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে শ্রেয়স আয়ারকে। যাঁর সঙ্গে শেষ এক বছরে লাল বলের ক্রিকেটের কোনও সম্পর্ক নেই। দেশের হয়ে ওয়ান ডে খেলতে গিয়ে চোট পান শ্রেয়স। ক্রিকেটে ফেরেন আইপিএলের দ্বিতীয় দফায়। তা হলে কি আইপিএলের ছন্দ দেখেই তাঁকে নেওয়া হল টেস্ট দলে?
ভারতের প্রাক্তন নির্বাচকেরা বিস্মিত। এক সময়ের নির্বাচক প্রধান দিলীপ বেঙ্কসরকর ও এমএসকে প্রসাদ ভাবতেই পারছেন না হনুমা দলে নেই? বেঙ্গসরকর আনন্দবাজারকে বলছিলেন, ‘‘হনুমা যদি ফিট থাকে, তা হলে কেন ওকে দলে নেওয়া হল না? কোনও কারণ দেখানো হয়েছে কি? যদি না হয়ে থাকে, তা হলে এটা অন্যায়।’’ নির্বাচক প্রধান হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি বলছিলেন, ‘‘অনেক ক্রিকেটার সাংবাদিকদের সামনে নিজের চোটের কথা বলতে চায় না। কিন্তু বোর্ডকে জানিয়ে দেয় সে সুস্থ নয়। সে রকম কিছু হলে আলাদা কথা। কিন্তু আইপিএলের ভিত্তিতে যদি টেস্ট দল গড়া হয়, তা হলে আমার কিছু বলার নেই।’’
শ্রেয়স আয়ারকে দলে নেওয়ায় বেঙ্গসরকর যদিও ক্ষুব্ধ নন। তাঁর কথায়, ‘‘শ্রেয়স লাল বলের ক্রিকেটে খারাপ ব্যাটার নয়। মুম্বইয়ের হয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছে। তবে আমি যখন নির্বাচক ছিলাম, প্রত্যেক ক্রিকেটারের বর্তমান ছন্দ বিচার করে দল সাজাতাম। সেই ভিত্তিতে হনুমা অবশ্যই শ্রেয়সের চেয়ে টেস্টে এগিয়ে থাকবে।’’ হনুমাকে ভারতীয় দলে সুযোগ দিয়েছিলেন এমএসকে প্রসাদ। তিনি নির্বাচক প্রধান থাকাকালীন টেস্ট দলে অভিষেক হয় হনুমার। ইংল্যান্ড সফরের পঞ্চম টেস্টের তৃতীয় দিন ভারতের চার উইকেট পড়ে গিয়েছিল ১০৩ রানে। সেই পরিস্থিতিতে ৫৬ রান করে ভারতীয় দলকে ম্যাচে ফেরান হনুমা। ২০১৮-’১৯-এর অস্ট্রেলিয়া সফরেও ভারতীয় দল যখন ওপেনিং বিভ্রাট নিয়ে চিন্তিত, দলের স্বার্থে ওপেন করতে হয় হনুমাকে। তিনি হয়তো তারকা হয়ে উঠতে পারেননি। তবে কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। তার কি এই প্রতিদান হতে পারে? পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁকে ভারতীয় ‘এ’ দলে যুক্ত করা হল। প্রসাদ বলছিলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত। আমি যখন নির্বাচক ছিলাম, কোনও একজনকে দলে নেওয়া হলে অথবা বাদ দেওয়া হলে সাংবাদিক বৈঠকে পরিষ্কার কারণ তুলে ধরতাম। বর্তমান নির্বাচক প্রধান হনুমাকে বাদ দেওয়ার কোনও কারণই দেখালেন না। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই তিনি ‘এ’ দলে জুড়ে দিলেন হনুমার নাম। আশ্চর্যজনক! শুরুতেই কেন ‘এ’ দলে রাখা হল না হনুমাকে?’’
শার্দূল ঠাকুরের না থাকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তবে প্রসাদ বলছিলেন, ‘‘শার্দূল বহু দিন ধরে জাতীয় দলের সঙ্গে রয়েছে। বেশি ম্যাচ না পেলেও ওকে হয়তো বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। তবে আমি মনে করি, নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধেই ও বরং ম্যাচ পেত। শামি, বুমরা কেউই নেই। সেখানে শার্দূল থাকলে খারাপ হত না।’’ প্রাক্তন নির্বাচক সৈয়দ সাবা করিম হতাশ। বলেন, ‘‘শেষ অস্ট্রেলিয়া সফরের পরে যে হনুমা বাদ যেতে পারে, কেউ ভাবতেই পারেনি।’’