চলছে মাঠ তৈরি করার কাজ। ছবি: সমাজমাধ্যম।
আফগানিস্তান বনাম নিউ জ়িল্যান্ডের একমাত্র টেস্টে প্রথম দু’দিনের খেলা বাতিল হয়েছে। বুধবার তৃতীয় দিনের খেলাও শুরুতেই বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বৃষ্টির কারণে। তিন দিন এ ভাবে খেলা ভেস্তে যাওয়ার পরে গ্রেটার নয়ডার মাঠের অবস্থা নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক। প্রথম দু’দিন রোদ থাকা সত্ত্বেও মাঠ ভিজে থাকার কারণে খেলা শুরু করা যায়নি। মঙ্গলবার রাত এবং বুধবার ভোরে বৃষ্টি বাকি দু’দিনের খেলা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
গ্রেটার নয়ডার মাঠের অবস্থা দেখে অনেক জল্পনা প্রকাশ্যে আসছে। কেউ জানিয়েছেন, স্রেফ টাকা রোজগার করতেই এই মাঠে ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল। কারও দাবি, গ্রেটার নয়ডা সম্ভবত শেষ ম্যাচ আয়োজন করে ফেলল। ভারতীয় বোর্ডের দাবি, তারা তিনটি মাঠের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আফগানিস্তান বোর্ডই গ্রেটার নয়ডাকে বেছেছে। ফলে তাদের কিছু করার নেই।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা একটি ওয়েবসাইটে বলেছেন, “স্টেডিয়ামটি গ্রেটার নয়ডা কর্তৃপক্ষের। টাকা রোজগার করতেই তাদের কয়েক জন কর্তা এবং আফগান বোর্ডের কয়েক জন কর্তা ওখানে বর্ষার মরসুমে ম্যাচ আয়োজন করেছেন। উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থা (ইউপিসিএ) অনেক বার ফোন করে বৈঠকের জন্য ডেকেছিল। যা দরকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ইউপিসিএ প্রস্তাব দিয়েছিল, কানপুরের গ্রিনপার্ক স্টেডিয়ামে ম্যাচ করতে।”
তিনি আরও বলেছেন, “লেবার চকের কর্মীদের মাঠ দেখভালের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কখনও দেখেছেন এ জিনিস? ইউপিসিএ-র এক কর্তাই সুপার সপারের ব্যবস্থা করেন।”
তাদের যে কানপুরের একটি মাঠ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তা স্বীকার করেছেন আফগান বোর্ডের এক কর্তাও। তিনি বলেছেন, “বিসিসিআই আমাদের তিনটে মাঠের প্রস্তাব দিয়েছিল, কানপুর, বেঙ্গালুরু এবং গ্রেটার নয়ডা। আমরা শেষেরটি বেছে নিই যাতায়াতের সুবিধার জন্য। দিল্লি বিমানবন্দর থেকে মাত্র দু’ঘণ্টায় এখানে পৌঁছনো যায়। এই মাঠ বরাবরই আফগানিস্তানের ঘরের মাঠ ছিল। ২০১৬ সাল থেকে এখানে খেলছি।”
ওই কর্তা দোষারোপ করেছেন বৃষ্টিকেই। বলেছেন, “বৃষ্টির জন্যই এত সমস্যা হচ্ছে। গত কালও বৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় একটা দলের সঙ্গে তিন দিনের ম্যাচ খেলেছি এখানে। সেখানে কোনও সমস্যা হয়নি। বৃষ্টি শুরু হতেই সব তালগোল পাকিয়ে গেল।”
সবার নজর এখন ম্যাচ রেফারি জাভাগল শ্রীনাথ কী রিপোর্ট দেন তাঁর উপরে। আগামী দিনে আদৌ আর কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ এই মাঠে হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এমনিতেই এই মাঠে আন্তর্জাতিক তো দূর, ঘরোয়া ক্রিকেটেরও কোনও ম্যাচ আয়োজন করে না বিসিসিআই। পাঁচ বছর আগে শেষ বার বিজয় হজারের ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল।
যদি শ্রীনাথ তাঁর রিপোর্টে কড়া কিছু লেখেন, তা হলে আগামী দিনে এই মাঠে কোনও ম্যাচ হয়তো দেওয়া হবে না। আফগানিস্তানকেও স্পষ্ট বলা হতে পারে ভারতের অন্য কোনও মাঠ বেছে নেওয়ার জন্য।