বিরাট কোহলি এবং জো রুট। —ফাইল চিত্র।
পিছিয়ে পড়ছেন বিরাট কোহলি। পরিসংখ্যান তাই বলছে। টেস্ট ক্রিকেটে গত চার বছরে মাত্র দু’টি শতরান করে ‘ফ্যাব ফোর’এর তালিকায় শতরানের বিচারে এক থেকে চার নম্বরে বিরাট। আর চার বছর আগে চার নম্বরে থাকা রুট এখন এক নম্বরে। এ যেন ম্যারাথন দৌড় চলছে। এগিয়ে থাকা অ্যাথলিটেরা পিছিয়ে পড়েছেন আর পিছিয়ে থাকা অ্যাথলিটেরা এগিয়ে যাচ্ছেন। টেস্টে শতরানের তালিকা এখন তেমনই।
২০২০ সালে টেস্টে বিরাটের শতরান ছিল ২৭টি। স্টিভ স্মিথ ছিলেন দ্বিতীয় স্থানে। তিনি ২৬টি শতরান করেছিলেন। কেন উইলিয়ামসন ২১টি শতরান করে ছিলেন তৃতীয় স্থানে। ‘ফ্যাব ফোর’এর মধ্যে সকলের পিছনে ছিলেন রুট। তিনি ১৭টি শতরান করেছিলেন।
চার বছরে এই তালিকা উল্টে গিয়েছে। শীর্ষে এখন রুট। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার শতরান করেন তিনি। টেস্টে ৩৩তম শতরান করে ফেললেন রুট। ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি শতরান করা ব্যাটার ‘ফ্যাব ফোর’এর তালিকাতেও এক নম্বরে। দ্বিতীয় স্থানে যুগ্ম ভাবে উইলিয়ামসন এবং স্মিথ। তাঁদের দু’জনেরই শতরানের সংখ্যা ৩২। আর সকলের পিছনে বিরাট। টেস্টে তাঁর শতরানের সংখ্যা এখন ২৯।
অর্থাৎ, বিরাট গত চার বছরে টেস্টে মাত্র দু’টি শতরান করেছেন। রুট করেছেন ১৬টি শতরান। উইলিয়ামসন করেছেন ১১টি শতরান। স্মিথ করেছেন ছ’টি শতরান। চার বছরে কী তা হলে বিরাট ব্যর্থ? পরিসংখ্যান তেমনই ইঙ্গিত করছে। কারণ এই চার বছরে বিরাটের গড় ৩৩.৫৯। ২৯টি টেস্টে তিনি করেছেন ১৬৪৬ রান।
বাকি তিন জন বিরাটের থেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে। রুট গত চার বছরে ৫৬টি টেস্টে ৪৯১৫ রান করেছেন। তাঁর গড় ৫৪.৬১। উইলিয়ামসন ২২টি টেস্টে ২৩৬৪ রান করেছেন। তাঁর গড় ৬৭.৫৪। স্মিথ ৩৭টি টেস্টে ২৫২১ রান করেছেন। গড় ৪৫.০১। অর্থাৎ, ‘ফ্যাব ফোর’এর তালিকায় থাকা চার জনের মধ্যে রান, গড় এবং শতরান, সবেতেই পিছিয়ে বিরাট।
প্রতিভা, যোগ্যতা এবং মানের দিক থেকে এই চার ক্রিকেটারকে আলাদা করা সম্ভব নয়। কিন্তু দিনের শেষে পরিসংখ্যানই থেকে যায়। বাংলার রঞ্জিজয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “এই চার ক্রিকেটার সমমানের। তাঁদের আলাদা করা মুশকিল। কিন্তু বিরাট যখন সেরা ফর্মে ছিল, তখন ও পর পর শতরান করেছিল। সেটা এখন হচ্ছে না। আর এত দিন বিরাট তিন ধরনের ক্রিকেটই খেলছিল, সেখানে রুট শুধু টেস্ট খেলে। টি-টোয়েন্টি থেকে এখন অবসর নিয়েছে বিরাট। সেটা মনে হয় আগামী দিনে বিরাটকে টেস্টে বেশি মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।”
প্রায় একই সুর সাবা করিমের গলাতেও। ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার বললেন, “বিরাট খুবই পরিশ্রমী। ও অনুশীলনে নিজেকে উজাড় করে দেয়। কিন্তু গত চার বছরের মধ্যে বিরাটের একটা সময় ছন্দ পাচ্ছিল না। সেই সময় কোনও ধরনের ক্রিকেটেই রান পায়নি ও। যা বাকিদের থেকে বিরাটকে একটু পিছিয়ে দিয়েছে। এমনটা হতেই পারে। ও কিন্তু সব ধরনের মাঠে রান করেছে। ফলে যোগ্যতায় বাকিদের থেকে ওকে পিছিয়ে রাখা যাবে না। এখন বিরাট টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছে। টেস্টে বেশি সময় দেওয়ার সুযোগ পাবে। আশা করি আগামী দিনে যে টেস্ট সিরিজ়গুলো রয়েছে, সেখানে শতরান পাবে বিরাট।”