শামার জোসেফ। ছবি: এক্স।
অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। তা-ও আবার অ্যাডিলেডে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের শামার জোসেফ নজর কেড়ে নিলেন প্রথম দিনেই। প্রথমে এগারো নম্বরে ব্যাট করতে নেমে গুরুত্বপূর্ণ ৩৬ রান করলেন। তার পর বল হাতে নিলেন ২ উইকেট। শামারের দাপটেই প্রথমে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ় শেষ করে ১৮৮ রানে। দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ২ উইকেট হারিয়ে ৫৯ রান।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের এক প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম শামারের। ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলেননি তিনি। গুয়েনা দ্বীপের বারাকারা নামের এক গ্রামে জন্ম শামারের। পাঁচ ভাই এবং তিন বোনের বিরাট সংসারে জন্ম হয় তাঁর। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সেই গ্রামে কোনও ফোন বা ইন্টারনেট ছিল না। নৌকা করে দু’দিনের পথ পার করে এসে তবে পাওয়া যেত সেই সব। তার পরেও ক্রিকেটের স্বাদ পেয়েছিলেন শামার। টেপ বলে ক্রিকেট খেলতেন গ্রামে। খুব কম বাড়িতেই টিভি ছিল। সেখানেই কার্টলি অ্যাম্ব্রোস, কোর্টনি ওয়ালসদের খেলা দেখতেন শামার।
পরিবারকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করার জন্য নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন শামার। তাঁর দু’বছরের এক সন্তানও রয়েছে। কিন্তু সেই দায়িত্ব কাঁধে নিয়েও খেলার প্রতি ভালবাসা কমেনি শামারের। সেই ভালবাসা থেকেই হঠাৎ চাকরি ছেড়ে ক্রিকেটে মন দেন তিনি। জায়গা করে নেন প্রথম শ্রেণির দল গুয়েনা হারপি ঈগলসে। ২০২৩ সালে সেই দলের হয়ে তিন ম্যাচে ৯ উইকেট নেন। তাঁর প্রতিভা নজর কাড়ে নির্বাচকদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ় এ দলে জায়গা করে নেন শামার। দক্ষিণ আফ্রিকা এ দলের বিরুদ্ধে খেলেন তিনি। সব থেকে বেশি উইকেট নেন সেই সিরিজ়ে। জায়গা করে নেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে।
বুধবার থেকে শুরু হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ় প্রথম টেস্ট। এই ম্যাচে স্টিভ স্মিথ প্রথম বার ওপেনার হিসাবে খেললেন। তাঁর উইকেট তুলে নেন শামার। সেটাও আবার টেস্টে শামারের করা প্রথম বলেই। মার্নাস লাবুশেনের উইকেটও নেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে প্রথম দিনের শেষে লড়াইয়ে রেখেছেন শামারই। তিনি যখন ব্যাট করতে নেমেছিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের তখন ১৩৩ রানে ৯ উইকেট। এগারো নম্বর ব্যাটার হিসাবে ব্যাট করতে নেমে তাঁর ৪১ বলে ৩৬ রানের ইনিংস দলকে পৌঁছে দেয় ১৮৮ রানে। সঙ্গী ছিলেন কেমার রোচ। তিনি ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের হয়ে সব থেকে বেশি রান করেন কির্ক ম্যাকেঞ্জি। তিনি ৫০ রান করেন।