জয় শাহ। — ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার রাতেই গ্রেগ বার্কলে জানিয়ে দিয়েছেন, আইসিসি-র চেয়ারম্যান পদে আর লড়বেন না। তার পরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে জয় শাহকে নিয়ে। শোনা যাচ্ছে, ভারতীয় বোর্ডের সচিবের পদ ছেড়ে এ বার বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে বসতে চাইছেন জয় শাহ। আগামী ২৭ অগস্টের মধ্যেই তার উত্তর পাওয়া যাবে।
জয় শাহের সম্ভাবনা কতটা?
আগামী ৩০ নভেম্বর নিউ জ়িল্যান্ডের বার্কলের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ২৭ অগস্টের মধ্যে মনোনয়ন জমা দিতে হবে। যদি একের বেশি মনোনয়ন জমা পড়ে, তা হলে নির্বাচন হবে। সে ক্ষেত্রে, ১৬টি ভোটের মধ্যে ৯টি ভোট পেলেই চলবে জয় শাহের। আগে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন দরকার হত। এখন সেই নিয়ম বদলেছে।
আইসিসি চেয়ারম্যান পদে কোনও ব্যক্তি দু’বছর করে সর্বোচ্চ তিন বার ক্ষমতায় থাকতে পারেন। ২০২০ সালে প্রথম ক্ষমতায় এসেছিলেন বার্কলে। ২০২২ সালে পুনর্নির্বাচিত হন। হিসেব মতো আরও দু’বছর পদে থাকতে অসুবিধা ছিল না। কিন্তু তিনি রাজি হননি।
বিসিসিআই সচিবের পদ কি ছাড়তে হবে শাহকে?
লোধা কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসের পর বাধ্যতামূলক কুলিং-অফে চলে যেতে হবে জয় শাহকে। তাই বোর্ডের পদ ছেড়ে দিয়ে তিনি আইসিসি-র চেয়ারম্যান হতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।
বিশ্ব ক্রিকেটে এই মুহূর্তে অন্যতম প্রভাবশালী জয় শাহ। তাঁর পক্ষে সমর্থন রয়েছে একাধিক দেশের। তিনি আইসিসি চেয়ারম্যান পদে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলে বিপক্ষ হয়তো কেউ না-ও দাঁড়াতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে আইসিসি-তে চলে যাবেন জয় শাহ। এই মুহূর্তে তিনি আইসিসি-র অর্থ এবং বাণিজ্যিক কমিটির প্রধান। আইসিসি-তে গেলে বোর্ডের পদ ছাড়তে হবে জয় শাহকে।
আইসিসি-র ইতিহাসে কনিষ্ঠতম চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ রয়েছে জয় শাহের কাছে। অতীতে জগমোহন ডালমিয়া, শরদ পওয়ার, এন শ্রীনিবাসন এবং শশাঙ্ক মনোহর আইসিসি-র চেয়ারম্যান হয়েছেন।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কি দৌড়ে নেই?
একটা সময় আইসিসির চেয়ারম্যান পদে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বসতে পারেন বলে শোনা গিয়েছিল। সেটা ছিল গত বছর ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার ঠিক আগে। ওই বিশ্বকাপে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স বিশ্বকাপের একটি সেমিফাইনাল-সহ পাঁচটি ম্যাচ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছিল। সৌরভ তখন বাংলার ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা সিএবি-র সভাপতি পদে না থাকলেও তাঁর দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় ওই পদে ছিলেন (এখনও আছেন)। তাই মনে করা হচ্ছিল যে হেতু তিনিই নেপথ্যে থেকে সিএবি নিয়ন্ত্রণ করেন, তাই জয় শাহের ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড তাঁকে এই ‘পুরস্কার’ দিয়েছে। অনেকেই বলেছিলেন, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে বোর্ডের মাধ্যমে সৌরভকে এই টোপ দিয়েছে বিজেপি।
পাশাপাশি এটাও অনেকে ভেবেছিলেন, নির্বাচনের আগে আরও বড় টোপ সৌরভকে দেবেন শাহেরা। সেটা হল আইসিসি-র চেয়ারম্যানের পদ। তখন জল্পনা ছিল, সৌরভ একটু এগোলে এর পরে আইসিসি চেয়ারম্যানের পদের মতো বড় পুরস্কার জুটতে পারে তাঁর ভাগ্যে। সেটিই নাকি হত বিজেপির তরফে ‘চূড়ান্ত’ পুরস্কার। শোনা যায় যে পদটি নিয়ে সৌরভের আগ্রহও কম ছিল না। কিন্তু সৌরভ নিজের অবস্থান কখনওই পাকাপাকি ভাবে জানাননি। এর নেপথ্যে অনেকের যুক্তি ছিল, সৌরভ মমতার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চাননি। বাংলায় থেকে শাসকদলের সঙ্গে কে-ই বা সম্পর্ক নষ্ট করতে চায়! নির্বাচনে সৌরভকে ‘পাওয়ার’ যে আশা বিজেপির ছিল, তা আর পূরণ হয়নি। সৌরভও আইসিসি-র চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড় থেকে সরে যান।