বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
কলকাতায় শনি ও রবিবার ভারতীয় বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় সবচেয়ে বেশি নজর থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের উপর। যদিও সরকারি ভাবে আলোচ্য সূচিতে এই বিষয়টি নেই। মুম্বইয়ে টেস্ট শেষ করেই বিরাট কোহলীদের যাওয়ার কথা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। কিন্তু ওমিক্রন আতঙ্কে সেই সফর নিয়ে তীব্র জলঘোলা শুরু হয়েছে।
ডেল্টার চেয়েও অনেক বেশি সংক্রামক বলা হচ্ছে ওমিক্রনকে। যে কারণে সারা বিশ্বে ফের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আর দক্ষিণ আফ্রিকায় যে-হেতু এর উৎপত্তি, সেখানকার সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করতে চাইছে অনেক দেশ। তার মধ্যে কোহলী, রোহিতরা কী ভাবে ক্রিকেট সফরে অ্যালান ডোনাল্ডদের দেশে যাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
তবে বোর্ডের শীর্ষ কর্তারা বৈঠকে বসার আগের রাতে যা ইঙ্গিত, পরিস্থিতির খুব অবনতি না ঘটলে কোহলীদের সফর বাতিল করা হবে না। দু’দেশের বোর্ডের মধ্যে সফর নিয়ে দফায় দফায় কথা হচ্ছে। এখন দু’দেশের দুই বোর্ড প্রধান প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং গ্রেম স্মিথ। দু’জনের মধ্যে খুবই মধুর সম্পর্ক। তাই সফর বাঁচানোর চেষ্টা চললে অবাক হওয়ার নেই। কোহলীদের সফর বাতিল হওয়া মানে স্মিথদের বোর্ডের বিরাট ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা। তাই ক্রিকেটারদের শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে আপস না করে সব রকম চেষ্টা হবে সফর বাঁচানোর। কাকতালীয় হতে পারে, কিন্তু করোনার প্রভাবে ভারতে প্রথম যে ক্রিকেট সিরিজ় বাতিল হয়, তাতে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কলকাতা থেকে উড়ান ধরে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন কুইন্টন ডি’ককেরা।
জোহানেসবার্গ, যেখানে কোহলীদের প্রথম দু’টি টেস্ট খেলার কথা, সেখানে ওমিক্রন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে কি না, সে দিকে নজর রাখছে ভারতীয় বোর্ড। ১৭ ডিসেম্বর প্রথম টেস্ট। মুম্বইয়ে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট শেষ করে ৯ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার উড়ান ধরার কথা ভারতীয় ক্রিকেটারদের। শুক্রবার রাত পর্যন্ত যা খবর, যাত্রার দিনক্ষণ অপরিবর্তিত। ওয়াকিবহাল মহলের এক জন বললেন, ‘‘পরিস্থিতির অবনতি হলে তো আগের দিনও সফর বাতিল করতে হতে পারে। সেটা ইমার্জেন্সি পরিস্থিতি। তবে এখনও পর্যন্ত যা অবস্থান, সফর হচ্ছে বলেই ধরা আছে।’’
ক্রিকেটারদের মধ্যে উদ্বেগ যে রয়েছে, সন্দেহ নেই। অনেকের মনেই প্রশ্ন, ওখানে গিয়ে বিপদ হলে কী হবে? দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সব চেয়ে সুরক্ষিত বলয়ের ব্যবস্থা করবে ভারতীয় দলের জন্য। স্ত্রী, পরিবারও সেই বলয়ে স্বাগত। শুক্রবার রাত পর্যন্ত কোনও ভারতীয় ক্রিকেটার আপত্তি তুলে বলেননি, ওমিক্রন আক্রান্ত দেশে তিনি বা তাঁরা যেতে চান না।
শুক্রবার ইডেনে নিজেদের মধ্যে ক্রিকেট খেলেন সৌরভ-জয় শাহরা। সেখানে ছিলেন মহম্মদ আজ়হারউদ্দিনও। আজ, শনিবার বোর্ডের বৈঠকে সফর বাতিলের চেয়ে চালু রাখার পক্ষে মতই বেশি পড়তে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকায় সফররত ভারতীয় ‘এ’ দলকে ফিরিয়ে আনেনি বোর্ড। হনুমা বিহারী, পৃথ্বী শ, ঈশান পোড়েলরা ওমিক্রন আতঙ্কের মধ্যেই সেখানে খেলে চলেছেন। সিনিয়র দলের ক্ষেত্রেও একই মনোভাব নিয়ে এগোচ্ছেন সৌরভরা।
আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিনটি টেস্ট, তিনটি ওয়ান ডে এবং চারটি টি-টোয়েন্টি খেলার কথা ভারতের। সেই সূচিতে কিছুটা কাটছাঁট হলেও হতে পারে। ভারত সরকার যদি বাধ্যতামূলক করে দেয় যে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার পরে ১৪ দিনের কোয়রান্টিন করতেই হবে, তা হলে সফর ছোট করতে হতে পারে।