টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শাকিবদের পারফরম্যান্স নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ছবি: টুইটার।
শুধু এশিয়া কাপ নয়, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেই বাংলাদেশের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক নয়। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ১৫টি ২০ ওভারের ম্যাচ খেলে মাত্র দু’টিতে জয় পেয়েছেন শাকিব আল হাসানরা। একের পর এক ব্যর্থতায় বিরক্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। ক্ষুব্ধ ক্রিকেট কর্তারাও।
ক্রিকেটের সব থেকে ছোট সংস্করণে কেন সাফল্য পাচ্ছে না জাতীয় দল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্তারা। প্রয়োজনে কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভেবেছেন তাঁরা। ২০ ওভারের ক্রিকেটে শাকিবদের ছন্দে ফেরাতে বাংলাদেশের ভরসা এখন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন সহকারী কোচ শ্রীধরন শ্রীরাম। ভারতীয় কোচ বেশ কয়েক বছর কাটিয়েছেন অ্যারন ফিঞ্চদের সাজঘরে। অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ এবং অনুশীলনের সঙ্গে পরিচিত শ্রীরাম। তাঁর পরামর্শ মতোই চলতে চাইছেন বিসিবি কর্তারা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে আগেই একাধিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিসিবির ক্রিকেট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস।
শ্রীরামকে টি-টোয়েন্টি দলের পরামর্শদাতা হিসাবে নিয়োগ করেছে বিসিবি। কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর পারফরম্যান্সে খুশি নন বাংলাদেশের কর্তারা। তাই দলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে শ্রীরামকে। এশিয়া কাপের আগে শাকিবদের সঙ্গে যোগ দিলেও শ্রীরাম দায়িত্ব নিয়েছেন প্রতিযোগিতার পর থেকে। দুবাইয়ে শাকিবদের খেলা দেখে তিনি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিসিবি কর্তাদের।
বাংলাদেশ দলের ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ বলেছেন, ‘‘বিভিন্ন মানুষের ক্রিকেট দর্শন বিভিন্ন রকম। ডোমিঙ্গো এবং শ্রীরামের ক্রিকেট দর্শন সম্পূর্ণ আলাদা। মন্তব্য করার মতো পরিস্থিতি এখনও হয়নি। যদিও এশিয়া কাপে শ্রীরামের কাজের পদ্ধতি দেখে আমি অন্তত খুশি। ওঁর ক্রিকেট দর্শন বেশ ভাল। ক্রিকেটারদের নিয়ে যে ভাবে কাজ করছেন, সেটাও আকর্ষণীয়।’’ শ্রীরামকে মূলত টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্বই দেওয়া হয়েছে। ডোমিঙ্গকে বলা হয়েছে টেস্ট এবং এক দিনের ক্রিকেট নিয়ে ভাবতে। মাহমুদ জানিয়েছেন, তাঁরা শ্রীরামকে যথেষ্ট সময় দিতে চান। ক্রিকেটারদের মধ্যে শ্রীরাম অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই যে প্রভাব তৈরি করেছেন, তাতে সাফল্য নিয়ে আশাবাদী তিনি। মাহমুদ বলেছেন, ‘‘নিজের পর্যবেক্ষণ থেকে বলতে পারি, শ্রীরামের কাজটা সহজ নয়। বেশ কঠিনই হবে। কারণ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দল হিসাবে আমাদের পারফরম্যান্স খুবই খারাপ। সত্যি বলতে এক দম তলানিতে ঠেকেছে। আর নীচে নামা সম্ভব নয়।’’
বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করতে চাইছেন বাংলাদেশের ক্রিকেট কর্তারা। শ্রীরামের পরিকল্পনা মতোই সব ব্যবস্থা হবে। ক্রিকেটাররা কে কোন পরিস্থিতিতে আছেন, তা জানতে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দিনের শিবির হবে। মাহমুদ বলেছেন, ‘‘আমরা নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে চাইছি শিবিরে। কয়েক জন নতুন ক্রিকেটারকে ডাকার কথা ভাবা হয়েছে। ওপেনিং ব্যাটার এবং জোরে বোলারদের নিয়ে আলাদা করে কাজ করতে চাই আমরা। ৩০-৩২ জন ক্রিকেটারকে ডাকা হবে শিবিরে। দেশের হয়ে এখনও খেলেনি এমন কয়েক জনও থাকবে। বেশ কয়েক জন জোরে বোলারকে ডাকা হবে। এমন ভাবার কারণ নেই, যারা দলে ছিল সকলেই সুযোগ পাবে।’’
এত জন ক্রিকেটারকে কেন ডাকা হবে? বাংলাদেশ দলের ডিরেক্টর বলেছেন, ‘‘শ্রীরাম নতুন এসেছেন। অধিকাংশ ক্রিকেটারকেই দেখেননি। যারা জাতীয় দলে খেলতে পারে, তাদের সকলের সম্পর্কে ওঁর জানা উচিত। নতুন খেলোয়াড়দের দেখে নেওয়া ওঁর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্যই এই শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে। আমরা চাই ক্রিকেটাররা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলুক।’’ উল্লেখ্য, ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় পৌঁছবেন শ্রীরাম।
বিসিবির আশা, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নুরুল হাসান, লিটন দাস, ইয়াসির আলি এবং হাসান মেহমুদ চোট সারিয়ে সুস্থ হয়ে যাবেন। এই চার জন বাদে সব ক্রিকেটারকে সেপ্টেম্বরের তিন দিনের শিবিরে বাধ্যতামূলক ভাবে উপস্থিত থাকতে হবে।