অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন বেশির ভাগ সময় মাঠ ঢাকা থাকল এ ভাবেই। ছবি: রয়টার্স
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর খেলা সাত ওভার গড়াতে না গড়াতেই শুরু বৃষ্টি। ফের খেলা শুরুর হওয়ার পরেই চার বলের ব্যবধানে দু’টি উইকেট হারাল ইংল্যান্ড। আবার বৃষ্টি এসে ভেস্তে দিল তৃতীয় দিনের খেলা। শেষ দু’টি সেশন থেকে প্রাপ্তি মোটে ১০ ওভার। কিন্তু ওই ১০ ওভারেই ইংল্যান্ডের ‘বাজ়বল’ ঘরানার ক্রিকেট দু’টি উইকেট হারিয়ে চাপে। টেস্টের প্রথম আড়াই দিন রোদের নীচে দু’দলের যে খেলা দেখা গিয়েছিল, বৃষ্টি এবং মেঘলা আকাশ সেই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে দিল। ইংল্যান্ডের ৩৯৩ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছে ৩৮৬ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের স্কোর ২৮-২। এগিয়ে মাত্র ৩৫ রানে।
নিখুঁত পরিকল্পনা এবং সঠিক জায়গায় বল করে তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্নভোজের বিরতির মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস গুটিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড। কিন্তু মধ্যাহ্নভোজের বিরতি চলাকালীনই বার্মিংহামের আকাশে জমতে শুরু করেছিল মেঘ। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর সপ্তম ওভারেই বৃষ্টির কারণে বন্ধ হল খেলা।
প্রায় এক ঘণ্টার বেশি খেলা বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হল। কিন্তু পরিস্থিতি তখন সম্পূর্ণ আলাদা। মেঘলা আকাশের পাশাপাশি বইছিল হাওয়াও। পাটা পিচে আবহাওয়ার সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগালেন অজি বোলাররা। নবম ওভারেই ফিরলেন বেন ডাকেট (১৯)। প্যাট কামিন্সের অফস্টাম্পের বাইরে করা বলা ড্রাইভ করতে গিয়ে গালিতে ক্যামেরন গ্রিনের হাতে ক্যাচ দিলেন তিনি। পরের ওভারের প্রথম বলেই ফিরলেন জাক ক্রলি। স্কট বোলান্ডের বল হাওয়ায় বেশ খানিকটা সুইং করল। ক্রলির ব্যাট ছুঁয়ে ক্যাচ জমা পড়ল অ্যালেক্স ক্যারির হাতে।
১১তম ওভারে আবার বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটার জো রুট এবং অলি পোপ কেঁপে গেলেন। দু’জনেই এখনও খাতা খুলতে পারেননি।
এ দিকে, ইংল্যান্ডের থেকে ৮২ রান পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিন খেলতে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। উসমান খোয়াজা ১২৬ ও অ্যালেক্স ক্যারে ৫২ রানে ব্যাট করছিলেন। তৃতীয় দিনের শুরুটাও ভালই করেন দুই ব্যাটার। নির্দিষ্ট গতিবেগে রান উঠছিল। খুব একটা সমস্যায় ফেলতে পারছিলেন না জেমস অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রডরা। তার মাঝেই অ্যান্ডারসনের বল ক্যারের ব্যাটে লেগে উইকেটরক্ষকের কাছে যায়। সেই ক্যাচ ছাড়েন বেয়ারস্টো। প্রথম ঘণ্টার বাকিটা সাবধানে খেলে পার করে দেন খোয়াজা ও ক্যারে।
বিরতির পরে অবশ্য বদলে যায় ছবি। প্রথমেই ৬৬ রানের মাথায় ক্যারের ব্যাট ও পায়ের ফাঁক দিয়ে বল গলিয়ে দেন অ্যান্ডারসন। বল গিয়ে লাগে উইকেটে। তার পরেই ফিল্ডিংয়ে বদল করেন স্টোকস। খোয়াজার বিরুদ্ধে সামনে উইকেটের দু’দিকে ছ’জন ফিল্ডার দাঁড় করিয়ে দেন তিনি। যে কোনও ব্যাটার ভাবতে বাধ্য যে বাউন্সার আসবে। কিন্তু অলি রবিনসন করলেন ইয়র্কার। ১৪১ রানের মাথাতেও সেই বল ছুঁতে পারেননি খোয়াজা। বোল্ড হয়ে ফেরেন।
নীচের সারির ব্যাটারদের সামনে আবার অন্য পরিকল্পনা করেন স্টোকস। ব্যাটের সামনেই দু’জন ফিল্ডার। বাঁ দিকে বাউন্ডারিতে আরও তিন জন। ক্রমাগত শর্ট বল করে গেলেন রবিনসন, ব্রড। তার ফল পেল ইংল্যান্ড। মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে আউট হলেন নেথান লায়ন। স্কট বোলান্ড আবার বাউন্সার ঠেকাতে গিয়ে উইকেট দিয়ে ফিরলেন। শেষে বাধ্য হয়ে বড় শট মারতে গিয়ে ৩৮ রান করে আউট হন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির ঠিক আগেই ৩৮৬ রানে অলআউট হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। ব্রড ও রবিনসন ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। মইন আলি ২ এবং স্টোকস ও অ্যান্ডারসন পেয়েছেন ১টি করে উইকেট।