অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ছবি: রয়টার্স
ইংল্যান্ডকে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই ৩২৫ রানে অলআউট করে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। শুক্রবার লর্ডস টেস্টের তৃতীয় দিনের চা-বিরতিতে চালকের আসনে প্যাট কামিন্সের দল। এক উইকেট হারিয়ে ৮১ রান তুলেছে তারা। এগিয়ে ১৭২ রানে। এখনও টেস্টের প্রায় আড়াই দিন বাকি। খুব বড় অঘটন না হলে এই টেস্টেও অস্ট্রেলিয়ার জেতার কথা।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর অস্ট্রেলিয়ার কাছে কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। লন্ডনের আকাশ শুক্রবার সকাল থেকেই মেঘলা। পেসাররা সাহায্যও পাচ্ছিলেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং উসমান খোয়াজাকে নড়াতে পারলেন না তাঁরা। এই অস্ট্রেলিয়া দল ‘বাজ়বল’ (ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলাচ্ছেন দলকে। যেহেতু তাঁর ডাকনাম ‘বাজ়’, ইংল্যান্ডের ক্রিকেটকে বাজ়বল বলা হচ্ছে।) ঘরানায় বিশ্বাস করে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার পক্ষপাতী তারা। অহেতুক তাড়াহুড়ো না করে তাঁরা বল অনুযায়ী খেলছিলেন।
খোয়াজা এখনও পর্যন্ত ভালই খেলেছেন। তাঁর মনঃসংযোগ টলানোই ইংরেজ পেসারদের কাছে এখন কঠিন কাজ। এ দিন খোয়াজা মারার বল মারছিলেন। আবার কিছু বল ধরে খেলছিলেন। সব মিলিয়ে জেমস অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ড ব্রড এবং জশ টাংয়ের ত্রিফলা আক্রমণের সামনে খুব একটা বিব্রত হতে দেখা গেল না তাঁকে।
প্রথম উইকেটে ৬৩ রান উঠে যায় অস্ট্রেলিয়ার। তার পরেই ফেরেন ডেভিড ওয়ার্নার। টাংয়ের বল অসি ব্যাটারের প্যাডে লাগে। আম্পায়ার আউট দিলেও ওয়ার্নার রিভিউ চান। কিন্তু রিভিউয়ে (মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনও দলের আবেদন) দেখা যায় বল লেগ স্টাম্পে লাগছে। খোয়াজার সঙ্গে ক্রিজে রয়েছেন মার্নাস লাবুশেন (৮)।
তার আগে, তৃতীয় দিন মেঘলা আকাশের নীচে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের দাপটে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ৩২৫ রানে। অস্ট্রেলিয়ার থেকে ৯১ রানে পিছিয়ে শেষ হয় তাদের প্রথম ইনিংস। শেষ ছ’উইকেট পড়ে ৪৭ রানে। অস্ট্রেলিয়াকে হাত ঘোরাতে হয়েছে ১৫.২ ওভার।
দ্বিতীয় দিনে ক্রিজে জমে গিয়েছিলেন হ্যারি ব্রুক এবং বেন স্টোকস। এক সময় মনে করা হচ্ছিল, অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের রান অনায়াসে পেরিয়ে যাবে ইংল্যান্ড। কিন্তু এ দিন শুরু থেকে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল ইংরেজদের ইনিংস। কোনও ব্যাটারই দাঁড়াতে পারেননি।
নেথান লায়নকে হারিয়ে এমনিতেই একটু চাপের মধ্যে ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু বল হাতে কোনও পার্থক্য দেখা গেল না। শুরুতেই বেন স্টোকসকে তুলে নেন মিচেল স্টার্ক। অর্ধশতরান করেই ফিরে যান ব্রুক। ইংল্যান্ডের শেষ ভরসা ছিলেন জনি বেয়ারস্টো। তিনিও মাত্র ১৬ রানে ফিরে যান। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস দেখলে বোঝা যাবে, একমাত্র জাক ক্রলি বাদে প্রত্যেকের স্ট্রাইক রেট ১০০-র থেকে বেশ কম। অর্থাৎ ‘বাজ়বল’-এর ঘরানা অনুযায়ী অতি আগ্রাসী হয়ে খেলতে যাননি কেউ। তাতেও খুব একটা লাভ হল না। সাবধানী হয়ে খেলতে গিয়ে ইংল্যান্ড আরও বিপদে পড়ল।