মাঠে বার বার মেজাজ হারালেন রোহিত। ছবি: বিসিসিআই
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির শুরুটা ভাল হল না ভারতের। মোহালিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বড় রান করেও হারতে হল রোহিত শর্মাদের। প্রথমে ব্যাট করে ২০৮ রান করল ভারত। ছন্দে ফিরলেন লোকেশ রাহুল। ৫৫ রান করলেন তিনি। শেষ দিকে বিধ্বংসী ব্যাটিং করলেন হার্দিক পাণ্ড্য। মাত্র ৩০ বলে ৭১ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি। কিন্তু তার পরেও জয় এল না। রান তাড়া করতে নেমে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করল অস্ট্রেলিয়া। ব্যর্থ ভারতীয় বোলাররা। অক্ষর পটেল ছাড়া কোনও বোলারই দাগ কাটতে পারলেন না। তার ফলে হেরেই মাঠ ছাড়তে হল রোহিত শর্মাদের।
টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি ভারতের। মাত্র ১১ রান করে আউট হয়ে যান রোহিত শর্মা। এশিয়া কাপে শতরান করা বিরাট কোহলীও রান পাননি। সাত বলে দু’রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। দু’উইকেট পড়ার পরে জুটি বাঁধেন রাহুল ও সূর্যকুমার যাদব। এশিয়া কাপে রান না পেলেও দেশের মাটিতে ছন্দ ফিরে পেলেন রাহুল। সূর্যর সঙ্গে মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তিনি। দু’জনে মিলে ৬৮ রান যোগ করেন। মাত্র ৩২ বলে অর্ধশতরান করেন রাহুল। কিন্তু তার পরেই ছন্দপতন। ৫৫ রান করে আউট হয়ে যান তিনি।
অন্য প্রান্তে থাকা সূর্যকুমারকেও ভাল দেখাচ্ছিল। মাঠের চার দিকে শট খেলছিলেন তিনি। কিন্তু ৪৬ রানের মাথায় খেলার গতির বিপরীতে আউট হয়ে ফেরেন সূর্য। অক্ষর পটেল ও দীনেশ কার্তিক রান পাননি।
ভারতের ইনিংসকে টেনে নিয়ে গেলেন হার্দিক। প্রতি ওভারে বড় শট খেলছিলেন তিনি। মাত্র ২৫ বলে অর্ধশতরান করেন হার্দিক। সেখানেই থামেননি। ইনিংসকে শেষ করে ফিরলেন তিনি। শেষ তিন বলে তিনটি ছক্কা মারলেন এই ডান হাতি অলরাউন্ডার। শেষ পর্যন্ত ৩০ বলে ৭১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
দেখে মনে হচ্ছিল, ২০৯ রান তাড়া করা সহজ হবে না অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ফিঞ্চ ও গ্রিন। নিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছিল গ্রিনকে। পাওয়ার প্লে-তে ওভার প্রতি ১০ রান করে উঠছিল।
অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ধাক্কা দেন অক্ষর। ফিঞ্চকে ২২ রানের মাথায় বোল্ড করেন তিনি। স্মিথের সঙ্গে জুটি বাঁধেন গ্রিন। ভারতীয় বোলিংকে নিয়ে ছেলেখেলা করতে থাকেন তিনি। মাত্র ২৬ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি। তবে গ্রিনকে সাহায্য করেন ভারতীয় ফিল্ডাররা। অক্ষর তাঁর ক্যাচ ছাড়েন। মাত্র ২৬ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি।
একটা সময় মনে হচ্ছিল খেলা ভারতের হাত থেকে বার করে নিয়ে যাবেন গ্রিন। তখনই আবার ভারতকে খেলায় ফেরান সেই অক্ষর। এ বার আর ক্যাচ ফস্কাননি কোহলী। ৬১ রান করে সাজঘরে ফেরেন গ্রিন। তিনি আউট হওয়ার পরে রানের গতি কিছুটা কমে যায়।
অস্ট্রেলিয়াকে বড় ধাক্কা দিলেন উমেশ। এক ওভারে স্মিথ ও ম্যাক্সওয়েলকে ফেরালেন তিনি। দু’টি ক্ষেত্রেই প্রথমে আম্পায়ার আউট দেননি। পরে রিভিউ নিলে দেখা যায় দু’ক্ষেত্রেই আউট হয়েছেন ব্যাটাররা। চার উইকেট পড়ার পরে চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ক্রিজে আসেন দুই তরুণ জশ ইংলিশ ও টিম ডেভিড। ইংলিশ কয়েকটি বড় শট খেলেন। কিন্তু তাঁকে নিজের শেষ ওভারে আউট করেন অক্ষর। চার ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন এই বাঁ হাতি স্পিনার।
কিন্তু তখনও খেলা বাকি ছিল। শেষ দিকে নেমে ঝোড়ো ইনিংস খেললেন ম্যাথু ওয়েড। তাঁকে সঙ্গ দিলেন ডেভিড। ভারতের ডেথ ওভার বিশেষজ্ঞ হর্ষলের দিনটা ভাল গেল না। তাঁকে এক ওভারে ওয়েড দু’টি ও ডেভিড একটি ছক্কা মারেন। এক ওভারে ওঠে ২২ রান। সেখানেই খেলা ভারতের হাত থেকে বেরিয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত ২১ বলে ৪৫ রান করে অপরাজিত থাকলেন ওয়েড।