(বাঁ দিকে) অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। (ডান দিকে) ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস। ছবি: রয়টার্স।
ভারতকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হারিয়ে এ বার অ্যাশেজ খেলবে অস্ট্রেলিয়া। সামনে ইংল্যান্ড। ঘরের মাঠে যে দল ‘বাজবল’ খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম আসার পর থেকে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে গিয়েছেন বেন স্টোকসরা। সেই ধরনের ক্রিকেট সাফল্যও এনে দিয়েছে ইংল্যান্ডকে। তবে এ বার সামনে অস্ট্রেলিয়া। সদ্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা দল। এমন শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে ‘বাজবল’ কতটা কার্যকর হবে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাই শুক্রবার থেকে শুরু হতে চলা অ্যাশেজের দিকে নজর থাকবে সকলেরই।
ইংল্যান্ড দলের শক্তি
এ বারের ইংল্যান্ড দলের আসল শক্তি ব্যাটিং। জো রুট, অলি পোপ, জ্যাক ক্রলিদের সঙ্গে থাকবেন জনি বেয়ারস্টো। উইকেটরক্ষক হিসাবে দলে ফিরছেন তিনি। বেন ফোকসের বদলে খেলতে দেখা যাবে বেয়ারস্টোকে। যা দলের ব্যাটিং শক্তি বাড়িয়ে দেবে। ব্যাটিং গভীরতা বেড়ে গিয়েছে মইন আলি দলে ফেরায়। থাকবেন অধিনায়ক বেন স্টোকসও। ফলে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং যে কোনও মুহূর্তে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে।
ইংল্যান্ড দলের দুর্বলতা
ব্যাটিং শক্তিশালী হলেও ইংল্যান্ডের বোলিং বিভাগ একটু দুর্বল। একাধিক বোলারের চোট চিন্তায় রেখেছে তাদের। চোট সারিয়ে ফেরা জোফ্রা আর্চার আবার চোটের কারণে ছিটকে গিয়েছেন। চোট রয়েছে জ্যাক লিচের। জেমস অ্যান্ডারসন এবং স্টুয়ার্ট ব্রড দলে থাকলেও সব ম্যাচে ইংল্যান্ড তাঁদের না-ও খেলাতে পারে। অলি রবিনসন দলে থাকলেও তিনি পুরোপুরি সুস্থ কি না তা স্পষ্ট নয়। মার্ক উড এবং ক্রিস ওকসের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে ইংল্যান্ডকে।
ইংল্যান্ড দল
বেন স্টোকস (অধিনায়ক), অলি পোপ (সহ-অধিনায়ক), মইন আলি, জেমস অ্যান্ডারসন, জনি বেয়ারস্টো, স্টুয়ার্ট ব্রড, হ্যারি ব্রুক, জ্যাক ক্রলি, বেন ডাকেট, ড্যান লরেন্স, ম্যাথু পটস, অলি রবিনসন, জো রুট, জস টাং, ক্রিস ওকস এবং মার্ক উড।
অস্ট্রেলিয়া দলের শক্তি
অস্ট্রেলিয়ার বোলিং বিভাগ অনেক বেশি শক্তিশালী। প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে মিচেল স্টার্ক এবং জস হেজলউড রয়েছেন। হেজলউড যদি অ্যাশেজের আগে সুস্থ হতে না পারেন তাতেও চিন্তার কোনও কারণ নেই অস্ট্রেলিয়ার। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে স্কট বোলান্ড বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রয়োজনে তিনি কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। সেই সঙ্গে ক্যামেরন গ্রিন রয়েছেন। স্পিন বিভাগ সামলানোর জন্য রয়েছেন নেথন লায়ন। প্রয়োজনে স্টিভ স্মিথ এবং মার্নাস লাবুশানেও বল করতে পারেন। তাই ইংল্যান্ডের থেকে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং শক্তি অনেক বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে। সেই সঙ্গে ব্যাটিং বিভাগে রয়েছেন এই মুহূর্তে ক্রমতালিকায় শীর্ষে থাকা বিশ্বের তিন ব্যাটার। স্মিথ, লাবুশানের সঙ্গে ট্রেভিস হেড। এই তিন ব্যাটারের সঙ্গে উসমান খোয়াজা, ডেভিড ওয়ার্নার এবং অ্যালেক্স ক্যারি থাকবেন। থাকবেন অলরাউন্ডার গ্রিনও। অর্থাৎ ব্যাটে, বলে অস্ট্রেলিয়া যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েই নামতে চলেছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
অস্ট্রেলিয়া দলের দুর্বলতা
ইংল্যান্ডের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া শেষ বার অ্যাশেজ খেলেছে চার বছর আগে। তখন ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’এর মুখে পড়তে হয়নি স্মিথদের। এ বারের ইংল্যান্ড অনেক বেশি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলবে। সেই দাপট অস্ট্রেলিয়া সামলাতে পারে কি না সেই দিকে নজর থাকবে। চার বছর আগে ২-২ ব্যবধানে শেষ হয়ে ছিল অ্যাশেজ। ওয়ার্নারকে সে বার বোতল বন্দী করে ফেলেছিলেন ব্রড। এ বারেও আবার সেই রোগ দেখা দিলে মুশকিল।
অস্ট্রেলিয়া দল
প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, মার্কাস হ্যারিস, মার্নাস লাবুশানে, ম্যাট রেনশ, স্টিভ স্মিথ, ট্রেভিস হেড, উসমান খোয়াজা, ক্যামেরন গ্রিন, মিচেল মার্শ, অ্যালেক্স ক্যারি, জিমি পায়ারসন, জস ইংলিস, জস হেজলউড, মিচেল স্টার্ক, নেথন লায়ন, স্কট বোলান্ড এবং টড মারফি।
কখন থেকে শুরু?
ইংল্যান্ডে হবে এ বারের অ্যাশেজ। ম্যাচ শুরু হবে ভারতীয় সময় দুপুর ৩:৩০ থেকে। মোট পাঁচটি টেস্ট হবে। প্রথম টেস্টটি হবে এজবাস্টনে।
কোথায় দেখা যাবে?
ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচগুলি টিভিতে সম্প্রচার করা হবে সোনি স্পোর্টস নেটওয়ার্কের চ্যানেলে। সোনি স্পোর্টস ৫ নামক চ্যানেলে দেখা যাবে খেলা। মোবাইলে খেলা দেখা যাবে সোনি লিভ নামক অ্যাপে। তবে এই খেলা দেখার জন্য অ্যাপটির গ্রাহক হতে হবে।