স্টিভ স্মিথ। —ফাইল চিত্র।
অ্যাশেজ সিরিজ়ের দ্বিতীয় টেস্টে নতুন কীর্তি গড়লেন অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ। বিশ্বের দ্বিতীয় দ্রুততম ব্যাটার হিসাবে টেস্ট ক্রিকেটে ৯০০০ রান পূর্ণ করলেন অস্ট্রেলিয়ার সহ-অধিনায়ক। ৯৯তম টেস্টে এই মাইলফলকে পৌঁছলেন স্মিথ।
সব ঠিক থাকলে অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্ট শততম টেস্ট ম্যাচ খেলবেন স্মিথ। তার আগে বুধবার লর্ডসে টেস্ট ক্রিকেটে নতুন মাইলফলকে পৌঁছলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক। বুধবার ৩১ রান করার সঙ্গে সঙ্গে টেস্টে ৯০০০ রান পূর্ণ করলেন তিনি। ১৭৪তম টেস্ট ইনিংসে এই কীর্তি গড়লেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের মধ্যে টেস্টে ৯০০০ রান পূর্ণ করার ক্ষেত্রে তিনিই দ্রুততম।
টেস্টে দ্রুততম ৯০০০ রান করার কৃতিত্ব রয়েছে কুমার সাঙ্গাকারার। শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অধিনায়ক ১৭২টি টেস্ট ইনিংসে এই মাইলফলকে পৌঁছেছিলেন। সেই হিসাবে স্মিথের দু’টি ইনিংস বেশি লাগল। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের মধ্যে স্মিথ টপকে গেলেন রিকি পন্টিংকে। তিনি ১৭৭টি টেস্ট ইনিংসে ৯০০০ রান করেছিলেন। সম সংখ্যক টেস্ট ইনিংসে এই মাইলফলক ছুঁয়ে ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ব্রায়ান লারাও। পন্টিং এবং লারার থেকে এই ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়। তিনি লাল বলের ক্রিকেটে ৯০০০ রান পূর্ণ করতে নিয়েছিলেন ১৭৬টি ইনিংস।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে এই মাইলফলকে স্পর্শ স্মিথের ক্রিকেটজীবনে বিশেষ প্রাপ্তি হয়ে থাকতে পারে। কারণ ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ় শুধু ব্যাট-বলের লড়াই নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সম্মান। জাত্যাভিমান। কারণ অ্যাশেজ সিরিজ়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। যা কিছুটা ব্যাঙ্গাত্মক। খানিকটা শোকেরও। ১৮৮২ সালে ওভালে আয়োজিত টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম হেরেছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ফ্রেড স্পফোর্থের অনবদ্য বোলিংয়ের কাছে হারতে হয়েছিল ইংরেজদের। চতুর্থ ইনিংসে ৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি তারা। স্পফোর্থ ৪৪ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। ০-১ ব্যবধানে সিরিজ় হেরে গিয়েছিল। পরের দিন ইংল্যান্ডের সংবাদ পত্র ‘দ্য স্পোর্টিং টাইমস্’ তাদের প্রতিবেদনে ক্রিকেট দলের তীব্র সমালোচনা করেছিল। লেখা হয়েছিল, ইংরেজ ক্রিকেটকে চিরস্মরণীয় করে রাখল ওভালের ২৯ আগস্ট, ১৮৮২ তারিখটি। গভীর দুঃখের সাথে বন্ধুরা তা মেনে নিয়েছে। ইংরেজ ক্রিকেটকে ভস্মীভূত করা হয়েছে এবং ছাইগুলো অস্ট্রেলিয়া উপহার হিসাবে নিয়ে গিয়েছে। এর পরের বছর সিরিজ় পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় যায় ইংল্যান্ড। সংবাদমাধ্যমের ব্যঙ্গ মনে রেখে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক আইভো ব্লাই বলেছিলেন, তাঁরা অ্যাশেজ পুণরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন।
সে সময় কয়েকজন অস্ট্রেলীয় মহিলা ব্লাইকে আগের সিরিজ়ে পরাজয় নিয়ে পাল্টা ব্যঙ্গ করে ছাই ভর্তি একটি পাত্র দিয়েছিলেন। যাতে ছিল উইকেটের উপরে থাকা বেলের ছাই। তার পর থেকে দু’দেশের টেস্ট সিরিজ় ‘অ্যাশেজ’ বলে পরিচিত হয়। ব্লাই অবশ্য ছাইয়ের সেই আধারটি ব্যক্তিগত উপহার হিসাবে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। বিজয়ী দলকে ট্রফি হিসাবে তা দেওয়া হত না তখন। ব্লাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী লর্ডসে এমসিসি জাদুঘরে সেই পাত্রটি দান করে দিয়েছিলেন।