ওভালে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের ইনিংসকে ভরসা দিল বেয়ারস্টো এবং রুটের ব্যাট। ছবি: আইসিসি।
অস্ট্রেলিয়ার থেকে ১২ রানে পিছিয়ে থেকে শনিবার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। সেই ১২ রানের ঘাটতি প্রথম ওভারেই পূরণ করে দিলেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি এবং বেন ডাকেট। তার পরেও একই রকম আগ্রাসী মেজাজে সারা দিন ব্যাট করলেন বেন স্টোকসেরা। ওভাল টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে তুলল ৯ উইকেটে ৩৮৯ রান। অস্ট্রেলিয়ার থেকে স্টোকসের দল এগিয়ে রইল ৩৭৭ রানে।
অ্যাশেজ সিরিজ়ের পঞ্চম টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষে স্বস্তিতে ইংল্যান্ড শিবির। স্টোকসদের বাজ়বল (ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলাচ্ছেন দলকে। যেহেতু তাঁর ডাকনাম ‘বাজ়’, ইংল্যান্ডের ক্রিকেটকে বাজ়বল বলা হচ্ছে।) ক্রিকেটের সামনে কিছুটা রক্ষণাত্মক দেখাল প্যাট কামিন্সদের রণনীতি। ওভার প্রতি প্রায় পাঁচ রান করে তুললেন ইংল্যান্ডের ব্যাটারেরা। স্টোকসদের ব্যাটিং থেকে পরিষ্কার, তাঁরা জিতেই মাঠ ছাড়তে চান। সিরিজ় হার বাঁচাতে হলে এ ছাড়া অবশ্য তাঁদের সামনে কোনও উপায়ও নেই। কারণ অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে রয়েছে ২-১ ব্যবধানে। ওভালে স্টোকসদের হার মানে ২০ বছর পর ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজ সিরিজ় জিতবে অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ২৮৩ রানের জবাবে শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছিল ২৯৫ রানে। শনিবার শুরু থেকেই ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। দুই ওপেনার প্রথম উইকেটের জুটিতে তুললেন ৭৯ রান। ডাকেটের ব্যাট থেকে এল ৫৫ বলে ৪২ রান। সাতটি চার মারলেন তিনি। ক্রলি ছিলেন তুলনায় বেশি আগ্রাসী। তিনি খেললেন ৭৬ বলে ৭৩ রানের ইনিংস। ন’টি চার এল তাঁর ব্যাট থেকে।
হ্যারি ব্রুক (৭) বাদে ইংল্যান্ডের প্রথম সারির সব ব্যাটারই রান পেলেন। ফলে তৈরি হল একাধিক কার্যকর জুটি। বজায় থাকল রান তোলার গতি। তিন নম্বরে নেমে অধিনায়ক স্টোকস করলেন ৪২ রান। তাঁর ৬৭ বলের ইনিংসে রয়েছে তিনটি চার এবং একটি ছক্কা। ওভাল টেস্টের তৃতীয় দিন ইংল্যান্ডের ইনিংসের মূল চালিকা শক্তি ছিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক জো রুট। কাছাকাছি পৌঁছেও শতরান পেলেন না তিনি। খেললেন ১০৬ বলে ৯১ রানের ইনিংস। ১১টি চার এবং একটি ছক্কা মারলেন তিনি। উইকেটের এক প্রান্তের দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করলেন। নিয়ন্ত্রিত ঝুঁকি নিলেন। ভাল রান পেলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার জনি বেয়ারস্টোও। তিনি করলেন ৭৮ রান। ১০৩ বলের ইনিংসটি তিনি সাজালেন ১১টি চার দিয়ে।
বেয়ারস্টো আউট হওয়ার পর ইংল্যান্ডের ইনিংস অবশ্য আর বেশি এগোল না। ইংল্যান্ডের রান তোলার গতিও কমে যায় বেশ খানিকটা। বেয়ারস্টো সাজঘরে ফেরার পর ইংল্যান্ডের ইনিংসের ভরসা ছিলেন মইন আলি। তিনি ২৯ রান করে আউট হলেন মিচেল স্টার্কের বলে। উডকে (৯) সাজঘরে ফেরালেন টড মার্ফি। শেষ বেলায় চালিয়ে ব্যাট করলেন জেমস অ্যান্ডারসন (অপরাজিত ৮) এবং স্টুয়ার্ট ব্রডও (অপরাজিত ২)।
অস্ট্রেলিয়ার কোনও বোলারই ইংরেজ ব্যাটারদের তেমন সমস্যায় ফেলতে পারলেন না দ্বিতীয় ইনিংসে। বরং, স্টোকসদের বাজ়বল ক্রিকেটের সামনে কখনও কখনও কিছুটা হতাশ দেখাচ্ছিল কামিন্সদের। অস্ট্রেলীয় বোলারদের সফলতম স্টার্ক। তিনি চার উইকেট নিলেন ৯৪ রান খরচ করে। ১১০ রান দিয়ে তিন উইকেট টড মার্ফির। একটি করে উইকেট পেলেন জশ হ্যাজলউড এবং প্যাট কামিন্স।