বুধবার ওয়াংখেড়েতে অনুষ্কা এবং সারা। ছবি: সংগৃহীত।
কখনও উদ্বেগ, কখনও উচ্ছ্বাস। আবার কখনও চুম্বন। ওয়াংখেড়ের গ্যালারিতে নানা রঙে ধরা দিলেন অনুষ্কা শর্মা। এক দিনের ক্রিকেটে বিরাট কোহলির ৫০তম শতরানের ইনিংসের রং যে ভাবে বদলালো, সে ভাবেই বদলালো বলিউড অভিনেত্রীর অভিব্যক্তি। কোহলির মঞ্চে নজর কাড়লেন সারা তেন্ডুলকরও।
তখন সবে ক্রিজে নেমেছেন কোহলি। নবম ওভারের খেলা চলছে। টিম সাউদির চতুর্থ বলটাই আছড়ে পড়ল প্যাডে। কিউয়ি ক্রিকেটারেরা সমবেত স্বরে চিৎকার করলেন। আম্পায়ার তাতে কর্ণপাত না করলেও ওয়াংখেড়েতে তখন চুপ। নিউ জ়িল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ডিআরএস নিলেন। স্নিকোমিটারে দেখা গেল, বল আগে লেগেছে কোহলির ব্যাটে। ক্যামেরা ধরল অনুষ্কাকে। হাত দিয়ে মুখ ঢেকে হতাশ হয়ে বসেছিলেন। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতে হাঁফ ছাড়লেন। হাততালি দিয়ে সমর্থন জানালেন কোহলিকে।
একটা সময় ফর্মে ছিলেন না কোহলি। সে সময় তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়ার দাবিও উঠতে শুরু করেছিল। ভারতীয় দল অবশ্য ধারাবাহিক ভাবে তাঁর উপর আস্থা রেখেছিল। জাতীয় নির্বাচকেরাও কোহলিকে বাদ দেওয়ার কথা ভাবেননি। সেই আস্থা, ভরসার মর্যাদা দিচ্ছেন কোহলি। ফর্মে ফেরা কোহলি আরও বেশি পরিণত। নিজের ইনিংসকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন। খেলার পরিস্থিতি বুঝে ইনিংসের গতি বাড়াচ্ছেন বা কমাচ্ছেন।
বুধবার বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধেও কোহলি শতরানের ইনিংস খেললেন নিজের মেজাজে। সেই মেজাজই রং ধরাল ভিআইপি বক্সে বসে থাকা অনুষ্কার মুখে। স্বামীর প্রতিটি ভাল শটে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। হাততালি দিয়েছেন। কোহলি ছয় মারলে দেখার চেষ্টা করেছেন, কোথায় গিয়ে পড়ছে বল। আবার ব্যক্তিগত ৯২ রানের মাথায় কোহলির মুখে যখন পায়ে টান লাগার যন্ত্রণা ফুটে উঠেছে, তখন উদ্বেগ ধরা পড়েছে অনুষ্কার মুখে। ৯৭ রান করা কোহলি খুচরো রান নিতে গিয়ে পড়ে গেলেন মাঠে। হাততালি দিতে থাকা অনুষ্কা আঁতকে উঠলেন। বড় চোট না লাগায় দুই হাত জোড় করে ঈশ্বরকে প্রণাম করতেও দেখা গেল তাঁকে। সেরা মুহূর্তটা অবশ্য এল কোহলির ৫০তম শতরান পূর্ণ হওয়ার পর। গ্যালারির দূরত্ব থেকেই স্বামীকে চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দিলেন অভিনেত্রী। মাঠ থেকে স্ত্রীর ভালবাসার জবাব দিলেন কোহলিও।
অনুষ্কা নজর কাড়লেন। আড়ালে থাকলেন না সারাও। সচিন-কন্যাকে এদিন অবশ্য খুব বেশি দেখা গেল না টেলিভিশনের পর্দায়। ভারতের ইনিংসের ১৩তম ওভারে শুভমন গিল একটি চার মারার পরেই টেলিভিশনের পর্দায় ভেসে উঠলেন সারা। সাদা জামায় উজ্জ্বল সচিন-কন্যা হাততালি দিচ্ছিলেন। ততটা উচ্ছ্বাস ছিল না। কিছুটা সংযত। শুভমন পায়ের টানের জন্য ৬৫ বলে ৭৯ রান করে মাঠ ছাড়ার পরেও দর্শকদের চোখ সারাকে খুঁজেছে। টেলিভিশনের পর্দায় আর তাঁকে দেখা যায়নি। সচিন-কন্যা কি সে সময় কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন? জানা যায়নি।
যেমন পড়া যায়নি সচিনের চোখ (রোদ চশমায় ঢাকা ছিল)। কোহলির মঞ্চে যে তিনিই বিরাট।