India vs England 2024

বাবার স্বপ্ন পূরণ করে তৃপ্ত আকাশ, উৎসর্গ করলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম দিন

প্রথম দিনই বল হাতে নজর কেড়েছেন আকাশ। দিনের খেলা শেষে জানালেন কোচ দ্রাবিড় এবং বুমরা কী পরামর্শ দিয়েছেন। শামি এবং রাবাডাকে দেখেই তাঁর বেড়ে ওঠা। শুনিয়েছেন সেই কাহিনিও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫৫
Share:

প্রথম টেস্ট উইকেট পাওয়ার উচ্ছ্বাস আকাশ দীপের। ছবি: বিসিসিআই।

ভারতের হয়ে টেস্ট খেলার স্বপ্ন পূরণ হল বাংলার আকাশ দীপের। রাঁচীতে প্রথম ঘণ্টাতেই ইংল্যান্ডের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে নজর কেড়ে নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবনের শুরুতেই এই সাফল্য আকাশ উৎসর্গ করলেন তাঁর প্রয়াত বাবা রামজি সিংহকে।

Advertisement

শুক্রবার রাঁচীতে মা-সহ পরিবারের অন্যরা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না আকাশের বাবা এবং বড় দাদা। ন’বছর আগে ছ’মাসের ব্যবধানে বাবাকে হারিয়েছেন আকাশ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের মুহূর্তে বাবার কথাই বেশি মনে পড়েছে ২৭ বছরের ক্রিকেটারের। খেলা শেষ হওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠকে আকাশ বলেছেন, ‘‘বাবা চেয়েছিলেন, আমি যেন জীবনে কিছু করে দেখাতে পারি। এক বছরের মধ্যে বাবা এবং দাদাকে হারানোর পর ঠিক করেছিলাম, কিছু একটা করতেই হবে। আরও মন দিয়ে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছিলাম। সে সময় আমার হারানোর মতো কিছু ছিল না। জেতার জন্য অনেক কিছু ছিল।’’ এর পর আকাশ বলেছেন, ‘‘দেশের হয়ে টেস্ট খেলার মুহূর্তটা বাবাকে উৎসর্গ করছি। বাবা ভীষণ ভাবে চেয়েছিলেন, জীবনে যেন কিছু একটা করতে পারি। আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন বাবা। তেমন কিছুই করতে পারিনি বাবার জন্য। তাই এই পারফরম্যান্সটা বাবাকেই উৎসর্গ করছি।’’

লাল বলের ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখতে পেরে খুশি আকাশ। তিনি বলেছেন, ‘‘সব ক্রিকেটারের একটাই স্বপ্ন থাকে— দেশের হয়ে টেস্ট খেলার। আমারও ছিল। ছোট বয়সে জানতামই না ক্রিকেট কী। আমাদের গ্রামে কেউ ক্রিকেট খেলে না। ২০০৭ সালে প্রথম টেনিস বলে ক্রিকেট খেলেছি। ২০১৬ সাল থেকে আসল ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছি। প্রথম দিন থেকে মহম্মদ শামি আর কাগিসো রাবাডাকে অনুসরণ করেছি। এমন একটা জায়গায় টেস্ট ক্যাপ পেলাম, যেটা আমার গ্রাম থেকে খুব দূরে নয়। বাংলার হয়ে খেলি। সেখান থেকেও বেশি দূরে নয়। আমার ক্রিকেটজীবনে সব সময় বাংলাকে পাশে পেয়েছি। পাশে পেয়েছি আমার পরিবারকেও।’’ পরিবার নিয়ে আকাশ বলেছেন, ‘‘পরিবারের সবাই রাঁচীতে এসেছেন। অস্বীকার করব না, দিনটা আমার কাছে বিশেষ আবেগের। তবু মাথায় শুধু একটাই চিন্তা ছিল— দলের জন্য সেরা পারফরম্যান্স করতে হবে।’’

Advertisement

ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড় টেস্ট ক্যাপ তুলে দিয়েছেন আকাশ। কোচের হাত থেকে টুপি পেয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলার ক্রিকেটার। ২৭ বছরের জোরে বোলার বলেছেন, ‘‘আমার জীবনের গল্প শুনেছেন রাহুল স্যর। সেই সময় খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। কোচ বলেছিলেন, অতিরিক্ত কিছু চেষ্টা করার দরকার নেই। এত দিন যেটা করেছি, সেটাই ভাল করে করার চেষ্টা করতে বলেছিলেন কোচ। এই পর্যায় এ রকম পরামর্শ খুব কাজে দেয়। প্রথম বার খেলতে নামা যে কেউ বিভ্রান্ত হতে পারে, কী করা উচিত বুঝতে না পেরে।’’

চতুর্থ টেস্টে যশপ্রীত বুমরাকে বিশ্রাম দিয়েছে ভারত। তাঁর জায়গাতেই প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েছেন আকাশ। শিবির ছাড়ার আগে আকাশকে কিছু পরামর্শ দিয়ে গিয়েছিলেন বুমরা। সেই পরামর্শ মাথায় রেখেই সাফল্য পেয়েছেন আকাশ। তিনি বলেছেন, ‘‘বুমরা ভাই বলেছিলেন, স্বাভাবিক লেংথের থেকে একটু খাটো লেংথে বল রাখতে। কারণ আন্তর্জাতিক পর্যায় ব্যাটারেরা চেষ্টা করে আক্রমণ করার। বুমরা ভাইয়ের কথা মাথায় রেখেছিলাম। লাইন এবং লেংথের উপর গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলেছিলেন আমাকে। সেই মতো বল করার চেষ্টা করেছি।’’ রাঁচী টেস্টের প্রথম দিন ৭০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন আকাশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement