স্মিথ আউট কি না তা নিয়ে চলছে আলোচনা। ছবি: রয়টার্স।
দুই ইনিংসে দুই ইংরেজ ক্রিকেটারের ভুল। তার জেরেই অ্যাশেজ়ের পঞ্চম টেস্টে দু’বার প্রাণ ফিরে পেলেন স্টিভ স্মিথ। প্রথম ইনিংসে জনি বেয়ারস্টো খলনায়ক হলে, দ্বিতীয় ইনিংসে খলনায়ক বেন স্টোকস। সোমবার স্মিথের গ্লাভসে বল লাগার পর স্টোকস ভাল ক্যাচ নিলেও, উত্তেজনার বশে তাঁর হাত থেকে বল পড়ে যায়। ডিআরএস নিলেও লাভ হয়নি।
কী হয়েছিল পঞ্চম দিন?
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে শেষ ওভারে বল করতে আসেন মইন আলি। প্রথম বলেই সামনে এগিয়ে খেলতে যান স্মিথ। লাফানো বল স্মিথের গ্লাভসে লেগে চলে যায় লেগ স্লিপে। স্টোকসের মাথার উপর দিয়ে সেই বল বেরিয়ে যাচ্ছিল। ইংরেজ অধিনায়ক লাফিয়ে এক হাতে ক্যাচটি ধরেন। কিন্তু হাত নামানোর সময় পায়ে ধাক্কা লেগে বলটি হাত থেকে ফসকে গিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে স্টোকস মাথা নীচু করে ফেলেন। বুঝতে পেরেছিলেন কোথায় ভুল হয়েছে। মাঠের আম্পায়ারও আউট দেননি।
সতীর্থেরা অবশ্য এত সহজে হাল ছাড়তে রাজি ছিলেন না। তাঁরা স্টোকসকে ডিআরএস নেওয়ার জন্যে জোরাজুরি করতে থাকেন। বাধ্য হয়ে নির্ধারিত সময়ের এক সেকেন্ড আগে স্টোকস রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত নেন। রিভিউয়ে স্পষ্ট দেখা যায় বল স্মিথের গ্লাভসে লেগেছে। কিন্তু স্টোকসের হাত থেকে বল পড়ে যাওয়ার কারণেই ক্যাচ হিসাবে এটিকে স্বীকৃতি দেননি ভারতীয় আম্পায়ার নীতীন মেনন। মাঠের আম্পায়ারকে তিনি নির্দেশ দেন স্মিথকে ‘নট আউট’ দেওয়ার জন্যে।
এই টেস্টেরই দ্বিতীয় দিনে একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ৭৮তম ওভার চলছিল তখন। ক্রিস ওকসের বল মিড অনে ঠেলে দু’রান নিতে গিয়েছিলেন স্মিথ। ডিপ মিড অনে থাকা ইংল্যান্ডের পরিবর্ত ফিল্ডার ছুটে এসে বল উইকেটকিপার জনি বেয়ারস্টোর উদ্দেশে ছুড়ে দিয়েছিলেন। স্মিথ বলের দিকে তাকিয়েছিলেন। ফলে তাঁর দৌড়ের গতি কিছুটা কমে গিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে পড়িমড়ি করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। লেগ আম্পায়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তিনি রিভিউ চেয়েছিলেন তৃতীয় আম্পায়ার নীতীনের কাছে।
রিভিউ এক ঝলক দেখে মনে হয়েছিল স্মিথ আউট। কারণ তাঁর ব্যাট ক্রিজ় পেরনোর আগেই স্টাম্প ভেঙে দিয়েছিলেন বেয়ারস্টো। সরকারি ভাবে তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা না হলেও ইংরেজ ক্রিকেটারেরা তখন মাঠে উল্লাস শুরু করে দিয়েছিলেন। মাথা নাড়তে নাড়তে সাজঘরের দিকে ফিরছিলেন স্মিথও। কিন্তু নাটকের তখনও বাকি ছিল।
নীতীন বেশ কয়েক বার দু’টি ক্যামেরার সাহায্যে ঘটনাটি খুঁটিয়ে দেখেছিলেন। তাতে স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল, স্মিথের ব্যাট ক্রিজ ছোঁয়ার আগেই বেয়ারস্টো গ্লাভস দিয়ে স্টাম্পে আঘাত করেছিলেন। যে হেতু আগেই তাঁর গ্লাভস উইকেটে লেগেছিল, তাই স্মিথকে আউট করতে হলে স্টাম্প থেকে বেলকে আলাদা করতে হত। বেয়ারস্টো সেই কাজটি করার আগেই ক্রিজে ঢুকে পড়েছিলেন স্মিথ। ফলে যেহেতু আইনত তাঁকে আউট দেওয়া যায় না, তাই স্মিথকে ‘নট আউট’ ঘোষণা করেন নীতীন।