চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে ম্যাচের চতুর্থ দিন ফিল্ডিং করার সময় দলের ম্যানেজার ধর্মেন্দ্র আরোথে বিষ্ণুকে সাজঘরে ডেকে পাঠান। সেখানে তাঁকে বাবার মৃত্যুর খবর জানানো হয়। দলের বাকিরা তখনও কিছু জানতেন না। পরে তাঁরা সবটা জানতে পারেন।
পর পর দুঃখের খবর ক্রিকেটারের পরিবারে ছবি: টুইটার
সদ্যোজাত কন্যার মৃত্যু তাঁকে টলাতে পারেনি। সৎকার করে এসে কটকে চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে শতরান করেছিলেন বরোদার বিষ্ণু সোলাঙ্কি। সেই ম্যাচেই পরের দিন পেলেন বাবার মৃত্যুসংবাদ। বাড়ি ফেরার সুযোগ থাকলেও ফেরেননি। সাজঘরে বসে মোবাইলেই বাবার শেষকৃত্য দেখেছেন বিষ্ণু। গত কয়েক দিনে তাঁর জীবনের সব থেকে কাছের দু’জন চলে গিয়েছেন। তার পরেও ক্রিকেট নিয়ে অবিচল বিষ্ণু।
রঞ্জি ট্রফিতে চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে ম্যাচের চতুর্থ দিন ফিল্ডিং করার সময় দলের ম্যানেজার ধর্মেন্দ্র আরোথে বিষ্ণুকে সাজঘরে ডেকে পাঠান। সেখানে তাঁকে বাবার মৃত্যুর খবর জানানো হয়। দলের বাকিরা তখনও কিছু জানতেন না। পরে তাঁরা সবটা জানতে পারেন। দলের অধিনায়ক কেদার দেওধর বলেন, ‘‘সাজঘরের এক কোণে দাঁড়িয়ে বাবার শেষকৃত্য দেখে বিষ্ণু। ওর জন্য খুব কঠিন মুহূর্ত ছিল। তবে ও যে সাহস দেখিয়েছে তাকে কুর্নিশ জানাই।’’
এই পরিস্থিতিতে বিষ্ণুর পাশে দাঁড়িয়েছে বরোদা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। সচিব অজিত লেলে বলেন, ‘‘আমরা খবরটা পেয়ে দলের ম্যানেজারকে সেটা জানাই। বলা হয় বিষ্ণু চাইলে বাড়ি ফিরতে পারে। কিন্তু ম্যানেজার আমাদের জানান, বিষ্ণু দলের সঙ্গেই থাকবে বলে ঠিক করেছে। ক্রিকেটের প্রতি ওর দায়বদ্ধতা বাকিদের শেখা উচিত।’’
অধিনায়ক দেওধর বলেন, ‘‘গত দু’মাস ধরে অসুস্থ ছিলেন বিষ্ণুর বাবা। হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। মৃত্যুর পরে বেশি ক্ষণ দেহ ফেলে রাখা যেত না। তাই বিষ্ণু চাইলেও শেষকৃত্যের আগে বাড়ি পোঁছতে পারতেন না। বিষ্ণুর দাদা শেষকৃত্য করে। এই পরিস্থিতিতে ও কী ভাবে ক্রিকেট খেলল সেটাই আমাদের অবাক করছে।’’
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিষ্ণু খবর পান তাঁর মেয়ে হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা যায় সদ্যোজাত। সেই সময় ভুবনেশ্বরে দলের সঙ্গে ছিলেন বিষ্ণু। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ফিরে যান। তিন দিনের মধ্যে ফিরে এসে দলে যোগ দেন বিষ্ণু। বাংলার বিরুদ্ধে ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ম্যাচ ছিল বরোদার। সেই ম্যাচে খেলেননি বিষ্ণু। পাঁচ দিন নিভৃতবাসে থাকতে হয় তাঁকে। বরোদার পরের ম্যাচে চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেই শতরান করেন তিনি।