আনন্দবাজার পত্রিকার বার্ষিক ক্রিকেটে তিনটি ম্যাচে অংশগ্রহণকারী ক্রিকেটাররা। —নিজস্ব চিত্র
প্রতি বছরের মতো এ বছরও আনন্দবাজার পত্রিকার বার্ষিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হল। রবিবার তালতলা মাঠে মোট তিনটি ম্যাচ হল। তার মধ্যে দু’টি পুরুষদের ও একটি মহিলাদের। প্রতিটি ম্যাচেরই ফয়সালা হয়েছে প্রবল উত্তেজনায়। তিনটি ম্যাচ ঘিরেই আগ্রহ ছিল দেখার মতো।
হকস বনাম ঈগলস ম্যাচের একটি মুহূর্ত। —নিজস্ব চিত্র
প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ‘হকস’ ও ‘ঈগলস’। প্রথমে ব্যাট করে ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১১০ রান করে ঈগলস। তাদের হয়ে সর্বাধিক রান করেন স্নেহাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। মাত্র ২১ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। মারেন ৬টি চার ও ৪টি ছক্কা। ১৬ রান অতিরিক্ত দেন হকসের বোলারেরা। হকসের হয়ে ২টি উইকেট নেন কুমার নটরাজন। অধিনায়ক অনিরুদ্ধ বসু ও শুভাশিস বসাক ১টি করে উইকেট নেন।
বিপক্ষ ব্যাটারকে আউট করে উল্লাস। —নিজস্ব চিত্র
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খুব একটা ভাল না করলেও শেষ দিকে লড়াই করে হকস। সৌমেন দাস ১৮ বলে ২৬ রান করেন। নটরাজন ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষ দিকে বল করতে সমস্যায় পড়ে ঈগলস। অতিরিক্ত হিসাবে ৩৪ রান দেয় তারা। তার পরেও অবশ্য ম্যাচ জিততে পারেনি হকস। ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১০২ রানে শেষ হয় তাদের ইনিংস। ৮ রানে ম্যাচ জেতে ঈগলস। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন স্নেহাশিস।
ম্যাচে লড়াই ছিল সমানে সমানে। —নিজস্ব চিত্র
দ্বিতীয় খেলাটি ছিল মহিলাদের। ‘হোয়েলস’ বনাম ‘শার্কস’-এর খেলায় বেশি রান হয়নি। কিন্তু তার মাঝেই উত্তেজনা ছিল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৮ রান করে হোয়েলস। পবিত্রা থাপা সর্বাধিক ১৬ রান করেন। শার্কসের হয়ে ২টি উইকেট নেন তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়। ১টি করে উইকেট নেন অধিনায়ক কোয়েনা দাশগুপ্ত, রিমা মুখোপাধ্যায় ও পৃথা বসু।
হোয়েলস বনাম শার্কস ম্যাচের একটি মুহূর্ত। —নিজস্ব চিত্র
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দেবস্মিতা ভট্টাচার্যের ব্যাটে ভর করে ম্যাচ জেতে শার্কস। ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন দেবস্মিতা। অতিরিক্ত ৭ রান দেয় হোয়েলস। এই অতিরিক্ত রান তাদের আরও সমস্যায় ফেলে। তাদের হয়ে দেবারতি ঘোষ ১টি উইকেট নেন। আনন্দবাজার অনলাইনের কমলিকা ভট্টাচার্য (১.৫ ওভারে ৬) ও প্রচেতা পাঁজা (১ ওভারে ৫) কৃপণ বোলিং করলেও উইকেট পাননি। ৮ উইকেট ম্যাচ জেতে শার্কস। সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পান দেবস্মিতা।
ম্যাচের লড়াই শেষে এক ফ্রেমে হোয়েলস ও শার্কস দু’দল। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিযোগিতার শেষ ম্যাচ ছিল ‘লায়ন্স’ ও ‘টাইগার্স’-এর মধ্যে। প্রথমে ব্যাট করে ১০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৮১ রান করে লায়ন্স। তাদের হয়ে মৈনাক দাশগুপ্ত ২৩ ও অধিনায়ক কৌশিক পাল ১৯ রান করেন। অতিরিক্ত হিসাবে ১৪ রান দেন টাইগার্সের বোলারেরা। তাদের হয়ে সম্রাট মণ্ডল ৩টি এবং রাকেশ, বাণীব্রত মুখোপাধ্যায় ও তুহিন ভদ্র ১টি করে উইকেট নেন।
তিন ম্যাচের তিন সেরা। (বাঁ দিক থেকে) সম্রাট মণ্ডল, দেবস্মিতা ভট্টাচার্য ও স্নেহাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
জবাবে ব্যাট করতে নেমে তিন বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটে ম্যাচ জেতে টাইগার্স। তাদের হয়ে রাকেশ ২৪ ও অভিষেক রায় ২০ রান করেন। একটা সময় মনে হচ্ছিল, সহজে ম্যাচ জিতে যাবে টাইগার্স। কিন্তু লড়াই ছাড়েনি লায়ন্স। তাদের হয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের সৌরভ পাল ২টি উইকেট নেন। মৈনাক মৈত্র ও ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত ১টি করে উইকেট নেন। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১ রান। ভাল লড়াই করেন টেলিগ্রাফ অনলাইনের শুভরূপ দাসশর্মা। প্রথম তিন বলে রান দেননি তিনি। কিন্তু চতুর্থ বল নো হওয়ায় ম্যাচ জিতে যায় টাইগার্স। ম্যাচের সেরা হন সম্রাট।