শুভমন গিল। ছবি: পিটিআই।
শনিবার বিকেল পর্যন্ত কেউ যদি বলতেন ভারত হেরে যাবে, তাহলে হয়তো অনেকেই তাঁকে বিদ্রুপ করতেন। কিন্তু রবিবার ভারতের মাটিতে আরও একটি টেস্ট জিতে নিল ইংল্যান্ড। রোহিত শর্মাদের ব্যাটিংয়ের ফাঁকফোকরগুলি বড় করে দেখিয়ে দিয়ে গেলেন জ্যাক লিচ, টম হার্টলিরা। ভারতের হারের পিছনে রয়েছে আরও অনেক কারণ। দেখে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী।
অলি পোপের ইনিংস
হায়দরাবাদের পিচে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ব্যাটারেরা থিতু হতে পারেননি। বেন স্টোকসের ৭০ রানের ইনিংস বাদ দিলে সে ভাবে রান পাননি কেউ। অলি পোপ করেছিলেন মাত্র ১ রান। তিনিই দ্বিতীয় ইনিংসে ১৯৬ রান করে গেলেন। ভারতীয় ফিল্ডারের পোপের তিনটি সহজ ক্যাচ ফেলেছেন। সেটা না হলে হয়তো আরও আগে পোপকে থামিয়ে দেওয়া যেত। তা বলে পোপের ইনিংসকে ছোট করা যাবে না। ভারতের মাটিতে স্পিনের বিরুদ্ধে ইংরেজদের খেলা অন্যতম সেরা ইনিংসগুলির মধ্যে থাকবে পোপের ১৯৬। কোনও স্পিনার নয় পোপ আউট হয়ে যান যশপ্রীত বুমরার বলে। কিন্তু শনিবারের শেষ সেশন এবং রবিবার সকালে পোপ না থাকলে ইংল্যান্ড এত রানের লিড নিতে পারত না।
বেন স্টোকসের করা রান আউট
রবিবার স্টোকস গুরুত্বপূর্ণ রান আউটটি করে যান। রবীন্দ্র জাডেজার দোষ ছিল। তিনি মিড অনে স্টোকস দাঁড়িয়ে রয়েছেন দেখেও সে দিকে বল মেরে রান নিতে যান। ক্রিজ়ে পৌঁছানোর আগেই উইকেট ভেঙে দেন স্টোকস। ভারতের ইনিংস গড়ার কাজে বড় ধাক্কা ছিল সেই রান আউট। জাডেজা যখন আউট হন, ভারতের তখন জয়ের জন্য ১১২ রান প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ওই রান আউটটাই ম্যাচের রং পাল্টে দেয়।
শুভমন গিলের ব্যর্থতা
ভারতের তিন নম্বর ব্যাটারের কাজ ইনিংসটা ধরে রাখা। চার নম্বরে বিরাট কোহলি থাকলে অনেক সময় তিন নম্বর ব্যাটারের ব্যর্থতা ঢেকে দেন। কিন্তু তিনি না থাকলে শুভমনের রান পাওয়াটা বড় কারণ হয়ে দেখা যায়। যশস্বী জয়সওয়ালকে ওপেনার করে তিন নম্বরে খেলানো হচ্ছে শুভমনকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই জায়গায় ব্যাট করতে নেমে বড় রান পাননি তিনি। টেস্টে তিন নম্বর জায়গার চাপ রাহুল দ্রাবিড় জানেন। দ্রুত যদি শুভমনকে সেই জায়গার জন্য তৈরি না করতে পারেন, তাহলে লাল বলের ক্রিকেটে ভুগতে হবে ভারতকে।
দ্বিতীয় ইনিংসে টম হার্টলি
ভারতের বিরুদ্ধে অভিষেক হল ইংরেজ স্পিনার টম হার্টলির। প্রথম ইনিংসে তিনি সে ভাবে ছাপ ফেলতে পারেননি। বেন স্টোকস নতুন বল তুলে দিয়েছিলেন তাঁর হাতে। কিন্তু ২৫ ওভারে ১৩১ রান দিয়ে ফেলেছিলেন তরুণ স্পিনার। শুভমন গিল এবং লোকেশ রাহুলের উইকেট নিলেও সেই ইনিংসে খুব একটা ভরসা দিতে পারেননি দলকে। ছবিটা পাল্টে যায় দ্বিতীয় ইনিংসে। ৬ উইকেট নিয়ে চলে যান তিনি। ভারতের ইনিংসের শুরুতে উইকেট নিলেন। আউট করলেন যশস্বী, শুভমন এবং রোহিতকে। মাঝের দিকে তুলে নিলেন অক্ষর পটেলের উইকেট। শেষ বেলায় অশ্বিন এবং শ্রীকর ভরতের জুটিটাও ভাঙলেন হার্টলিই। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় ব্যাটারদের বিপদে ফেললেন তরুণ স্পিনারই।
মহম্মদ সিরাজের ব্যর্থতা
বোলারদের মধ্যে সিরাজই একমাত্র কোনও উইকেট পাননি। প্রথম ইনিংসে সিরাজকে দিয়ে চার ওভারের বেশি করাতে পারেননি রোহিত। সেই চার ওভারে ২৮ রান দেন সিরাজ। দ্বিতীয় ইনিংসে যশপ্রীত বুমরা ৪ উইকেট তুলে নেন। কিন্তু সিরাজকে বল দেওয়াই যাচ্ছিল না। তিনি ৭ ওভারে ২২ রান দেন। কোনও উইকেট নেই সেই ইনিংসেও। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট হারের জন্য সিরাজের উইকেট না পাওয়াও বড় কারণ। শেষ বেলায় ক্রিজ় ছেড়ে এগিয়ে এসে আউট হওয়াও একটি কারণ।