মুকেশ কুমার।
রঞ্জি ট্রফিতে বাংলাকে ফাইনালে তোলার নেপথ্যে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ১০ ম্যাচে বাংলার মিডিয়াম পেসারের উইকেটসংখ্যা ৩২। পাঁচ উইকেট পেয়েছেন এক বার। ছোটবেলা থেকেই খুব কষ্ট করে মানুষ হয়েছেন। বাবা ট্যাক্সিচালক, বিহারের গোপালগঞ্জ থেকে ছেলেকে কলকাতায় এনেছিলেন অনেক স্বপ্ন নিয়ে। তাঁর বাবা বেঁচে নেই। কিন্তু বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে তিনিই এখন অন্যতম জনপ্রিয়। তিনি মুকেশ কুমার। বর্তমানে তিনি গোপালগঞ্জের বাড়িতে স্বেচ্ছাবন্দি।
কিন্তু কলকাতা আসার কথা ছিল ৩০ মার্চ। এখন থেকেই প্রাক মরসুম ট্রেনিং শুরু করার পরিকল্পনায়। সোমবার বিকেল থেকে ভারতের বেশ কিছু সদর লকডাউনের সিদ্ধান্তের পর থেকে তিনি হতাশ। ট্রেন চলাচল বন্ধ ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কী করে কলকাতা ফিরবেন মুকেশ? গোপালগঞ্জ থেকে পটনাই বা আসবেন কী করে?
আনন্দবাজারকে ফোনে মুকেশ বলছিলেন, ‘‘রঞ্জি ট্রফি শেষে বাড়ি এসেছিলাম কয়েক দিন বিশ্রামের জন্য। ভেবেছিলাম ৩০ মার্চ কলকাতা ফিরে যাব। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর। কোনও ভাবেই কলকাতা ফেরার সুযোগ নেই। এমনকি আমার গ্রাম থেকে পটনা পৌঁছতে লাগে দু’ঘণ্টা। সেখানেও যাওয়ার উপায় নেই।’’
প্রত্যেক দিন বাড়িতেই কাটাচ্ছেন মুকেশ। কী করছেন? ‘‘ক্ষেতে বসে থাকছি। বই পড়ছি। আর অরিজিৎ সিংহের গানে ডুবে আছি। মাঝে মধ্যে নিজের ভিডিয়ো গুলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছি।’’ কোন ম্যাচের উপরে নজর রাখছেন? ‘‘ইডেনে কর্নাটকের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ইনিংসটা দেখছি। কী ভাবে করুণ নায়ার, মণীশ পাণ্ডেকে আউট করেছি, সেই স্মৃতি এখনও তরতাজা। গৃহবন্দি থেকে সেগুলোই আমাকে বাড়তি প্রেরণা দিচ্ছে।’’
ট্রেনিং করার তো জায়গা পাচ্ছে না। কী ভাবে নিজেকে ফিট রাখছেন? মুকেশ বলছিলেন, ‘‘বাড়ির মধ্যেই যতটা শারীরচর্চা করা যায়, ততটাই চেষ্টা করছি। কোনও ভাবেই বাইরে বেরোতে চাই না। ক্রিকেটের চেয়েও জীবন আগে।’’