Coronavirus

পোষ্যের সঙ্গে মেতে অরুণ, গানে ডুবে অনুষ্টুপ

এত দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরে একটু বেশিই ঘুমোচ্ছেন বাংলার ক্রিকেটারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ০৪:০৯
Share:

বিশ্রাম: ক্রিকেট থেকে দূরে অরুণ। ফাইল চিত্র

করোনা আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরনো বন্ধ। স্থগিত অফ-সিজন ট্রেনিং। সঙ্গী পরিবারের সদস্যেরা। মরসুম চলাকালীন বাংলার ক্রিকেটারেরা যা করতে পারেননি, মরসুম শেষে সেটাই চলছে জোরকদমে। গিটার বাজিয়ে গান গাওয়ার সময় পেতেন না অনুষ্টুপ মজুমদার। স্বেচ্ছাবন্দি থেকে সঙ্গীত চর্চায় মগ্ন তিনি। বইও ঘাঁটছেন মাঝেমধ্যে। স্ত্রী সুস্মিতার সঙ্গে ঘর সাজাতে ব্যস্ত মনোজ তিওয়ারি। আকাশ দীপ ডুবে মায়ের হাতে তৈরি রেওয়াজি খাসি ও দেশি মুরগির ঝোল খেতে। ব্যতিক্রম অরুণ লাল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফার্ম হাউসে তিনি দিব্বি খেলছেন পোষ্যের সঙ্গে।

Advertisement

এত দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরে একটু বেশিই ঘুমোচ্ছেন বাংলার ক্রিকেটারেরা। আনন্দবাজারকে ফোনে অনুষ্টুপ বলছিলেন, “রঞ্জি ট্রফির নক-আউট পর্বে ওঠার পর থেকে সে ভাবে ঘুম হয়নি। এখন সেই ঘুম পুষিয়ে নিচ্ছি। তা ছাড়া ছেলের সঙ্গে বাড়িতেই চলছে ক্রিকেট। সন্ধ্যার পরে কখনও গিটার নিয়ে বসছি। কখনও আবার বই পড়েও সময় কাটছে।” গড়িয়ার বাড়ি ছেড়ে এই মুহূর্তে চন্দননগরের বাড়িতেই আছেন অনুষ্টুপ। বলছিলেন, “করোনাভাইরাস এখনও এখানে আসতে পারেনি। তাই এখানে চলে এলাম। যতটা সম্ভব শহরের বাইরে থাকা ভাল।”

বাংলা দলের কোচ অরুণ লালও সেই দর্শনে বিশ্বাসী। বলছিলেন, “আমি ষাটোর্ধ্ব। ফলে আতঙ্ক সব চেয়ে বেশি। তাই কলকাতা থেকে অনেকটা দূরে রয়েছি। ফার্ম হাউসের পরিবেশ মন ভাল করে দেওয়ার মতো। এখানে খোলামেলা সবুজ পরিবেশের মধ্যে ট্রেনিং করছি। তেমন মনে হলে পুকুরে সাঁতার কাটছি। গাছ থেকে ফল পেড়ে খাচ্ছি। ভালই আছি।” আরও যোগ করলেন, “প্রত্যেকের কাছে আমরা একটাই অনুরোধ, যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকুন। স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।”

Advertisement

এত দিন নিজের কমপ্লেক্সে কচিকাঁচাদের সঙ্গে বাস্কেটবল খেলতেন মনোজ তিওয়ারি। শনিবার শহরে করোনায় আক্রান্ত তৃতীয় ব্যক্তির খোঁজ পাওয়ার পরে বাড়ি থেকে বেরনোই বন্ধ করে দিয়েছেন বাংলা দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। বলছিলেন, “আর বাইরে বেরোচ্ছি না। এত দিন যুবানকে (ছেলে) নিয়ে কমপ্লেক্সের নীচে খেলতে যেতাম। আজ থেকে বাড়িতেই খেলছি। স্ত্রীকে ঘর গুছোতে সাহায্য করছি। মরসুম চলাকালীন বাড়ির কোনও কাজই করা হয়ে ওঠেনি। এখন সে গুলোই চলছে।” এমনিতে অবসর সময়ে ইউটিউবে ফুটবল হাইলাইটস দেখেন। অনুপ্রাণিত হন বিভিন্ন ধরনের বক্তৃতা শুনে। স্বোচ্ছাবন্দি জীবনের তালিকায় সেগুলোও রয়েছে। এ ভাবেই সময় কাটছে মনোজের।

এ দিকে আকাশ দীপও কলকাতা ছেড়ে চলে গিয়েছেন আসানসোলে। ট্রেনিং বন্ধ, কিন্তু স্থানীয় কোচিং ক্যাম্পে ব্যাটিং করতে যাচ্ছেন সুযোগ পেলে। আগামী মরসুমে বাংলা দলের যোগ্য অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার তাগিদ তাঁকে এখন তাড়া করছে। কিন্তু তার সঙ্গেই মায়ের কাছে বিভিন্ন পদের পছন্দের রান্নার আবদারও করে চলেছেন। সেই তালিকায় কখনও যুক্ত হচ্ছে খাসির মাংস। কখনও আবার কব্জি ডোবাচ্ছেন দেশি মুরগির ঝোলেও। বাংলার এই তরুণ পেসারের কথায়, “মরসুম চলার মধ্যে কখনও কোনও ধরনের অনিয়মকে প্রশ্রয় দিইনি। সঞ্জীবদার (বাংলা দলের ট্রেনার) নির্দেশ কখনও অমান্য করিনি। করোনাভাইরাসের কারণে এখন বাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছি। মায়ের সঙ্গে যত দিন সময় কাটাতে পারছি, তত দিন ভাল করে পছন্দের পদগুলো খেতে চাই।” যোগ করলেন, “আমরা সকলেই একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে পুরো দেশকে একটি দল হিসেবে লড়তে হবে। তবেই অতিক্রম করা যাবে এই কঠিন রাস্তা।”

শাহবাজ আহমেদ যদিও কলকাতায় নেই। হরিয়ানার বাড়িতে রয়েছেন পরিবারের সঙ্গে। তবে তাঁর মন খারাপ। বলছিলেন, “ক্রিকেটই যখন বন্ধ, কী করে তখন আর ভাল লাগতে পারে! ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, দ্রুত যেন এই অতিমারি থেকে রক্ষা পায় পৃথিবী।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement