বিন্দিয়ারানির পরের লক্ষ্য প্যারিস অলিম্পিক্স। ছবি: পিটিআই
কমনওয়েলথ গেমসে পদক জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ব্যর্থতা মুছে সাফল্যের স্বাদ পাওয়ার বাসনাই বিন্দিয়ারানি দেবীকে এনে দিয়েছে রুপোর পদক। এ বার ২০২৪ সালের অলিম্পিক্সে দেশের জন্য পদক জিততে চান মণিপুরের ভারোত্তোলক।
অলিম্পিক্সে কি আদৌ নামতে পারবেন বিন্দিয়ারানি? রয়েছে সংশয়। কারণ, প্যারিস অলিম্পিক্সে মহিলাদের ভারোত্তোলনে ৫৫ কেজি বিভাগ না-ও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাঁকে কম বা বেশি ওজনের বিভাগে নামতে হবে। নিজের ওজন বাড়াতে বা কমাতে হবে। দেহের ওজন বাড়ালে আরও বেশি ওজন তোলার অনুশীলন করতে হবে। আবার দেহের ওজন কমালেও ওজন তোলার পরিমাণ ধরে রাখতে হবে। অর্থাৎ, প্যারিস তাঁর সামনে হাজির করছে নতুন চ্যালেঞ্জ।
এর আগে অনেক বড় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছেন। তাই লক্ষ্য বদলাচ্ছেন না। সাফল্যের খোঁজে এক সময় খেলাই বদলে ফেলা বিন্দিয়ারানি তৈরি নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে। বলেছেন, ‘‘সামনে অনেক প্রতিযোগিতা রয়েছে। জাতীয় গেমস, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, এশিয়ান গেমস এবং অলিম্পিক্স। প্যারিস অলিম্পিক্সকে লক্ষ্য রেখেই প্রস্তুতি নিতে চাই।’’
দেশের হয়ে এই সাফল্যই চেয়েছিলেন বিন্দিয়ারানি। সে জন্য নিজের প্রিয় খেলাই বদলে ফেলেন। খেলোয়াড় জীবনের শুরুতে তাইকোন্ডো করতেন বিন্দিয়ারানি। শুধু খেলতেনই না, তাইকোন্ডোয় জুনিয়র পর্যায়ে ভারতের প্রতিনিধিত্বও করেছেন। কিন্তু খর্বকায় হওয়ায় আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রত্যাশিত সাফল্য পাননি। কমনওয়েলথ গেমসে রুপোজয়ী বলেছেন, ‘‘তাইকোন্ডোয় আমার ব্ল্যাক বেল্ট রয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি। কিন্তু উচ্চতা বেশি না হওয়ায় তেমন সাফল্য আসছিল না। কয়েক জন পরামর্শ দেন ভারোত্তোলন করার। ছোট থেকেই বেশ শক্তপোক্ত ছিলাম। ২০১২ সালে ভারোত্তোলন শুরু করি। তখন থেকে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার ইম্ফল কেন্দ্রে অনুশীলন করছি।’’
যাঁদের পরামর্শে তাইকোন্ডো ছেড়ে ভারোত্তোলনে এসেছিলেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি বিন্দিয়ারানি। ভারোত্তোলন শুরু করার পর থেকে এগিয়েছেন মীরাবাই চানুকে আদর্শ করে। তাঁকেই এখন মীরাবাই ০.২ বলা হচ্ছে। জানিয়েছেন নিজের আদর্শের সঙ্গে এমন তুলনা তাঁর অস্বস্তি বাড়ায়। কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন টোকিয়ো অলিম্পিক্সে পদকজয়ী ভারোত্তোলককেও। বলেছেন, ‘‘ভারোত্তোলন শুরু করার সময় আমার কাছে লিফটিংয়ের উপযোগী জুতো কেনার টাকা ছিল না। এটা জানার পর মীরাদিই আমাকে জুতো কিনে দেয়। তা ছাড়া খেলা সংক্রান্ত পরামর্শ তো সব সময়ই দেয়। ভীষণ উৎসাহ দেয়। সাহস দেয়।’’
বার্মিংহ্যাম গেমসের সাফল্যে খুশি বিন্দিয়ারানি বলেছেন, ‘‘রুপোর পদক জিতে খুব খুশি হয়েছি। কোচ, কর্তারা প্রচুর সাহায্য করেছেন। কোচদের পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করেছি সব সময়। অবসর সময়ও ভেবেছি কী ভাবে নিজের খেলার উন্নতি করা যায়।’’ রবিবারই তৈরি হয়েছে তাঁর ‘উইকিপিডিয়া পেজ’। সামান্য কিছু প্রাথমিক তথ্য রয়েছে তাতে। বাড়ির পদকের শো-কেসের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে ভরবে সেই পাতা।