দ্যুতি চন্দ। ফাইল ছবি।
এলজিবিটি-দের নির্ভয়ে বাঁচার অধিকার রয়েছে। সাধারণ মানুষ হোন বা ক্রীড়াবিদ— সমকামী, উভকামী এবং রূপান্তরকামীদের (এলজিবিটি) শাস্তি পাওয়ার আতঙ্ক ছাড়াই জীবন ধারণের অধিকার রয়েছে। এই দাবি তুললেন কমনওয়েলথ গেমসে অংশগ্রহণ করা এলজিবিটি অ্যাথলিটরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ভারতের প্রথম ঘোষিত সমকামী অ্যাথলিট দ্যুতি চন্দও। তিনি ১০০ মিটারে নামবেন। ছিলেন সিনক্রোনাইজড ডাইভিংয়ে অলিম্পিক্স সোনাজয়ী ব্রিটেনের টম ড্যালিও।
সমাজে এলজিবিটি-দের নানা বাধা, কটূক্তির মুখোমুখি হতে হয়। পরিবার, পরিজনেরাও অনেক সময় তাঁদের ভাল ভাবে নেন না। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই এই ধরনের মানুষদের দিন কাটাতে হয় ভয়, আতঙ্ক, আশঙ্কাকে সঙ্গে করে। দ্যুতি বলেছেন, ‘‘এলজিবিটিদের নিরাপদে এবং স্বচ্ছন্দে বাঁচার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। মৃত্যু ভয় বা শাস্তির ভয় নিয়ে যেন তাঁদের জীবন যাপন করতে না হয়।’’
নিজেদের অধিকার, দাবি নিয়ে দ্যুতি-সহ ছয় ক্রীড়াবিদ দেখা করেন যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে ভারতীয় স্প্রিন্টার বলেছেন, ‘‘আমার সঙ্গে তেমন কথা হয়নি। কারণ আমি ভাল ইংরাজি বলতে পারি না। তবে উনি আমাকে বলেছেন, ‘কখনও ভয় পাবে না। আমি তোমাকে অনুসরণ করি নেটমাধ্যমে।’ ওঁর কথায় আমি অনেকটা উৎসাহ, আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। দারুণ একটা অভিজ্ঞতা হল।’’
এলজিবিটি-দের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নিজেকেই উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেছেন দ্যুতি। বলেছেন, ‘‘প্রচুর মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে আমাকে। খুব অল্প মানুষই আমার পাশে ছিলেন। অনেকে তো আমার সঙ্গে কথাই বলতেন না। বহু রাতে ঘুমোতে পারিনি। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। এমন দিন আসবে আগে ভাবতে পারতাম না। কমনওয়েলথের এলজিবিটি দূত হিসাবে ডাক পাব কোনও দিন ভাবতেই পারিনি। এটা বড় প্রাপ্তি। এখন অবশ্য অনেকেই আমার সঙ্গে এগিয়ে আসে কথা বলতে।’’
দু’মাস আগেই বার্মিংহ্যাম গেমসের আয়োজকরা দ্যুতিকে আমন্ত্রণ জানান এলজিবিটি-দের দূত হিসাবে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য। দ্যুতির আশা, আগামী দিনে তাঁরাও আর পাঁচ জনের মতোই সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ভাবে জীবন কাটাতে পারবেন।