সোনা নিয়ে জেরেমি। ছবি পিটিআই
বেশি ওজন তুলতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন। তাতেও সোনা জয় আটকাল না। ভারোত্তোলনে পুরুষদের ৬৭ কেজি বিভাগে রেকর্ড গড়ে ভারতকে দ্বিতীয় সোনা এনে দিলেন জেরেমি লালরিনুঙ্গা। খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পর জানালেন, পদক জিতেছেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। ইভেন্ট চলাকালীন এক সময় কাঁদতে শুরু করেছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন, সব আশা শেষ।
জেরেমিকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে হাজির হয়েছিলেন মীরাবাই চানু, যিনি শনিবারই ভারতকে প্রথম সোনা এনে দিয়েছেন। তাঁর সামনে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিলেন জেরেমি। স্ন্যাচে সবচেয়ে ভাল খেলেছেন। ১৪০ কেজি ওজন তুলেছেন মিজোরামের এই ভারোত্তোলক। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে এগিয়ে ছিলেন ১০ কেজি ব্যবধানে। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে তিনি তোলেন ১৬০ কেজি। সব মিলিয়ে ৩০০ কেজি তুলে কমনওয়েলথ গেমসে রেকর্ড গড়ে সোনা জিতেছেন। তবে ক্লিন অ্যান্ড জার্কে বেশি ওজন তুলতে গিয়ে পেশিতে টান ধরে।
সেই প্রসঙ্গে জেরেমি বলেছেন, “চোট পাওয়ার পর সব অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল আমার সামনে। আশেপাশে কী হচ্ছে কিছুই মাথায় ঢুকছিল না। মনে হচ্ছিল অন্ধ হয়ে গিয়েছি। প্রচুর কেঁদেছি সেই সময়ে। প্রচণ্ড ব্যথা করছিল। তার মাঝেই কোচকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘পদক জিতেছি কি?’ উনি হাসতে হাসতে বললেন, ‘তুমি সোনা জিতেছ।’ তখন ধীরে ধীরে শান্ত হলাম।”
জয়ের পিছনে যাবতীয় কৃতিত্ব কোচ বিজয় শর্মাকেই দিয়েছেন জেরেমি। বলেছেন, “কোচ প্রচুর খেটেছেন আমার জন্য। কখন কী ওজন তুলতে হবে সেটা বলে দিয়েছেন। ওঁর জন্যেই এত সহজে পদক এসেছে। হিসাব কষে এগিয়েছি আমরা। কোনও সময় অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়নি।”
ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় পাকিস্তানের তালহা তালিব খেলতে পারেননি কমনওয়েলথে। বাকিদের হারাতে জেরেমিকে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়নি। সোনা জিতে বলেছেন, “মনে হচ্ছে একটা অন্য জগতে রয়েছি। দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হল। যুব অলিম্পিক্সে খেলার পর এটাই এখনও পর্যন্ত আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা।”
ছোটবেলায় বক্সিং করতেন। এক বন্ধুকে দেখে ভারোত্তোলনে আসা। অলিম্পিক্সে ৬৭ কেজি বিভাগ না থাকায় জেরেমিকে নামতে হবে ৭৩ কেজি বিভাগে। এখন থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চান তিনি। বলেছেন, “একটা অন্য বিভাগে নামব। অনেক বিষয়ে উন্নতি করতে হবে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ওজন বাড়াতে হবে। নিজেকে চোটমুক্ত রাখতে চাই।”