প্রতিবাদ: বিদ্রোহী লিগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আর্সেনাল ভক্তদের। ফাইল চিত্র
এ বার পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় নামলেন রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ়। প্রস্তাবিত ইউরোপীয় সুপার লিগ আপাতত ভেস্তে গেলেও তিনি মনে করছেন, সরে যাওয়া ক্লাবগুলি অত সহজে পার পাবে না। তাঁর দাবি, প্রতিটি ক্লাব চুক্তিপত্রে সই করে ‘বিদ্রোহী’ লিগে খেলার ব্যাপারে তাদের সম্মতির কথা জানিয়েছিল। তিনি পরোক্ষ ভাবে বুঝিয়েছেন, রাতারাতি সিদ্ধান্ত পাল্টে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গেলে সেটা চুক্তিভঙ্গ করা হবে। সব চেয়ে বড় কথা, পেরেজ় এখনও সুপার লিগ আয়োজনের আশা ছাড়েননি। তাঁর ধারণা, অচিরেই সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে এবং কাঠামোয় কিছু পরিবর্তন এনে লিগ ঠিকই শুরু করা যাবে।
বিতর্কিত সুপার লিগ চালু করার যাঁরা হোতা, পেরেজ় তাঁদেরই প্রধান। যে কারণে রিয়াল মাদ্রিদ এখনও সরকারি ভাবে বিবৃতি দিয়ে প্রস্তাবিত লিগে না খেলার কথা বলেনি। অবশ্য বার্সেলোনা আর জুভেন্টাসও নাম প্রত্যাহার করেনি। খেলতে রাজি হয়েও প্রথমেই সরে আসে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ছ’টি ক্লাব। তার পরে একে একে অন্য অনেকে। অবশ্য বায়ার্ন মিউনিখ আর প্যারিস সাঁ জারমাঁ আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, তারা এই লিগে খেলবে না। তাই তাদের চুক্তিতে সই করারও কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। পেরেজ় কার্যত হুমকির সুরে বলতে চেয়েছেন, যারা চুক্তিতে সই করেও এখন অন্য সুরে কথা বলছে, তাদের পরিণতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
স্পেনের এক দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেরেজ় বলেছেন, ‘‘চুক্তির বন্ধন কতটা শক্ত তা ব্যাখ্যা করার দরকার নেই। শুধু এটুকু বলতে পারি যে, ইচ্ছে করলেই ক্লাবগুলি চুক্তি থেকে সরে আসতে পারে না।’’ যোগ করেছেন, ‘‘আমি ভাল করেই জানি যে চাপের মুখে কিছু ক্লাব সুপার লিগ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু আমাদের স্বপ্ন সত্যি হবেই। লিগের আয়োজনও আটকাবে না। এবং আশা করছি খুব তাড়াতাড়িই সেটা করে ফেলতে পারব।’’ সুপার লিগের লগ্নিকারী মার্কিন ব্যাঙ্ক জেপি মর্গ্যান। তারা বিপুল অঙ্কের টাকা লিগের জন্য দিয়েছে বলে খবর। কিন্তু শুক্রবারই সেই ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই লিগের প্রতিক্রিয়া কী হবে তা বুঝতে তাদের ভুল হয়েছিল। এটা পেরেজ়দের কাছে আর একটা ধাক্কা। রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁদের পরিচালন বোর্ডে এখনও এই ব্যাঙ্ক স্বমহিমাতেই আছে। প্রসঙ্গত, সুপার লিগে খেললে শুরুতেই ক্লাবগুলি ৩০১৬ কোটি টাকা করে পেত। যা বার্সার মতো ক্লাবগুলিকে আর্থিক দুর্দশা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করত বলে একটি মহলের দাবি। এবং রেকর্ড মূল্যে টিভি স্বত্ব বিক্রি হলে, অঙ্কটা প্রচুর বেড়ে যেত।
এ দিকে পেরেজ় দাবি করেছেন, ‘‘এ’কথা আদৌ সত্যি নয় যে ক্লাবগুলি সরকারি ভাবে সরে গিয়েছে। তারা হয়তো একটু সময় নিতে চায়। ১২টি ক্লাবের কথাই আমি বলছি। তেমন হলে সুপার লিগের কাঠামোয় আমরা একটু-আধটু পরিবর্তন করতেই পারি। দরকার হলে সেটা তো করতেই হবে। কিন্তু ফুটবলের মঙ্গলের জন্য প্রস্তাবিত লিগের থেকে ভাল ভাবনা কিছু হতে পারে না।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘সব ক্লাবই এখানে যুক্ত। আমাদের সঙ্গে ওদের সম্পর্কও অটুট রয়েছে। আমরা যা করেছি, তার প্রতিক্রিয়া হয়তো আরও কয়েক সপ্তাহ দেখা যাবে। সমস্যা হচ্ছে, কিছু লোক ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে। তারা নিজেদের জায়গাটা ঠিক রাখতে চায়। তাই লিগ ভেস্তে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।’’ পেরেজ় জানাচ্ছেন, গত বছর আর এ’বছর মিলিয়ে সুপার লিগে খেলতে রাজি থাকা ১২টি ক্লাবের হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে করোনা অতিমারির জন্য।