ফাইল চিত্র
তাঁর জীবনে রাহুল দ্রাবিড়ের অবদান ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়, বলে মনে করেন চেতেশ্বর পুজারা। নানা বিষয়ে দ্রাবিড়ের থেকে যে অমূল্য পরামর্শ পেয়েছেন, তা কখনও ভুলতে পারবেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
দু’জনের মধ্যে প্রায়ই মিল খোঁজার চেষ্টা হয়। ভারতীয় ব্যাটিংয়ের ‘প্রাচীর’ দ্রাবিড়ের সার্থক উত্তরসূরি মনে করা হয় পুজারাকে।একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুজারা জানিয়েছেন, দ্রাবিড় তাঁকে বুঝিয়েছেন, ক্রিকেট থেকে মাঝে-মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকাটাও সাফল্য পেতে জরুরি।
‘‘ক্রিকেট থেকে সাময়িক ভাবে কী করে দূরে থাকা যায়, তা ওঁর (দ্রাবিড়) থেকেই শিখেছি। আমি নিজেও মনে করি, এটা দরকার,’’ ব্যাখ্যা করেছেন ভারতীয় দলের নির্ভরযোগ্য তিন নম্বর, ‘‘কিন্তু ওঁর সঙ্গে কথা বলার পরে আমি এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে যাই, আমি যেটা ভাবছি, তা একেবারে ভুল নয়। ওঁর সঙ্গে কথা বলার পরে বুঝে যাই, আমাকে কী কী করতে হবে।’’
দ্রাবিড়ের মতোই অফ-সিজনে ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পুজারা। সেখান থেকেও তাঁর অভিজ্ঞতা হয়েছে যে, ব্যক্তিগত জীবন ও পেশাদারী জীবনকে কী ভাবে আলাদা রাখতে হয়। পুজারা বলছেন, ‘‘কাউন্টি খেলতে গিয়েও দেখেছি, ব্যক্তিগত জীবন ও পেশাদারিত্বের মধ্যে ওরা গুলিয়ে ফেলে না। গুলিয়ে ফেলা উচিতও না। রাহুল দ্রাবিড়ের সেই উপদেশ সব সময় মেনে চলার চেষ্টা করি।’’ যোগ করেন, ‘‘অনেকেই হয়তো মনে করে, আমি খুব বেশি মনঃসংযোগ করি ক্রিকেটে। সেটা ঠিক। কিন্তু ক্রিকেট থেকে কখন সরে এসে ব্যক্তিগত জীবন উপভোগ করতে হয়, সেটাও আমি জানি। ক্রিকেটের বাইরেও আমাদের জীবন আছে।’’ এই শিক্ষাই তিনি পেয়েছেন দ্রাবিড়ের কাছ থেকে।
দ্রাবিড় সব সময়েই পুজারার অনুপ্রেরণা। ক্রিকেট বিশ্বের যে কোনও পিচে প্রাক্তন অধিনায়কের নির্ভীক, সাবলীল ব্যাটিং দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে যেতেন। পুজারা বলে দিচ্ছেন, ‘‘রাহুল ভাই আমার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা ভাষায় প্রকাশ করে বোঝাতে পারব না। উনি সব সময়েই আমার অনুপ্রেরণা।’’
আরও পড়ুন: বাতিলের যন্ত্রণা ভোলেননি ভিশি
পুজারা ও দ্রাবিড়ের ব্যাটিং ভঙ্গি অনেকটা এক রকম হলেও ভারতীয় ব্যাটসম্যান কিন্তু তাঁর পূর্বসূরিকে নকল করেননি। সৌরাষ্ট্রের হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলার সময় তিনি দেখেছেন, শুধু সেঞ্চুরি করলেই হয় না, দলের প্রয়োজনে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে যেতে হয়। তাঁর রাজ্যকে রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন করার অন্যতম নেপথ্য নায়ক বলছেন, ‘‘আমার আর রাহুল দ্রাবিড়ের ব্যাটিং ভঙ্গির মিল খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু ইচ্ছাকৃত ভাবে কখনও ওঁকে নকল করি না।’’ যোগ করছেন, ‘‘সৌরাষ্ট্রের হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলার সময় থেকেই একটা অভ্যেস তৈরি হয়েছে। শুধু সেঞ্চুরি করলেই হয় না, দলের স্বার্থে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে যেতে হয়।’’ এ বারেই রঞ্জি ফাইনালে সেঞ্চুরি না পেলেও উইকেট কামড়ে পড়ে থেকে বাংলার বোলারদের ক্লান্ত করে দিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন পুজারা।
আরও পড়ুন: দু’রকম জার্সি পরেই খেলার ভাবনা এটিকে-মোহনবাগানে
শুধু জাতীয় দলে প্রবেশের পর থেকে নয়, যুব পর্যায়েও একই ভঙ্গিতে খেলতেন তিনি। পুজারার কথায়, ‘‘সৌরাষ্ট্রের হয়ে খেলেই ব্যাটসম্যান হিসেবে দায়িত্বজ্ঞান বেড়েছে। নিজের উইকেটের মুল্য কতটা, তা যুব স্তরে সৌরাষ্ট্রের হয়ে খেলতে খেলতেই বুঝতে শিখেছি।’’