দুই ভাই। কার্লোস ও মারিয়ো। এটিকে-র চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন কার্লোস। এ বার ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ মারিয়ো। ছবি— কার্লোসের ফেসবুক পেজ থেকে।
কঠিন সময়ে ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ হয়ে আসছেন ভাই। আড়াই বছরের ছোট ভাইয়ের জন্য লাল-হলুদ-এর সমর্থক হয়ে গিয়েছেন দাদা। তিনি, কার্লোস রিভেরা। মারিয়ো রিভেরার দাদা।
কলকাতার সঙ্গে দুই রিভেরা ভাইয়ের সম্পর্ক পুরনো। লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর ক্লাবে মারিয়ো যোগ দেওয়ার অনেক আগেই ‘ফুটবলের মক্কা’য় পা রেখেছিলেন কার্লোস। এটিকে-র চ্যাম্পিয়ন দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে এটিকে-র কোচ ছিলেন স্পেনের জাতীয় দলের গোলকিপার হোসে মোলিনা। এখন তিনি স্পেনের ফুটবল ফেডারেশনের স্পোর্টিং ডিরেক্টর। পুরনো ক্লাবের প্রসঙ্গ উঠতেই আবেগপ্রবণ মোলিনা বলে ওঠেন, ‘‘আমার সঙ্গে এটিকে-তে কাজ করেছিল কার্লোস। এখন স্পেনের অনূর্ধ্ব ২১ দলের ফিটনেস ট্রেনার হিসেবে কাজ করছে ও।’’
এ বারের আইএসএল-এ তিন নম্বরে রয়েছে এটিকে। পুরনো দলের খেলা কি দেখেন তিনি? কার্লোস বলছেন, ‘‘সব খেলা দেখা হয় না। কয়েকটা ম্যাচ দেখেছি। এটিকে-র খেলা দেখতে বসলে পুরনো কথা মনে পড়ে যায়। সে বার এটিকে দারুণ খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। কলকাতা শহরটাকেও ভাল লেগেছিল। সুযোগ পেলে ফের এটিকে-র সঙ্গে কাজ করতে চাই।”
আরও পড়ুন: স্বামীকে ডিভোর্স করে মুরলী বিজয়কে বিয়ে করেন ক্রিকেটার দিনেশ কার্তিকের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী
স্পেনের অনূর্ধ্ব ২১ দল নিয়ে ব্যস্ত কার্লোস। তাঁর ভাই কলকাতায় আসার তোড়জোর শুরু করে দিয়েছেন। খুব কঠিন সময়ে মারিয়োর হাতে দলের রিমোট কন্ট্রোল তুলে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। আগামী মাসেই তিনি কলকাতায় এসে পড়বেন। এক বছর আগে এই মারিয়োই আলেয়ান্দ্রো মেনেন্দেজের সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। আই লিগের প্রথম ডার্বি ম্যাচ হারের পরে আচম্বিতেই কোচের পদ ছেড়ে দেন মেনেন্দেজ। ডাক পড়ে মারিয়োর। এই ইস্টবেঙ্গলের অনেককেই তিনি চেনেন। হাইমে কোলাদোদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুবই ভাল।
ভাইয়ের কাজ কতটা কঠিন? এ রকম কঠিন পরিস্থিতি থেকে ইস্টবেঙ্গলকে কি টেনে তুলতে পারবেন মারিয়ো? এক মুহূর্ত না ভেবে কার্লোস বলে ওঠেন, ‘‘পারবে না কেন? গত বছরও মারিয়ো ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেছে। তখন আলেয়ান্দ্রো হেড কোচ ছিলেন। এখন মারিয়োকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওর কোচিং দক্ষতা নিয়ে কোনও সংশয়ই নেই আমার মধ্যে। মারিয়ো সফল হবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর ওর জন্যই আমি ইস্টবঙ্গলের সমর্থক হয়ে গিয়েছি।’’
এ বারই যে প্রথম কোনও ক্লাবের হেড কোচ হিসেবে কাজ করছেন মারিয়ো তা নয়। ব্রুনেইয়ের অনূর্ধ্ব ২১ জাতীয় দল, সিডি লিগানেসের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দল-সহ আরও বেশ কয়েকটি ক্লাবের হেড কোচ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ (তৃতীয় ডিভিশন দল), সেল্টা ভিগোর (দ্বিতীয় ডিভিশন বি দল) ট্যাকটিকাল অ্যানালিস্ট হিসেবেও কাজ করেছেন। আলেয়ান্দ্রো জমানায় ইস্টবেঙ্গলের ভিডিয়ো অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করা মারিয়ো ২০ বছর বয়স পর্যন্ত ফুটবল খেলেছেন। ফরোয়ার্ডে খেলতেন তিনি। তার পরে ঝুঁকে পড়েন কোচিংয়ে। উয়েফার প্রো লাইসেন্স ডিগ্রিও রয়েছে তাঁর।
কার্লোস বলছিলেন, ‘‘বাবার প্রেরণাতেই আমরা দুই ভাই ফুটবল খেলতে শুরু করেছিলাম। তখন ফুটবল নিয়েই আমরা চিন্তাভাবনা করতাম। সারাদিন ফুটবল নিয়েই দুই ভাই আলোচনা করতাম। ফুটবল নিয়েই আমরা এগিয়ে চলেছি।’’ ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন জোড়া লাগাতে আসছেন মারিয়ো। সুদূর স্পেন থেকে ব্যস্ততার মধ্যেও ভাইয়ের কোচিং দেখবেন কার্লোস।
আরও পড়ুন: কেন এ রকম সূচি? ভারত এ দলের নিউজিল্যান্ড সফর নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন গাওস্কর