ট্রিপল সেঞ্চুরি করে ডেভিড ওয়ার্নার।—ছবি এএফপি।
ডেভিড ওয়ার্নার যখন দ্রুত তাঁর বিশ্বরেকর্ডের দিকে এগোচ্ছিলেন, তখন ব্রায়ান লারা তৈরি হচ্ছিলেন অস্ট্রেলীয় ওপেনারকে অভিনন্দন জানাতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ধরেই নিয়েছিলেন ওয়ার্নার তাঁর রেকর্ড ভাঙতে চলেছেন।
লারা ওই দিন আবার অ্যাডিলেডেই ছিলেন। এবং নজর রাখছিলেন ওয়ার্নারের স্কোরের উপরে। কী মনে হচ্ছিল ওই সময়? সোমবার সাংবাদিকদের লারা বলেছেন, ‘‘আমি তো ভেবেছিলাম ওয়ার্নার আমার রেকর্ড ভেঙে দেবে। আমি অ্যাডিলেডেই ছিলাম। তৈরিও হচ্ছিলাম মাঠে গিয়ে ওকে অভিনন্দন জানানোর জন্য। ওর খুব ভাল সুযোগ ছিল বিশ্বরেকর্ড করার। ভেবেছিলাম ওয়ার্নারকে চারশো রান টপকে যাওয়ার সুযোগ দেবে অস্ট্রেলিয়া।’’
টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক এখনও লারা। ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অপরাজিত ৪০০ রান করেছিলেন তিনি। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক টিম পেন আগেই ডিক্লেয়ার করে দেওয়ায় ওয়ার্নার আর সুযোগ পাননি লারার বিশ্বরেকর্ড ভাঙার। লারা বলছেন, ‘‘দারুণ ব্যাপার হত মাঠে নেমে ওয়ার্নারকে অভিনন্দন জানাতে পারলে। এর আগে রেকর্ড ভাঙার পরে গ্যারি সোবার্স যে রকম করেছিলেন। মনে রাখতে হবে, রেকর্ড তৈরি হয় ভাঙার জন্যই। আরও ভাল লাগে যখন কোনও আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান এ রকম রেকর্ড ভাঙে। আগ্রাসী ব্যাটসম্যানরাই তো খেলাটার বিনোদন।’’
আরও পড়ুন: ভারতে এসে ব্লেক: সৌরভকে বলব, ঘণ্টা বাজাতে চাই ইডেনে
এক বার নয়, দু’বার সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েন লারা। প্রথম বার সোবার্সের অপরাজিত ৩৬৫ রানের রেকর্ড ভেঙে করেন ৩৭৫। তবে সেই রেকর্ড ভেঙে দেন ম্যাথু হেডেন ৩৮০ রান করে। ফের লারা হেডেনের রেকর্ড ভেঙে করেন ৪০০। সোবার্সের রেকর্ড ভাঙার সময় স্বয়ং কিংবদন্তি অলরাউন্ডার মাঠে নেমে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন লারাকে। সে কথা ভোলেননি কিংবদন্তি এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। লারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘সোবার্স মাঠে নেমে আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। আমিও সেই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। মাঠে না নামতে পারলেও পরে ওকে নিশ্চয়ই সামনাসামনি অভিনন্দন জানানোর সুযোগ পেতাম।’’
লারা মানছেন, অস্ট্রেলিয়ার একটা যুক্তি ছিল ডিক্লেয়ার করার। তাঁর কথায়, ‘‘ম্যাচ জেতা যে গুরুত্বপূর্ণ, তা আমিও মানি। তার উপরে বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু তাও আমার ভাল লাগত যদি অস্ট্রেলিয়া ওই সুযোগটা দিত ওয়ার্নারকে। ওরা বলতে পারত, ‘ডেভিড তোমাকে ১২ ওভার দেওয়া হল বিশ্বরেকর্ড করার জন্য।’ সে রকম হলে দারুণ ব্যাপার হত।’’ তিনি আরও মনে করেন, ওয়ার্নার ভবিষ্যতে চারশোর গণ্ডি টপকে যেতে পারেন। লারার মন্তব্য, ‘‘ওয়ার্নার তরুণ না হলেও মনে হয় ওর সামনে আমার রেকর্ড ভাঙার আবার সুযোগ আসবে।’’
আরও পড়ুন: রোনাল্ডোকে টপকে দুরন্ত মেসির ষষ্ঠ ব্যালন ডি’ওর জয়
নজির নিয়ে বিতর্ক: ডেভিড ওয়ার্নারের ৩৩৫ নট আউট নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। টিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে এক বার রান নেওয়ার সময় পুরোপুরি ক্রিজ ছুঁয়ে যাননি ওয়ার্নার। ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী, ‘ওয়ান শর্ট’ অর্থাৎ এক রান কম হওয়া উচিত ছিল। আম্পায়ারেরা খেয়াল না করায় যে ভুল ধরা পড়েনি। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমেই দাবি উঠেছে, ব্র্যাডম্যানের ৩৩৪ টপকে যেতে পারেননি ওয়ার্নার। তিনি স্যর ডনকে স্পর্শই করতে পেরেছেন শুধু। তাঁর আসল রান হবে ৩৩৪ নট আউট।