কোপা আমেরিকা ট্রফি হাতে দানি আলভেজ। ছবি: পিটিআই।
দীর্ঘ ১২ বছরের প্রতীক্ষার অবসান। পেরুকে হারিয়ে ঘরের মাঠে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হল ব্রাজিল। একই সঙ্গে আয়োজক দেশ হিসাবে প্রতি বার কোপা জেতার রেকর্ডও করল পেলের দেশ। এর আগে যে চারবার (১৯১৯, ১৯২২, ১৯৪৯ ও ১৯৮৯) নিজেদের মাটিতে কোপা আমেরিকা আয়োজন করেছিল ব্রাজিল, প্রতিবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। এ বারও ইতিহাসের চাকা একই দিকে ঘুরল।
সেই ২০০৭ সালে শেষ বার কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল। তার পরে কত জল গড়িয়ে গিয়েছে আমাজন দিয়ে। কোপা জিততে পারেনি সেলেকাওরা। ২০১৬ সালে পেরুর কাছে হেরেই কোপা আমেরিকার গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল ব্রাজিলকে। তখন ব্রাজিল দলের রিমোট কন্ট্রোল ছিল কার্লোস দুঙ্গার হাতে।
এ বার তিতের ব্রাজিল সেই পেরুকে হারিয়েই তিন বছর আগের হারের মধুর প্রতিশোধ নিল। মারাকানা স্টেডিয়ামেই পেরুকে মাটি ধরিয়ে খেতাব জিতল ব্রাজিল। এই মারাকানার সঙ্গে অনেক সুখ-দুঃখ জড়িয়ে ব্রাজিলের। ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপে মারাকানাতেই উরুগুয়ের কাছে ফাইনাল হেরে গিয়েছিল ব্রাজিল। সে দিন ব্রাজিলের বারের নীচে দাঁড়িয়েছিলেন বারবোসা নাসিমেন্তো। ব্রাজিলের হারের জন্য বারাবোসাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল। সেই মারাকানাতেই উৎসবে মেতে উঠল ব্রাজিল।
আরও পড়ুন: বিশ্রী রেফারিং ও সংগঠকদের সততা নিয়েই প্রশ্ন মেসির
আরও পড়ুন: লাল কার্ড দেখলেন মেসি, চিলেকে হারিয়ে কোপায় তৃতীয় আর্জেন্টিনা
শক্তির নিরিখে বিচার করলে রিকার্ডো গারেকার পেরুর থেকে অনেকটাই এগিয়ে তিতের ব্রাজিল। প্রথমার্ধেই ব্রাজিল ২-১ এগিয়ে গিয়েছিল। শেষমেশ হলুদ জার্সিধারীরা ৩-১ উড়িয়ে দেয় পেরুকে। শুরু থেকেই ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় ব্রাজিল। খেলার ১৫ মিনিটেই এভারটনের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। জেসুসের বাড়ানো বলে পা ছুঁয়ে গোল করে যান এভারটন।
রক্ষণ-মাঝমাঠ এবং আক্রমণভাগে ব্রাজিলের দাপট ছিল লক্ষণীয়। ২৫ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল ব্রাজিল। এভারটনের কাছ থেকে বল পেয়ে গোল লক্ষ্য করে শট নেন কুটিনহো। সেই যাত্রায় অল্পের জন্য বেঁচে যায় পেরু। ম্যাচের ৩০ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন জেসুস। পেরু সমতা ফেরায় খেলার ৪৪ মিনিটে। পেনাল্টি বক্সের ভিতরে পড়ে গিয়ে বল হাতে বল লাগিয়ে ফেলেন থিয়াগো সিলভা। রেফারি পেনাল্টি দেন। স্পট কিক থেকে বল জালে জড়ান পাওলো গুরেরো।
বিরতির ঠিক আগে ব্রাজিলের হয়ে ব্যবধান বাড়ান জেসুস। ৭০ মিনিটে পেরুর ডিফেন্ডারকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় জেসুসকে। ব্রাজিল নেমে যায় ১০ জনে। নিউমেরিক্যাল অ্যাডভান্টেজ ছিল পেরুর অনুকূলে। তবুও পেরু দাঁত ফোটাতে পারেনি ব্রাজিলের গোলমুখে। ব্রাজিলের আক্রমণের দাপটই ছিল বেশি। সুনামির মতো একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়ে পেরুর পেনাল্টি বক্সে। খেলার একেবারে শেষ লগ্নে রিকার্লিসন পেনাল্টি থেকে গোল করে পেরুর কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন। পেরুর পেনাল্টি বক্সে ফাউল করা হয় এভারটনকে। ফিরমিনোর বদলি হিসেবে নামা রিকার্লিসন পেনাল্টি থেকে গোল করে ৩-১ করেন ব্রাজিলের পক্ষে।