উল্লসিত: স্ত্রান্দজায় রুপোা পেয়ে খুশি বক্সার দীপক। টুইটার।
২০০৮ সালে যখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন বক্সার হবেন, মত ছিল না দীপক কুমারের বাবা-মা এবং ঠাকুমার। তাঁরা প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘পড়াশুনো কর, বক্সিং করে কী পাবি?’’ ২০১৮ সালের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন, ২০১৯ সালে এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপে রুপোজয়ী এবং গত সপ্তাহে বুলগেরিয়ায় স্ত্রান্দজা মেমোরিয়াল প্রতিযোগিতায় অলিম্পিক্স ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে চমকে দেওয়া দীপকের কাছে এখন এই প্রশ্নের
জবাব রয়েছে।
‘‘আমার কাকা মনে করতেন আমি বক্সার হতে পারি। ঠিক কী কারণে ওঁর এমন মনে হত, সেটা জানতে চাইবেন না। আমি জানি না। তিনিও বক্সার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে পথ দেখানোর মতো কেউ ছিল না,’’ দেশে ফিরে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন দীপক। হরিয়ানার হিসারের বাসিন্দা ২৩ বছর বয়সি দীপক। দু’বারের অলিম্পিয়ান, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদকজয়ী এবং এশিয়ন গেমসে চ্যাম্পিয়ন বিকাশ কৃষাণ যাদবও এখান থেকেই উঠে এসেছেন। দীপক বলেছেন, ‘‘আমার কাকার (রবিন্দর কুমার) বন্ধুদের মধ্যে এক জনের বক্সিং জগতের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। উনি আমায় উৎসাহ দেন বক্সিংয়ে আসতে। আমার খুব ভালও লাগে। পরিবারে আমিই প্রথম যে খেলাধুলোকে বেছে নিয়েছি। তার জন্য খুব গর্ব হয় আর আমার কাকা নিজের অধরা স্বপ্ন আমার মধ্যে দিয়ে পূরণ করছেন।’’
ভারতীয় সেনায় নায়েব সুবেদার পদে থাকা দীপক পরিবারের বাধা সত্ত্বেও কী ভাবে বক্সিংয়ে আসেন সে কথা এখনও ভোলেননি। ‘‘বাবা-মা চাইতেন আমি পড়াশুনোয় বেশি জোর দিই। আমার ঠাকুমাও তাতে যোগ দিয়েছিলেন। এর পরে কাকা ও আমি তাঁদের বোঝাই। শেষ পর্যন্ত তাঁরা রাজি হয়ে যান,’’ বলছিলেন দীপক। তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমি সব সময় চাইতাম আত্মনির্ভর হয়ে উঠে বাবা-মাকে সাহায্য করব। তাই এক সময় বন্ধুর খবরের কাগজের এজেন্সিতেও কাজ করেছি। আমি নিজে খবরের কাগজ দিতাম না। কখনও কখনও বকেয়া টাকা সংগ্রহের কাজ করতাম। উদ্দেশ্য ছিল হাতখরচের টাকা তোলা।’’
স্ত্রান্দজায় এই প্রথম বার গিয়েছিলেন দীপক। যেখানে সেমিফাইনালে তিনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উজবেকিস্তানের শাখোবিদ্দিন জইরভকে হারিয়ে নজর কেড়েছেন। বলেছেন, ‘‘আমার খেলোয়াড়জীবনের এখনও পর্যন্ত সব চেয়ে বড় সাফল্য। এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়েও এগিয়ে রাখব।’’