বিতর্কিত রেফারিং পাল্টে দিল দুই কোচের মেজাজ

Advertisement

প্রীতম সাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫০
Share:

গোল না পাওয়ার আক্ষেপে বোতলে লাথি হাবাসের। ছবি: উত্‌পল সরকার

যুবভারতীতে হাওয়া-বদল।

Advertisement

হাসিখুশি আর চনমনে দিল্লি কোচের মুখ গোমড়া!

মিতভাষী আর গম্ভীর কলকাতা কোচের মুখে হাসি!

Advertisement

আইএসএল মাত্র দ্বিতীয় সপ্তাহে পড়তে না পড়তেই এমন কী ঘটল যে, হার্ম ফান ভেল্দোভেন এবং আন্তোনিও হাবাস এতটা বদলে গেলেন?

না, নিজের থেকে বদলাননি। দুই টিমের দুই কোচের মেজাজের হাওয়া-বদল রবিবারের ‘বিতর্কিত রেফারিং’-এর ধাক্কায়!

ভারতীয় ফুটবলে যে পদাধিকারীর সঙ্গে বহু বিতর্কিত অধ্যায় জড়িয়ে, এ বার সেই রেফারিং-কাণ্ড ঢুকে পড়ল আইএসএলেও! এই প্রথম আইএসএল ম্যাচে রেফারিং নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ল।

যার ‘সৌজন্যে’ দেল পিয়েরোদের মধ্যে যখন প্রবল বিরক্তি, তখন কলকাতা শিবিরে স্বস্তির আবহ। দিল্লি কোচ ফান ভেল্দোভেন বলছিলেন, “রেফারিং নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। তবে দেল পিয়েরোকে ফাউল করার জন্য পেনাল্টি কেন দেওয়া হল না, এখনও বুঝতে পারছি না। প্রার্থনা করি, পরের ম্যাচে রেফারিংয়ের সুবিধা যেন আমরা পাই। আর বিপক্ষ টিম ভোগে!” সরাসরি রেফারির দিকে আঙুল না তুলেও বুঝিয়ে দিলেন, দু’পয়েন্ট হারিয়ে কতটা বিরক্ত তিনি।

হাবাসের মুখে কিন্তু হাসি। এক পয়েন্ট পেয়েও। যে কোচ দলের অন্দরে দাপুটে মনোভাব আর কড়া অনুশাসনের জন্য পরিচিত, সেই কোচ হোটেলে ফিরেই আটলেটিকোর স্থানীয় ফুটবলারদের বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দিলেন! সোমবার প্র্যাকটিস নেই বলে। তার আগে মাঠে দাঁড়িয়ে বলে গেলেন, “সব ম্যাচ তো বার্সেলোনাও জিততে পারে না। আজ প্রচুর সুযোগ তৈরি হয়েছে, গোল করতে পারিনি। তবে সব মিলিয়ে টিমের পারফরম্যান্সে আমি খুশি।”


বিরক্ত দিল্লির কোচ। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

ম্যাচে রেফারিং নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও, আটলেটিকোর প্রশংসা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী দিল্লি কোচও। ফিকরু-অর্ণবদের খেলায় এতটাই মুগ্ধ দেল পিয়েরোদের কোচ ভেল্দোভেন যে, টিম বাসে ওঠার আগে কলকাতাকে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বিপজ্জনক টিম বলতেও দ্বিধা করলেন না। “একটা সময় আমরা ম্যাচে জেতার মতো জায়গায় চলে গিয়েছিলাম ঠিকই, তবে সত্যি বলতে কী কলকাতা থেকে যে শেষমেশ পয়েন্ট নিয়ে ফিরব ভাবিনি। আটলেটিকো খুব ভাল টিম। ওদের সবচেয়ে প্লাস পয়েন্ট, কোনও এক ফুটবলারের উপর টিমটা নির্ভরশীল নয়। সব ফুটবলার সব সময় মাঠে সক্রিয়। ওরা যেন ওত পেতে বসে থাকে। বিপক্ষ একটা ভুল করলেই তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করবে!”

ভেল্দোভেনের যুক্তি মোটেই ফেলে দেওয়ার নয়। যে টিমে বোরহা ফার্নান্দেজের মতো স্ন্যাচার ছিল না, যেখানে গার্সিয়াকে বিরতির পরেই তুলে নিতে হল, শেষে মিনিট কয়েক দশ জনেও খেলতে হল, সেই টিম ঘরের মাঠে পয়েন্ট হারিয়েও যেন জয়ীর মর্যাদা পাচ্ছে! হয়তো সে জন্যই হাবাসও বললেন, “অজুহাত দিতে চাই না। তবে একসঙ্গে এতগুলো সমস্যা সামলে টিমটা যে এক পয়েন্ট পেয়েছে, তাতেই আমি খুশি। এ দিনও বিপক্ষকে মেরে ফেলতে পারতাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য...।”

খারাপ রেফারিংয়ের পাশাপাশি যুবভারতীর কৃত্রিম ঘাসও এ দিন সমালোচনার টার্গেট। দিল্লির প্রত্যাবর্তনের নায়ক পাভেল ইলিয়াস বলে দিলেন, “এই মাঠে খেলা খুব শক্ত। ফুটবলের জন্য তো একেবারেই আদর্শ নয়। যখন তখন হাঁটু, গোড়ালিতে চোট লাগতে পারে।” আর ইলিয়াসের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা দিল্লি কোচ বললেন, “এই মাঠে ফুটবলাররা খুব তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। সেটাও একটা সমস্যা।”

আটলেটিকো কোচ ঘরের মাঠ বলে যুবভারতীর সারফেস নিয়ে কোনও বিতর্কিত কথা বলতে না চাইলেও, পুরো পয়েন্ট না পাওয়ার জন্য কিন্তু ফুটবলারদের ক্লান্তিকে অন্যতম কারণ বলছেন। “এক সপ্তাহের মধ্যে তিনটে ম্যাচ খেললাম। হোম-অ্যাওয়ে-হোম খেলে খেলে ছেলেরা খুব ক্লান্ত। আর যুবভারতীর টার্ফে তো একটা সমস্যা থাকেই...।”

তা-ও তো ফাটাফাটি ফুটবল আটকানো যাচ্ছে না!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement