কোপা আমেরিকা মানেই সুন্দর ফুটবল। লাতিন আমেরিকাই তো বিশ্বফুটবলে পেলে, মারাদোনার মতো ফুটবলারদের উপহার দিয়েছে। সেই মহাদেশের সবথেকে বড় টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকা শুরু হওয়ার আগে তাই যেমন থাকে উন্মাদনা তেমন আবার সমর্থকরাও দেখতে উত্সুক থাকেন কোন নতুন প্রতিভা নজর কাড়বেন।
এ বারও চিলির কোপা আমেরিকায় ছিল তারকার মেলা। লিওনেল মেসি, নেইমার, থিয়াগো সিলভা কে ছিলেন না। সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে আর্জেন্তিনা, চিলি, পেরুর মতো দল। শনিবার রাতে ঠিক কবে ব্রাজিল আর প্যারাগুয়ের মধ্যে শেষ সেমিফাইনালিস্ট হবে কোন দল। চ্যাম্পিয়ন ঠিক হতে বাকি এখনও সাত দিন। তার আগে অবশ্য অনেক প্রতিভাই সুন্দর ফুটবল খেলেছেন। প্রমাণ করেছেন ক্লাবের মতো দেশের জার্সিতেও তাঁরা সমান বিধ্বংসী। সেই নায়কদের এক ঝলক দেখে নেওয়া যাক—
১. লিওনেল মেসি (আর্জেন্তিনা)- তাঁর বিরুদ্ধে সব সময় সমর্থকদের ক্ষোভ ছিল দেশের জার্সিতে নাকি তিনি সেরাটা উজাড় করেন না। এ বার কোপায় সেই ভুলটাও ভেঙে দিয়েছেন মেসি। প্রথম ম্যাচ থেকেই অন্য মেজাজে দেখা গিয়েছে এলএম টেনকে। প্রতিটা ট্যাকলের জন্য ঝাঁপিয়েছেন। দলের জন্য আক্রমণের মুভ তৈরি করেছেন। যখন বল পেয়েছেন কিছু না কিছু করেছেন। এমন আগ্রাসী মেসিকে আগে কখনও দেখেনি ফুটবলবিশ্ব। দি’মারিয়ার সঙ্গে তাঁর কম্বিনেশন হয়ে উঠেছে টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা। উপর নীচ যেমন করেছেন; তেমনই আবার মাঝমাঠে নেমে খেলার গতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। সুইচ প্লে করে আবার সাইডব্যাকদেরও আক্রমণে নিয়ে এসেছেন। হতে পারে বেশি গোল করেননি। কিন্তু তাতে তাঁর প্রভাব সীমিত ছিল না। অনেক গোলের মুভ তাঁর বাঁ পা থেকেই শুরু হয়। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধেও তাঁর একক দক্ষতায় অর্ধেক সুযোগ তৈরি হয়।
২. অ্যালেক্সিস সাঞ্চেজ (চিলি)- গত মরসুমে আর্সেনালকে বহু ম্যাচ একার হাতেই জিতিয়েছিলেন। এ বার দেশের জার্সিতেও সেই ফর্ম ধরে রেখেছেন। এমনিতেই ঘরের সমর্থকদের সামনে খেলায় বাড়তি চাপ ছিল দলের উপর। তবে যেখানে আর্জেন্তিনা, ব্রাজিলের মতো দল গোল করতে গিয়ে ঘাম ছুটিয়েছে, সেখানে গ্রুপ পর্বেই দশ গোল করেছে চিলি। তার অন্যতম কারণ ছিল সাঞ্চেজের উইং প্লে। যেমন বিপক্ষকে ডিফেন্ডারদের ড্রিবল করেছেন, তেমনই আবার গতি দিয়ে প্রতি আক্রমণ সাজিয়েছেন। চিলির অর্ধেক সুযোগ তৈরি করেছেন তিনি। ফরোয়ার্ডের বিভিন্ন পজিশনে খেলেও প্রভাব ফেলেছেন ম্যাচে।
৩. চার্লস আরানগুইজ (চিলি)- সবাই যখন মাঝমাঠে আর্তুরো ভিদালের প্রশংসা করতে ব্যস্ত, আরানগুইজ চুপচাপ নিজের কাজটা করে যাচ্ছেন। চিলি মাঝমাঠের সঙ্গে যোগসূত্র বলতে তিনিই। যেমন ঠিকানা লেখা পাস বাড়াচ্ছেন, তেমন, আবার সঠিক সময় সঠিক জায়গায় থেকে গোলটাও করতে জানেন। বলিভিয়ার বিরুদ্ধে চিলির ৫-০ জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালেও উরুগুয়ের বিরুদ্ধে মাঝমাঠে অনবদ্য খেলেছিলেন।
ছবি: এএফপি।