Bengal

সবুজ পিচে তিন পেসারে বাংলা

ওড়িশা শিবিরও চোটমুক্ত নয়। দলের মূল পেসার রাজেশ মোহান্তি চোটের জন্য খেলবেন না।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

কটক শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:০৯
Share:

আকাশকে ছাড়াই দল সাজাতে হচ্ছে কোচ অরুণ লালকে। ফাইল চিত্র

আনন্দ, উৎসাহ ও উত্তেজনা। বাংলার ক্রিকেটে এই তিনটি শব্দের অভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে গত মরসুমে। চলতি মরসুমে যা নতুন ভাবে ফিরে এসেছে। দলীয় বৈঠকে বসে কোচের সঙ্গে সবাই মিলে হাসিঠাট্টা করছেন, এমন ছবি শেষ কবে দেখা গিয়েছে মনে করা যাচ্ছে না। বুধবার কটকের ড্রিমস ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মাঠে বাংলার অনুশীলন শেষে এই দৃশ্যই সব চেয়ে আকর্ষণীয়।

Advertisement

যে ছবিটা দেখে সহজেই আন্দাজ করা যায় ক্রিকেটারেরা কতটা ফুরফুরে মেজাজে। যদিও আনন্দের মধ্যেই উদ্বেগ হয়ে রইল আকাশ দীপের চোট। আজ, বৃহস্পতিবার আকাশকে ছাড়াই দল সাজাতে হচ্ছে কোচ অরুণ লালকে। তরুণ ডান-হাতি পেসারের কুঁচকির চোট এখনও সারেনি। এ দিনও দৌড়তে পারেননি আকাশ। ফিজিয়ো উসমানের সঙ্গে রিহ্যাব করছিলেন মাঠের এক কোণে।

আকাশ না খেললেও ওড়িশার বিরুদ্ধে তিন পেসার নিয়েই নামছে বাংলা। অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন বলছিলেন, ‘‘শুনেছি এই উইকেটে পেসাররা বাউন্স পায়। কাঁধের জোর দিয়ে বল করলে তার ফল পাবেই। আকাশকে আমরা পাচ্ছি না। কিন্তু ঈশান ফিরেছে। মুকেশ (কুমার) নীলু (নীলকণ্ঠ দাসকে এই নামেই ডাকেন সতীর্থরা) আছে। ওদের উপরেই ভরসা রাখছি।’’

Advertisement

ওড়িশা শিবিরও চোটমুক্ত নয়। দলের মূল পেসার রাজেশ মোহান্তি চোটের জন্য খেলবেন না। তাঁরাও তিন পেসার নিয়েই নামছে। বিপক্ষ কোচ রশ্মিরঞ্জন পরিদা বলছিলেন, ‘‘এই মাঠে চারটে ম্যাচ খেলেছি। প্রত্যেক ম্যাচেই পেসাররা উইকেট পেয়েছে। আমরা রাজেশকে পাচ্ছি না। কিন্তু অভিজ্ঞ পেসার বসন্ত মোহান্তির সঙ্গেই খেলবে সূর্যকান্ত (প্রধান) ও দেবব্রত (প্রধান)।’’ যোগ করেন, ‘‘ছেলেদের বলে দেওয়া হয়েছে, বড় স্বপ্ন দেখতে শেখো। ঘরের মাঠে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার সুযোগ সবাই পায় না।’’ ওড়িশাও পেস নির্ভর দল। এই স্টেডিয়ামে যে চারটি ম্যাচ তারা খেলেছে, তার মধ্যে ৬৭টি উইকেট তুলেছে পেসাররা।

এ দিনই বাংলার অনুশীলনে যোগ দেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার স্থানীয় লিগের ম্যাচ খেলে রাতের বিমানে কটক পৌঁছেছেন। কিন্তু নেটে ব্যাট করলেন না। অরুণ লালকে প্রশ্ন করা হয়, কেন সুদীপকে দেখে নিলেন না? কোচের উত্তর, ‘‘এই ম্যাচে তিন নম্বরে (অভিষেক) রামনকে একটি সুযোগ দেব। গত দশ ইনিংসে রান করেনি ঠিকই। কিন্তু মরসুমে দু’টি সেঞ্চুরি করেছে। আরও একটি সুযোগ প্রাপ্য।’’ আরও বলেন, ‘‘ওড়িশাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠলে সুদীপকে নিয়ে ভাবা যাবে। এই ম্যাচে রামনই খেলবে।’’ সূত্রের খবর, সন্ধ্যায় ব্যাটসম্যানদের ভিডিয়ো সেশনেও ছিলেন না বাংলার এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।

আরও একটি বিষয় চিন্তায় রাখবে বাংলা দলকে। উপরের দিকের ব্যাটসম্যানদের রানের খরা। অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন হয়তো তাঁর জীবনের সব চেয়ে খারাপ ছন্দে রয়েছেন। রঞ্জির চলতি মরসুমে কোনও সেঞ্চুরি নেই। কোনও ইনিংস সাবলীল ভাবে শুরুও করতে পারছেন না। রামনও একই সমস্যায় আক্রান্ত। তবুও কৌশিক ঘোষ শুরুতে উইকেট কামড়ে পড়ে থাকার কাজটি করে দিচ্ছেন। তাই মাঝের সারির ব্যাটসম্যানেরা খুব একটা সমস্যায় পড়ছেন না। সেই পরিস্থিতি থেকে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন মনোজ তিওয়ারি, অনুষ্টুপ মজুমদার, শাহবাজ আহমেদ ও অর্ণব নন্দী। ঈশ্বরন যদিও বলে গেলেন, ‘‘কোয়ার্টার ফাইনালে ছন্দ ফিরে পেলে সারা মরসুমে ব্যর্থতার হতাশা কিছুটা মেটাতে পারব। ক্রিকেটে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রান করাই আসল।’’

তবে এই ওড়িশাকে হাল্কা ভাবে নিলে ভুল করবে বাংলা। এ ধরনের ম্যাচগুলোয় অঘটনের সুযোগ থাকে বেশি। কারণ, বিপক্ষের কোনও ক্রিকেটারকে চেনে না বাংলা। তাদের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কেও আন্দাজ নেই। পুরোটাই বিস্ময়। অরুণ যদিও বলছিলেন, ‘‘ওদের হাল্কা ভাবে নেওয়া হচ্ছে না। আমরা ভিডিয়ো সেশনে বিপক্ষের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে কিছুটা আন্দাজ পেয়ে যাব। সেই অনুযায়ী ঠিক হবে পরিকল্পনা। দলের কাছে লক্ষ্য পরিষ্কার। প্রথম ইনিংসের লিড নিয়ে ভাবা চলবে না। ম্যাচ জেতার জন্য ঝাঁপাবো। আশা করি, এই মনোভাব আমাদের ট্রফির দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিতে সাহায্য করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement