মিগজাউমের প্রভাবে দক্ষিণ ভারতের একটি শহরের অবস্থা। ছবি: পিটিআই।
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের জন্যে দক্ষিণ ভারত বিপর্যস্ত। খুবই খারাপ অবস্থা তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে। এর মধ্যেই অন্ধ্রের বিজয়ওয়াড়াতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন বাংলার টেবিল টেনিস খেলোয়াড়েরা। সেখানে এখন চলছে ন্যাশনাল র্যাঙ্কিং টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সোমবারই পরিস্থিতি বেশ খারাপ। কোনও মতে প্রতিযোগিতা শেষ করার চেষ্টা চলছে। তার জন্য সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত খেলা হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার কথা ৫ ডিসেম্বর, অর্থাৎ মঙ্গলবার। তবে সে দিনই এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফলের কথা রয়েছে। তাই আগেই খেলা শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আয়োজকদের।
বাংলা দলের সঙ্গে গিয়েছেন প্রাক্তন খেলোয়াড় পৌলমী ঘটক। বিজয়ওয়াড়া থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে এ কথা জানালেন পৌলমী। তিনি বলেছেন, “এখানে খুবই খারাপ অবস্থা। ঝড়-বৃষ্টি চলছে একটানা। বড়দের খেলা হয়ে গিয়েছে। ওরা চলে গিয়েছে। কিন্তু ছোটদের খেলা এখনও বাকি। অবস্থা সামাল দিতে আজ গভীর রাত পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আয়োজকেরা। তাতেও নিশ্চয়তা নেই। পরিস্থিতি যা তাতে যে কোনও মুহূর্তে সরকারি আধিকারিকেরা এসে খেলা বন্ধ করে দিতে পারেন।”
পৌলমীর সংযোজন, “যেখানে খেলা হচ্ছে সেটা আন্ডারগ্রাউন্ডে। ফলে জল ঢুকে বড় কোনও সমস্যা হতে পারে। তাই ঝুঁকি নিতে চাইছেন না কেউই। এর পর আমাদের যাওয়ার কথা পঞ্চকুলায়। কিন্তু সাইক্লোনের জন্য ট্রেন-বিমান সব বাতিল। কী করে এখান থেকে বেরিয়ে পঞ্চকুলায় যাব বুঝতেই পারছি না।”
হরিয়ানার পঞ্চকুলায় আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে পরের র্যাঙ্কিং প্রতিযোগিতা শুরু হবে। কিন্তু একের পর এক বিমান এবং ট্রেন বাতিল হওয়ায় কী ভাবে সেখানে পৌঁছনো যাবে সেটা নিয়েই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। পৌলমী জানিয়েছেন, এই প্রতিযোগিতায় বড়দের খেলা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ছোটদের খেলা এখনও বাকি। স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগে পরিজনেরা। তাঁরা নিয়মিত খোঁজখবর নিয়ে চলেছেন। জানা গিয়েছে, পঞ্চকুলার প্রতিযোগিতা এখনও বাতিল করা হয়নি। তবে আয়োজকদের তরফে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, এখন ‘মিগজাউম’ দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উত্তর তামিলনাড়ুর কাছে পশ্চিম-মধ্য এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপর রয়েছে। ক্রমে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে। শেষ ছ’ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ছিল আট কিলোমিটার। চেন্নাই থেকে ৯০ কিলোমিটার পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বে, নেল্লোরে থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে, পুদুচেরি থেকে ২০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে, বাপাতলার থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্বে, মছলিপত্তনম থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণে রয়েছে সেই ঘূর্ণিঝড়। ক্রমে তা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে এবং দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে উত্তর দিকে এগোচ্ছে।