ত্রয়ী: দুই অস্ত্র দীপ্তি ও নিশা (ডান দিকে)-র সঙ্গে ঝুলন। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
দীপ্তি শর্মা ও নিশা মাজির দাপটে মহিলাদের জাতীয় সিনিয়র ওয়ান ডে লিগ টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল বাংলা। দুজনেই তিনটি করে উইকেট নিয়ে রবিবার সেমিফাইনালে বিদর্ভকে ৩৭ রানে হারান। ফলে আগামী বছর থেকে এলিট গ্রুপে খেলার ছাড়পত্র পেলেন ঝুলন গোস্বামীরা।
বাঁ-কাঁধে চোট থাকায় এ দিন ছ’ওভারের বেশি বল করতে পারেননি ঝুলন। দু’টি ওভারে মেডেন পেলেও কোনও উইকেট পাননি। তবে পুরো ম্যাচে ফিল্ডিং করেন তিনি। দু’টি ক্যাচও নেন। দীপ্তি শর্মা ও নিশা মাজির পারফরম্যান্সে আপ্লুত বঙ্গ অধিনায়ক ম্যাচ শেষে বলেন, ‘‘আমাদের দলে প্রত্যেকেই তরুণ। তাঁদের কারণেই এলিট গ্রুপে উঠতে পেরেছি। দীপ্তির অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লেগেছে। নিশাও অসাধারণ বল করেছে। নিজেকে আরও উন্নত করতে পারলে ও ভারতীয় ক্রিকেটের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ হয়ে উঠবে।’’
বাগবাজারের ১৯ বছরের মেয়ে নিশা, অনিল কুম্বলের ভক্ত। গোয়ার বিরুদ্ধে ফাইনালে জেতাই এখন তাঁর মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, ‘‘ম্যাচে চাপ থাকলেও আমরা জেতার জন্য মরিয়া ছিলাম। ঝুলনদি না থাকলে চাপে পড়ে জেতাম। ফাইনালে গোয়াকে হারাতেই হবে।’’
ইডেনের সবুজ উইকেট দেখে টস জিতে বাংলাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান বিদর্ভের অধিনায়ক কোমল জানজাদ। প্রথম দশ ওভারে রক্ষণাত্মক খেলতে গিয়ে ষোলো রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলা। এই জায়গা থেকেই ম্যাচের হাল ধরেন দীপ্তি (৫৩) ও পারমিতা রায় (৫৭)। তাঁদের ৯৩ রানের দুরন্ত পার্টনারশিপ ম্যাচে ফেরায় বাংলাকে। এই দুই ব্যাটসম্যান পরপর আউট হওয়াতে ক্রিজে আসেন তনুশ্রী সরকার ও রিচা ঘোষ। তাঁদের চল্লিশ রানের পার্টনারশিপে ২১০ রান করেন বাংলার মহিলারা।
২১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বিদর্ভের মহিলারা শুরুটা ভালই করেছিলেন। কিন্তু দশ নম্বর ওভারে ৪১ রানের মাথায় দু’টি উইকেট নিয়ে ম্যাচটি জমিয়ে দেন নিশাই। বিদর্ভের ১৪ নম্বর ওভারে বল করতে আসেন দীপ্তি শর্মা। পরপর দু’টি উইকেট মেডেন ওভার করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি বাংলার দিকে নিয়ে আসেন দীপ্তি। ম্যাচের শেষ ওভারে ১৭৩ রানে শেষ হয় বিদর্ভের ইনিংস। তিনটি করে উইকেট নিয়ে বাংলাকে ফাইনালে তথা এলিট গ্রুপে তুললেন দীপ্তি ও নিশা।
ম্যাচ শেষে দীপ্তি শর্মার মুখেও স্বস্তির ছাপ। প্রত্যেকটি লিগ ম্যাচে যিনি অর্ধশতরান করেছেন। ফাইনালেও সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছেন বলে জানান দীপ্তি। বলেন, ‘‘ফাইনালেও এ রকমই খেলে যেতে চাই।’’ দলের কোচ জয়ন্ত ঘোষ দস্তিদার ম্যাচ শেষে বলেন, ‘‘বাংলা প্লেট গ্রুপে খেলার মতো দল নয়। এবার থেকে আমাদের যোগ্য গ্রুপে খেলার সুযোগ পাব আমরা।’’