এই মুহূর্তেই মার্টিন গাপ্টিলের ছোড়া বল বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে চলে যায় বাউন্ডারিতে।—ছবি রয়টার্স।
বিশ্বকাপ ফাইনালে মার্টিন গাপ্টিলের ছোড়া বল বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে চলে যায় বাউন্ডারিতে। আম্পায়ার দেন ছয় রান। যা ফাইনালের ভাগ্য নির্ধারণ করতে বড় ভূমিকা নেয়। স্টোকস স্বয়ং যে এই ঘটনার জন্য অনুতপ্ত, তা ফাঁস করলেন ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে তাঁর সতীর্থ জেমস অ্যান্ডারসন। এমনকি স্টোকস নাকি আম্পায়ারকে মাঠেই অনুরোধ করেন, বাউন্ডারির চার রান যেন ইংল্যান্ডকে না দেওয়া হয়।
আম্পায়ারদের ছ’রান দেওয়া নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই-এর পরিবর্তে ইংল্যান্ডকে একটি সিঙ্গল দেওয়া উচিত ছিল। কারণ দ্বিতীয় রান করার আগেই থ্রো করেছিলেন গাপ্টিল। সে ক্ষেত্রে নিউজ়িল্যান্ডের থেকে এক রান পিছনে ম্যাচ শেষ করার কথা স্টোকসদের। এ সব সত্যি হলে ম্যাচ টাইও হয় না। খেলা সুপার ওভারে গড়ানোরও প্রশ্ন ছিল না।
আসন্ন অ্যাশেজ সিরিজে স্টোকসের সতীর্থ অ্যান্ডারসন এ দিন বলেছেন, ‘‘ক্রিকেটের শিষ্টাচার বলছে, যদি উইকেট লক্ষ্য করে ছোড়া বল কারও গায়ে লাগে এবং কোনও ফাঁকা জায়গায় গিয়ে পড়ে, তা হলে রান নেওয়া উচিত নয়। কিন্তু তা থেকে সোজা বাউন্ডারি হয়ে গেলে কিছু বলার বা করার থাকে না।’’ অ্যান্ডারসন সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘মাইকেল ভনের সঙ্গে ম্যাচের পরে কথা বলে মনে হয়েছে, স্টোকস ঘটনার পরে আম্পায়ারের কাছে গিয়ে অনুরোধ করেছিল, বাউন্ডারিটা যেন আমাদের দেওয়া না হয়। শুনলাম স্টোকস আম্পায়ারকে বলে— আপনি কি এই চার রানটা আমাদের না দিয়ে খেলা চালাতে পারেন না? আমাদের এই চারটার দরকার নেই।’’
এখানেই থামেননি অ্যান্ডারসন। তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘এই ঘটনাটা নিয়ে ক্রিকেটারদের মধ্যে অনেক কথা হয়েছে। এমনিতে সম্ভবত ওটা ডেড বলই। মানে ব্যাটসম্যানের গায়ে বল লাগলে এবং তার গতি পরিবর্তন করলে সেটাকে ডেড বল হিসেবেই ধরতে হবে।’’ ক্রাইস্টচার্চে জন্মানো স্টোকসও পরে জানিয়েছিলেন, এই ঘটনার জন্য তাঁকে হয়তো সারা জীবনই কেন উইলিয়ামসনের কাছে দুঃখপ্রকাশ করতে হবে। সঙ্গে তিনি সেই থ্রো-র সৌজন্যে পাওয়া রানকে অপ্রত্যাশিত ভাবে পাওয়া বলেও স্বীকার করে নেন।
এ দিকে স্টোকস জানিয়েছেন, ক্রিকেট জীবনে আর কখনও সুপার ওভারের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে চান না তিনি। একটি টিভি চ্যানেলে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ঘটনার পরে শাওয়ার রুমে নিজেকে শান্ত করতে পাঁচ মিনিট কাটাতে হয় আমাকে। অবশ্যই আমাকে আবার বল করতে হত না।’’ সুপার ওভারে গাপ্টিল রান আউট হওয়ার পরের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, ‘‘আমি পিছলে পড়ে গিয়েছিলাম। তবে দারুণ তৃপ্ত মনে হচ্ছিল নিজেকে। আমি মার্ক উডের চশমা পরে ছিলাম। মনে হয় মাঠে ওটাও ভেঙে যায়। সব মিলিয়ে তখন একটা হট্টগোলের অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল।’’ ফাইনালে স্টোকস ৮৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। ভাবেননি, আবার সুপার ওভারে তাঁকে ব্যাট করতে নামতে হবে। যা নিয়ে তাঁর কথা, ‘‘আমি বলেছিলাম, জস (বাটলার) আর জেসনকে (রয়) এখন নামানো উচিত। কিন্তু মর্গস (অইন মর্গ্যানকে এ নামেই ডাকেন সতীর্থরা) বলেছিল, আমাদের ডান হাতি-বাঁ হাতি কম্বিনেশন দরকার।’’ স্টোকসের আরও মন্তব্য, ‘‘বাকি ক্রিকেট জীবনে আর কখনও নিজেকে সুপার ওভারের সঙ্গে জড়াতে চাই না।’’