চর্চায়: ক্রোনিয়ে বিতর্কে প্রকাশ্যে আসতে পারে আরও নতুন তথ্য।
একটি অপহরণের ঘটনার তদন্তের কিনারা করতে গিয়ে ফোনে আড়ি পাতা। আর তাতেই দিল্লি পুলিশের এক কর্তা পেয়ে গিয়েছিলেন তাঁর ফোনের লাইন। কেঁচো খুড়তে গিয়ে বেরিয়ে পড়ল সাপ। বিস্মিত দিল্লি পুলিশ জানতে পারল, আড়ি পাতা ফোনের এক প্রান্তে এক ক্রিকেট জুয়াড়ি। অন্য প্রান্তে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রোনিয়ে।
এটাই ছিল ২০০০ সালে ক্রোনিয়ের গড়াপেটা কেলেঙ্কারি ধরার নেপথ্যের চাঞ্চল্যকর কাহিনি। ক্রোনিয়ে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। আর সেই জুয়াড়ি সঞ্জীব চাওলাকে এত দিন পরে ইংল্যান্ড থেকে ভারতের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব দিল্লির এক কাপড়ের ব্যবসায়ী থেকে ক্রিকেট জুয়াড়ি হিসেবে সারা বিশ্বে জাল বিছিয়ে ফেলেছিলেন যিনি, তাঁর কাছে এখনও অনেক গুপ্তধন রহস্যের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
১২ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তাঁকে। তবে চাওলা হাই কোর্টে পাল্টা আবেদন করেছেন। শুক্রবার রাতের খবর, তিহাড় জেলে এর মধ্যেই ভারতীয় বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখার প্রধান অজিত সিংহ জানিয়েছেন, তাঁরা দিল্লি পুলিশের কাছে আবেদন করবেন চাওলাকে প্রশ্ন করার অনুমতি চেয়ে। বলেছেন, চাওলাকে প্রশ্ন করলে ভবিষ্যতের তদন্তের ক্ষেত্রে সাহায্য পাওয়া যাবে। চাওলা এখন দিল্লি পুলিশের অধীনেই রয়েছেন এবং ক্রোনিয়ে-কাণ্ডও ধরেছিলেন তখনকার দিল্লি পুলিশের কর্তারা। ফোনে আড়ি পেতে দিল্লি পুলিশের এক বড় কর্তা শুনেছিলেন, চাওলা কাউকে বলছেন, ‘‘আমার ঘরে এখন ক্যাপ্টেন আসবে।’’ আড়ি পাতা কর্তা প্রথমে বুঝতে পারেননি কোন অধিনায়ক। সেই সূত্র ধরে ক্রমাগত চাওলার ফোনে পড়ে থেকে তাঁরা জানতে পারেন ‘অধিনায়ক’ মানে আসলে ক্রোনিয়ে। সেই সময় তিনি এমন কেলেঙ্কারিতে জড়াতে পারেন, কেউ ভাবতেই পারত না।
বোর্ডের কাছে পুরনো সেই ক্রোনিয়ে কেলেঙ্কারির আর খুব প্রাসঙ্গিকতা নেই। কিন্তু বিশ্ব জুড়ে ক্রিকেট খেলায় গড়াপেটার বর্তমান অবস্থা নিয়ে অনেক আকর্ষণীয় তথ্য সরবরাহ করতে পারেন চাওলা বলে অনুমান করা হচ্ছে। ‘‘এমন কিছু তথ্য ও দিল্লি পুলিশকে তুলে দিতে পারে, যা হয়তো আমরা এখনও জানি না। সেগুলো জানতে পারলে ভবিষ্যতের রাস্তায় আমাদের কাজে লাগবে। তবে দিল্লি পুলিশ হয়তো আমাদের সামনে চাওলাকে ছাড়ার ব্যাপারে সায় দেবে না,’’ বলছেন ভারতীয় বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখার প্রধান।
শোনা যাচ্ছে, দিল্লি পুলিশ ফের ডেকে পাঠাতে পারে কিষান কুমারকেও। আততায়ীর গুলিতে মৃত গুলশন কুমারের ভাই কিষানের নামও তখন জড়িয়েছিল গড়াপেটা কেলেঙ্কারিতে। চাওলা যে ফোনটি ব্যবহার করতেন গড়াপেটার জন্য, তা কিষানেরই দেওয়া বলেও সিবিআই তদন্তে ধরা পড়েছিল। এত দিন পরে তাই ফের কিষান এবং চাওলাকে মুখোমুখি বসিয়ে আরও তথ্য বের করার চেষ্টা হলে অবাক হওয়ার নেই।