নায়ক: জোড়া গোলে ফের ভয়ঙ্কর স্যাস নাব্রি। মঙ্গলবার। ছবি: গেটি ইমেজেস
চেলসি ০ • বায়ার্ন মিউনিখ ৩
শক্তির নিরিখে ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের চেলসির জেতার কথা নয়। মঙ্গলবার স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে জেতেওনি তারা। বলা ভাল, বায়ার্ন মিউনিখের সামনে কার্যত উড়ে গিয়েছে। জার্মান ক্লাবের পক্ষে ফল ৩-০। জোড়া গোল স্যাস নাব্রির (৫১ ও ৫৪ মিনিটে)। বায়ার্নকে তিন নম্বর গোল উপহার দেন রবার্ট লেয়নডস্কি, ৭৬ মিনিটে।
কিন্তু বায়ার্নের জয় বা চেলসির হার নয়। যাবতীয় চর্চা একজনকে নিয়ে। নাব্রি। এখন যাঁর বয়স চব্বিশ। পছন্দ হয়নি বলে আর্সেন ওয়েঙ্গারের মতো কোচ চার বছর আগে যাঁকে লোন-এ ছেড়ে দেন। কে ভেবেছিল ভার্ডার ব্রেমেন, হফেনহাইম হয়ে বায়ার্নে তিনি টমাস মুলার-লেয়নডস্কিদের পাশে উজ্জ্বল হয়ে উঠবেন। এবং ডেভিড বেকহ্যামের দেশে তাঁর প্রতি সুবিচার হয়নি বোঝাতে বারবার বেছে নেবেন ইংল্যান্ডের ক্লাবকে।
চেলসির বিরুদ্ধে দু’গোল। লন্ডনে। টটেনহ্যামকে চার গোল একই জায়গায়। ইংল্যান্ডের রাজধানীতে নাব্রির চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ড অবিশ্বাস্য! মঙ্গলবার দু’টি গোল করলেন দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে। মজা হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগ ধরেও লন্ডনে এই মরসুমে তাঁর থেকে বেশি গোল করেছেন মাত্র চার জন। হ্যারি কেন, পিয়ের-এমরিক আবুমেয়ং, সন হিউং মিন ও ট্যামি আব্রাহাম। এই চার জনের গোল বেশি হলেও ন্যাব্রি তো ইপিএল খেলেন না। লন্ডনে মাত্র দু’টি ম্যাচ খেলে তিনি এগিয়ে ডেলে আলি, জর্জিনহো ও আলেকজান্দ্রে ল্যাকাজ়েতের থেকে। যা নিয়ে মজা করে বায়ার্ন টুইট পর্যন্ত করল, ‘‘লন্ডন, এখনও তোমার খিদে মেটেনি?’’ আর গ্যারি লিনেকারের মন্তব্য, ‘‘ওর তো হ্যাটট্রিক করার কথা। সেটা হলে পরিসংখ্যানটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াত ভাবুন।’’
লন্ডনের প্রতি এতটা নির্দয় কেন তিনি? কোনও রাগ থেকে? নাব্রি হেসে উত্তর দিয়েছেন, ‘‘একেবারেই নয়। লন্ডন আমার খুব প্রিয় শহর। এখানে আমার অনেক বন্ধু রয়েছে। জানি, তাদের অনেকেই আজ আমার খেলা দেখতে এসেছিল। ওরাই আমার শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছিল। নিশ্চয়ই আমার খেলায় খুশিও হয়েছে ওরা।’’
ম্যাচে প্রায় ৬৫ ভাগ বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ৩-০ জয়। দারুণ খুশি বায়ার্ন ম্যানেজার হান্সি ফ্লিক। বললেন, ‘‘ম্যাচের আগে একটা নির্দিষ্ট কৌশল ঠিক করেছিলাম। ভাবতে পারিনি এতটা নিখুঁত ভাবে ছেলেরা সেটা করে দেখাবে।’’ পাশাপাশি সব অর্থেই খুব খারাপ একটা ম্যাচ গেল চেলসির। মার্কোস আলোনসো আবার লাল কার্ড দেখলেন লেয়নডস্কির মুখে হাত দিয়ে আঘাত করায়। মঙ্গলবারের রাত দ্য ব্লুজ-এর জন্য আরও দুঃসহ করে তুলল নাব্রি-লেয়নডস্কি যুগলবন্দি। প্রত্যাশিত ভাবেই ফ্লিক আলাদা করে প্রশংসা করলেন নাব্রির। বললেন, ‘‘আর্সেনালে খেলার সময় থেকে ওকে দেখছি। তবে বায়ার্নে নিজেকে অনেক উন্নত করেছে। ওর মতো একজন দলে থাকলে যে কোনও কোচ খুশি হবে। আমিও ওর জন্য গর্বিত।’’ মুলার প্রথমার্ধে বেশ কয়েকটা সুযোগ নষ্ট না করলে বায়ার্ন আরও বড় ব্যবধানে জিতত। ল্যাম্পার্ডের স্বীকারোক্তি, ‘‘ফুটবলটা কী ভাবে খেলা উচিত তা ওদের দেখে শিখতে হবে। আজ আমরা বড় একটা শিক্ষা পেলাম। আশা করি, ছেলেরা এ বার নিজেদের ভুলগুলো বুঝতে পারবে।’’