নয়ন-মণি: চার গোল করা ২৪ বছরের নাব্রিকে নিয়ে আবেগাপ্লুত নইয়ার। মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টটেনহ্যামকে হারিয়ে। রয়টার্স
উত্তর লন্ডনে মঙ্গলবার গোলের ঝড় তুলল বায়ার্ন মিউনিখ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তারা ৭-২ গোলে হারাল টটেনহ্যাম হটস্পারকে। চার গোল করলেন সের্গে নাব্রি। জোড়া গোল রবার্ট লেয়নডস্কির।
কিন্তু দুর্দশা কাটছে না রিয়াল মাদ্রিদের। ঘরের মাঠে ক্লুব ব্রুগের সঙ্গেও ২-২ ড্র করল জ়িনেদিন জ়িদানের ক্লাব। ৪০ মিনিটের মধ্যে স্পেনের ক্লাব ০-২ পিছিয়ে পড়েছিল। সমতা ফেরে সের্খিয়ো র্যামোস ও কাসেমিরোর গোলে। ম্যাচের পরে রিয়াল ম্যানেজার বলে দিলেন, অত্যন্ত হাস্যকর ভাবে তাঁর দল গোল খেয়েছে। তবে ফর্মে থাকা গ্যারেথ বেলকে না খেলিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হলেন জ়িদান।
ঘরের মাঠে বেয়ার লেভারকুসেনের বিরুদ্ধে ৩-০ জিতল জুভেন্টাস। গোল পেলেন পর্তুগিজ তারকাও। সঙ্গে ইঙ্গিত দিলেন, ২০২২ সালে জুভেন্টাসের সঙ্গে চুক্তি শেষ হলে ফুটবল ছেড়ে মন দেবেন ব্যবসায়। যদিও এ-ও জানাতে ভুললেন না, ফুটবলকে তিনি বরাবর প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। এই ম্যাচে সেরা গোলটা করেছেন অবশ্য জুভেন্টাসের আর্জেন্টাইন তারকা গঞ্জালো ইগুয়াইন। সেটাই প্রথম গোল। জুভেন্টাসের দ্বিতীয় গোলটি করেন ফেদেরিকো বার্নাদেশি।
এতিহাদে নিজেদের মাঠে জিতল ম্যাঞ্চেস্টার সিটিও। দিনামো জাগ্রেবকে হারাল ২-০ গোলে। এই ম্যাচে চোট পেলেন কেভিন দ্য ব্রুইন। ম্যান সিটির ম্যানেজার অবশ্য জানালেন, চোট গুরুতর নয়। তবে তিনি বিস্মিত, জাগ্রেবের ‘অবিশ্বাস্য রক্ষণাত্মক’ ফুটবল দেখে। ৬৫ মিনিট পর্যন্ত গোল পায়নি ম্যান সিটি। প্রথম গোল রাহিম স্টার্লিংয়ের। সংযুক্ত সময়ে আর একটি গোল করেন ভারতে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ খেলে যাওয়া ফিল ফডেন।
মঙ্গলবার তুরস্কের গালাতাসারের বিরুদ্ধে ১-০ জিতেছে নেমার দা সিলভা স্যান্টোসের (জুনিয়র) ক্লাব প্যারিস সাঁ জারমাঁ-ও (পিএসজি)। ম্যাচের ৫২ মিনিটে একমাত্র গোলটি করেন মাউরো ইকার্ডি। নির্বাসন থাকায় ব্রাজিলীয় তারকা অবশ্য এই ম্যাচে খেলতে পারেননি। এবং তাঁর জন্য খারাপ খবরও আছে। কারণ নেমারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ সংক্রান্ত অভিযোগ নতুন মোড় নিয়েছে। ব্রাজিলের এক আদালতে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হল, অভিযোগকারী মহিলার সব বক্তব্য মোটেই খারিজ করা যাবে না।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মঙ্গলবারের সব চেয়ে আলোচিত ম্যাচ বায়ার্ন মিউনিজ বনাম টটেনহ্যাম। ইংল্যান্ডের ক্লাবের ভক্তেরা হয়তো ভাবতেও পারেননি যে, তাঁদের আবার নাব্রির দাপট দেখতে হবে। ২০১৬-তে এই জার্মান উইঙ্গার আর্সেনাল ছেড়ে যোগ দেন বায়ার্নে। ইপিএলে বারবার গানার্সের মুখোমুখি হওয়ার আতঙ্ক থেকে বাঁচে টটেনহ্যাম। এবং সেটা নাব্রি ক্লাব ছাড়ায়। কিন্তু কে জানত, আবার সেই একই ফুটবলার ছিন্নভিন্ন করে দেবেন টটেনহ্যামকে। তা-ও একাই চারটি গোল দিয়ে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের মাঠে মঙ্গলবার বায়ার্ন মিউনিখের কাছে যে কারণে লজ্জাজনক ভাবে ২-৭ হেরে গেলেন হ্যারি কেনরা!
২৪ বছরের নাব্রি চারটি গোলই করলেন দ্বিতীয়ার্ধে। ৫৩, ৫৫, ৮৩ ও ৮৮ মিনিটে। খেলার ১২ মিনিটে টটেনহ্যামের সন হিউং-মিন ১-০ করেন। ১৫ মিনিটে বায়ার্নের জোসুয়া খিমিচ গোল শোধ করে দেন। জোড়া গোল করেন লেয়নডস্কি (৪৫ ও ৮৭ মিনিটে)। টটেনহ্যামের দ্বিতীয় গোল হ্যারি কেনের (৬১ মিনিটে পেনাল্টিতে)। এ হেন বিশ্রী হারের জন্য টটেনহ্যামের ফুটবলারদের ব্যাপক বিদ্রুপের সামনে পড়তে হয়েছে। বাদ যাননি ম্যানেজার মাউরিসিয়ো পচেত্তিনোও। ম্যাচের পরে তাঁকে রীতিমতো বিধ্বস্ত দেখিয়েছে। অথচ প্রথমার্ধে ম্যাচটা এতটা একপেশে দেখায়নি। সনের গোলের পরে খিমিচ ও লেয়নডস্কি অসাধারণ দু’টি গোল করলেও।
দ্বিতীয়ার্ধে কিন্তু টটনেহ্যামকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। নাব্রি আর লেয়নডস্কির যুগলবন্দিতে দিশাহীন হয়ে যায় স্পার্স রক্ষণ। ম্যাচের পর হতাশ পচেত্তিনোর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সত্যিই আমার কিছু বলার নেই। একটা সময় আমাদের পুরো দলটাকেই মনে হয়েছে যেন ধুঁকছে। এত হতাশ জীবনে কখনও হইনি। যে বলই ওরা পায়ে লাগিয়েছে, সেটা থেকে গোল করেছে।’’